Take a fresh look at your lifestyle.

ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রীতি প্যাটেল

0

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: একজন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ হিসাবে প্রীতি প্যাটেল বিশ্বে সুপরিচিত। পুরো নাম প্রীতি সুশীল প্যাটেল। মা অঞ্জনা প্যাটেল বাবা সুশীল প্যাটেল। তার বাবা-মা ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা ছিলেন। ষাটের দশকে ওর বাবা-মা পাকাপাকিভাবে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। হার্টফোর্ডশায়ারে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানেই ১৯৭২ সালের ২৯ মার্চ জন্ম নেয় প্রীতি। তিনি হার্টফোর্ডশায়ারের ওয়াটফোর্ডের একটি বালিকা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। কিল ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্রিটিশ সরকার এবং রাজনীতিতে
স্নাতকোত্তর করেন। লেখাপড়া সম্পন্ন করে ২০১০ সালে কনজারভেটিভ সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৯ সালে স্বরাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পান। বরিস জনসন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই প্রীতি প্যাটেলকে নিয়ে একটা গুঞ্জন ছিল। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় রদবদল আনবেন। সেখানে প্রীতি প্যাটেলকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হবে। সব জল্পনা-কল্পনা-গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে বসলেন প্রীতি প্যাটেল।
রাজনৈতিক কাজের প্রতি নিষ্ঠা, দক্ষতার কারণে প্রথম থেকেই তৎকালীন ডেভিড ক্যামেরনের নজর কাড়েন তিনি। এরপর জুনিয়র মন্ত্রী পদে তিনি যোগ দেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একাধিক বিদেশ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১৪ সালের ট্রেজারি মন্ত্রক, ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর কর্মসংস্থান মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত হন তিনি। থেরেসা মে সরকারে ২০১৬ সালে তিনি ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের সেক্রেটারি অফ স্টেট হিসাবে নিযুক্ত হন। ২০১৭ সালে প্রীতি প্যাটেল ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে অননুমোদিত একটি রাজনৈতিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে যান। যা তার মন্ত্রিত্ববিধি লঙ্ঘন করে। পার্লামেন্টের নিয়মবহির্ভূত কাজ করে সমালোচনার মুখে পড়ায় এ পদ থেকে নিজেই সরে পড়েন তিনি।

একাত্তরে গণহত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চৌধুরী মুঈনুদ্দীন মানহানির মামলা করেছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব প্রীতি প্যাটেলের বিরুদ্ধে। প্রীতি প্যাটেল সম্প্রতি বলেছেন, যুক্তরাজ্যে পেঁৗঁছানোর পর বিদেশি কোনো অপরাধী এক বছরের বেশি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে তাকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে।

যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন নীতিমালা কী হতে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রীতি প্যাটেল বলেছেন, তার দেশ থেকে কারাদণ্ড ভোগ করা অপরাধীদের বের করে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা কী হবে, তা তিনি ঘোষণা করবেন।

ডেইলি মেইলের এক খবরে বলা হয়েছে, প্রীতি প্যাটেল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি পোস্ট তার টুইটে শেয়ার করায়, চৌধুরী মুঈনুদ্দীন প্রীতির বিরুদ্ধে ৬০ হাজার পাউন্ডের ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে তাকে একাত্তরের গণহত্যার সঙ্গে জড়িয়ে মানহানি করা হয়েছে। চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের দাবি, তিনি ওই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের এ পদক্ষেপকে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তার টুইটে তারেক রহমান, চৌধুরী মুঈনুদ্দীনসহ দেশটিতে বসবাসরত অন্য অপরাধীদের দ্রুত বাংলাদেশের কাছে ফেরত দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানান।

বরিস জনসন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ রাজনীতিবিদকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।

ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে প্রীতি প্যাটেল বলেন, আমার দেশকে নিরাপদ ও নাগরিকদের সুরক্ষিত রাখতে এবং অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আমার ক্ষমতায় যা রয়েছে তার সদ্ব্যবহার করব। তিনি আরও বলেন, মন্ত্রিসভা আধুনিক ব্রিটেন, আধুনিক কনজারভেটিভ পার্টির প্রতিনিধিত্ব করুক, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রসঙ্গত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অনুরাগী বলেই পরিচিত প্রীতি। ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত ভারতীয় সম্প্রদায়ের একাধিক অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একনিষ্ঠ সমর্থক হিসাবেও দেখা যায় তাকে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.