Take a fresh look at your lifestyle.

যেকারণে ভবদহে পাউবো’র সেচ প্রকল্প প্রস্তাব প্রত্যাখান করলো ভুক্তভোগীরা

ভবদহ পানি নিষ্কাষণ সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসন করতে চান না। তারা সমস্যা জিইয়ে রেখে প্রতি বছর প্রকল্পের নামে শত শত কোটি টাকার ব্যবসা করতে চান।

0

প্রতিবেদক: যশোরে ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনে বাংলাদেশ বিকল্প উপায় খুঁজছে পানি উন্নয়ন বোর্ডে (বাপাউবো)। টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) বিকল্প হিসেবে সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়। তাদের এই দাবি প্রত্যাখান করেছে জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের প্রতিনিধিরা।
শনিবার দুপুরে ‘যশোর জেলাধীন ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্ভাবনী উদ্যোগ’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করা হয়।জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে ওই সেমিনারে জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের প্রতিনিধিরা দৃঢ়তার সঙ্গে দাবি করেন, বিল কপালিয়ায় পরিকল্পিত জোয়ারাধর (টিআরএম) বাস্তবায়ন ও আমডাঙ্গা খাল সংস্কার করতে। টিআরএম’র বিকল্প কোন প্রকল্প মেনে নেয়া হবে না।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপাউবো যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম। ওই প্রবন্ধে বলা হয়েছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর, কেশবপুর ও সদর উপজেলার আংশিক এলাকার মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে। এ এলাকার মুক্তেশ্বরী-টেকা-হরি নদীর সাথে উজানে বড় কোনো নদীর সংযোগ নেই। যে কারেণ নদীতে জোয়ারের সময় প্রচুর পরিমাণে পলিমাটি নদীর তলদেশে জমা হয়। ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও যশোর অঞ্চলে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করছে। নদী খনন করে জলাবদ্ধতা নিরোসন টেকসই করা যাচ্ছে না। যান্ত্রীক উপায়ে সেচ পাম্পের মাধ্যমে ভবদহ এলাকার পানি উচু করে ছেড়ে দিলে জলাবদ্ধ এলাকার পানি কিছুটা কমবে। সাথে সাথে নদীর নাব্যতাও বাড়বে।
এ বছরের শুরুতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও পল্লী বিদ্যুৎ যশোরের সহযোগিতায় ভবদহ ২১ ভেন্ট রেগুলেটরের উজানে ২০টি বিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প স্থাপনের মাধ্যমে প্রস্তাবিত উদ্যোগের পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করা হয়। উদ্যোগটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প স্থাপন করলে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করে ভবদহ জলাবদ্ধতার সমাধান করা সম্ভব হবে।
ভবদহ পানি নিষ্কাষণ সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসন করতে চান না। তারা সমস্যা জিইয়ে রেখে প্রতি বছর প্রকল্পের নামে শত শত কোটি টাকার ব্যবসা করতে চান। এই ধরনের প্রকল্প মূলত স্থানীয় ঘের মালিকদের সুবিধার জন্যে নেওয়া হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা স্বার্থন্বেষী ঘের মালিকদের সাথে আতাত করে তাদের সুবিধা দেওয়ার জন্যেই এই প্রকল্প প্রস্তাবনা করেছে। আমরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছি। একই সাথে আমরা আবারো টিআরএম বাস্তবায়নের প্রস্তাব করছি। টিআরএম ছাড়া ভবদহের জলাবদ্ধতার কোনো নিরসন হবে না।
কর্মশালার প্রধান অতিথি পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব আজাদুর রহমান মল্লিক বলেন, ‘স্থানীয় জনগন না চাইলে কোনো সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে না। আপনাদের প্রস্তাবিত টিআরএম বাস্তবায়ন ও আমডাঙ্গা খাল সংস্কার বিষয়ে আমরা মন্ত্রনালয়ে সুপারিশ করতে পারি। কিন্তু এই মুহুর্তে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া যাবে না।’
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী একেএম তাহমিদুল ইসলাম, তত্ত¡বধায়ক প্রকৌশলী পীযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু প্রমুখ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.