Take a fresh look at your lifestyle.

কেন বিসর্জন? কেন শুভ?

0

বাবলু ভট্টাচার্য

আজ বিজয়া। দুর্গোৎসবের শেষ দিন।
আজ আকাশে বাতাসে বিদায়ের সুর, বিসর্জনের বাজনা। মা আজ চলে যাচ্ছেন। বাংলা সংস্কৃতিতে আমরা যাওয়ার কথা বলি না। বলি, আবার এসো মা।

বিসর্জনের বাজনায় আবাহনের সুরকে মিশিয়ে নিই আমরা। আগামীর অপেক্ষায় থাকি। তাই বলি, আসছে বছর আবার এসো মা।

এই শেষের ঘোষণার মধ্যে নতুন শুরুর যে ইঙ্গিত, এর নামই তো জীবন। নিরন্তর এক প্রবাহ। নিরন্তর প্রবহমান এই জীবন। ক্রমাগত সামনের দিকে এগিয়ে চলা।

জন্মিলে মরিতে হবে, এটাই প্র্রকৃতির শাশ্বত নিয়ম। ঠিক তেমনি যাকে আহŸান করা হয়, তার বিসর্জনও অনিবার্য।

বিসর্জনের মাধ্যমেই ‘পুণরায় আগমন’-এর আশা সঞ্চারিত হয়। এই সকল কারণেই হিন্দু সম্প্রদায়ীরা প্রতিবছর হৃদয়স্থ ঈশ্বরের মাটির প্রতিমা গড়ে তাঁকে বাহ্যিকভাবে পূজা করে এবং পূজা শেষে বিসর্জনের মাধ্যমে তাঁকে আবার হৃদয়ে স্থানান্তরিত করে।

এটিই প্রতিমা পূজা ও প্রতিমা বিসর্জনের মূল তাৎপর্য।

সনাতন ধর্ম বিশ্বাস করে, ‘মানুষের দেহ পাঁচটি উপাদান দিয়ে তৈরি’। যথা : আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল ও মাটি।

তাই মৃত্যুর পর এই দেহ আগুনে দাহ করা হয় অথবা মাটি দেওয়া হয়। যে উপাদান দিয়ে এই দেহ তৈরি, মৃত্যুর পর আবার সেই একই উপাদানে মিশে যায়।

পঞ্চ উপাদানে গড়া এই মানব দেহের প্রতীকী হিসেবেই হিন্দু সম্প্রদায়ীরা পূজার সময় প্রতিমা তৈরি করে মাটি দিয়ে। পরবর্তীতে সেই মাটির প্রতিমায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে তাঁকে ঈশ্বর জ্ঞানে পূজা করে।

প্রতিমা পূজার সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে বিসর্জন। জলের মাধ্যমেই যেন মাটির প্রতিমা পুনরায় প্রকৃতিতে মিশে যায়, সেই জন্যই তারা জলে প্রতিমা বিসর্জন দেয়।

লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.