Take a fresh look at your lifestyle.

বাবুল-মিতুর সন্তানদের নিয়ে রহস্যের ধ্রুমজাল

0

সাড়ে তিন বছর ধরে নিখোঁজ তারা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
বাবুল-মিতু দম্পতির ছেলে মাহির আক্তার ও মেয়ে নিখাদ আক্তার তাবাসুমের অবস্থান নিয়ে রহস্যের ধ্রুমজাল সৃষ্টি হয়েছে। মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন বলছেন, তিন বছর ধরে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি তারা। সর্বশেষ ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে কথা হয়েছিল। বাবুল আক্তার ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের (ব্লক : সি, বাড়ি নম্বর : ২২, লেভেল: ৭) যে ঠিকানা দিয়েছিল, সেই ঠিকানা ভুল ছিল।
ছেলে মাহির আক্তারের বর্তমান বয়স ১২ বছর। আর মেয়ে নিখাদ আক্তার তাবাসুমের বর্তমান বয়স ৯ বছর।
চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন মিতুর স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। বাবুলের পরকীয়া, কল রেকর্ডসহ বিভিন্ন আলোচনা এখন মানুষের মুখে মুখে। তবে এই দম্পতির সন্তানদের নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। গত সাড়ে ৩ বছর ধরে বাবুল-মিতুর ২ সন্তান কোথায় আছে, সে খবর জানেন না মিতুর মা-বাবা।
মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন জানান, বাবুলের আগের বাসার ঠিকানায় আমি ও আমার স্ত্রী নাতি-নাতনিদের খোঁজ খবর নিতে গেলে বাবুলের বাসার দারোয়ান আমাদের ঢুকতে দিতো না। এমনকি আমরা গেলে বাবুলের লোকজনরা আমাদের হেনস্থা করতো। আমরা নাতি-নাতনিদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। আমাদের নাতি-নাতনিদের বর্তমানে কোথায় আছে, কার কাছে আছে তা জানতে অনেক মাধ্যমেই চেষ্টা করেছি। সর্বশেষ বাবুলের ভাই সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ড. শাহাবুল সঙ্গে কথা বলেছি। তিনিও বাবুলের বর্তমান ঠিকানা দেননি। বাবুল-মিতুর সন্তানরা কোথায় আছে তা তিনি জানেন না বলে আমাদের জানান।
মিতু হত্যাকান্ডে পর বাবুল আক্তার তার শ্বশুর মোশারফের বাসায় ওঠেন। পরে বাবুল আক্তার ঢাকার মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) পদে চাকরি নেন। এরপর থেকে আলাদা বাসায় দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন। প্রথম বছর বাসা থেকে সন্তানদের পড়ালেখা করালেও ২০১৮ সাল থেকে একটি ডে কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করান মাহির ও নিখাদকে।
পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, বাবুল আক্তার পুলিশকে তার বাসার ভুল ঠিকানা দিয়েছেন। পরে বাবুল আক্তারের গাড়িচালকের সহায়তায় সঠিক ঠিকানা খুঁজে বের করা হয়। কিন্তু মোহাম্মদপুরের ওই বাসায় বাবুলের সন্তানদের পাওয়া যায়নি।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরের জিইসি মোড়ে সাত বছরের ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন মিতু। এ সময় ছেলেকে ধরে রেখেছিল বাবুল আক্তারের সোর্স কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, যাকে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে।
ওই হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ছেলে মাহিরের বক্তব্য নেওয়া হবে বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা। তিনি বলেন, বাবুল আক্তার এখন পুলিশ হেফাজতে আছেন। রিমান্ড শেষে পিবিআই তার ছেলের সঙ্গে কথা বলবে।
পাশাপাশি মিতু হত্যা মামলার দুই আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা ও খায়রুল ইসলাম কালুসহ ৮ আসামির ব্যাপারে দেশের সব বিমানবন্দর ও সীমান্তে তথ্য পাঠাবে পিবিআই। মামলার কোনো আসামি যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
গত ১৩ মে চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যায় দায়ের হওয়া নতুন একটি মামলায় নিহতের স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। এর আগে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের বিরুদ্ধে বন্দরনগরীর পাঁচলাইশ থানায় নতুন একটি মামলা করেন মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.