Take a fresh look at your lifestyle.

দোকান ভেঙ্গে `স্বর্ণের সিন্দুক’ চুরি, ধরা পড়লো সিসি ক্যামেরায়

0

প্রতিবেদক: যশোর শহরের বকচর করিম পাম্পের পাশের একটি পাঁচতলা ভবনের নিচে সীমা জুয়েলার্সের দোকান ভেঙ্গে ‌‌’স্বর্ণভর্তি’ লোহার সিন্দুক চুরি হয়েছে। ৬/৭জনের একটি চোরচক্র ওই দোকানের সামনে একটি ট্রাক ঠেকিয়ে সিন্দুকটি উঠিয়ে নিয়ে যায়। চুরির এই দৃশ্য ওই ভবনে স্থাপন করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে। তবে চুরির ঘটনাটি রহস্যজনক বলে মনে করছে ওই এলাকার মানুষ ও পুলিশ।
ওই দোকানের মালিক বেজপাড়ার সঞ্জিত সরকার। আর ভবন মালিক যশোর সিটি প্লাজার মালিক ইয়াকুব আলী। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ভবনের নৈশ্য প্রহরী শহিদুল ইসলামকে হেফাজতে নিয়েছে।
সঞ্জিত সরকার জানিয়েছেন, রোববার রাতে তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান। সোমবার ভোরে ভবন মালিক ইয়াকুব আলী টেলিফোনে জানায় দোকানে চুরি হয়েছে। তিনি সাথে সাথে দোকানের সামনে গিয়ে দেখেন দোকানের সার্টারে লাগানো তালাভাঙ্গা। দোকানের মধ্যে রাখা লোহার সিন্দুক নেই। এছাড়া দোকানের ডিসপ্লেতে রাখা আরো কিছু সোনার গহনা চুরি হয়েছে। সাথে সাথে সংবাদ পেয়ে কোতয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম সেখানে পৌছান। এরপর সিসি ক্যামেরায় ধারনা করা ভিডিও ফুটেজ যাচাই করেন।
তবে কী পরিমান গহনা ছিলো তা জানাতে পারেননি সঞ্জিত কুমার। তিনি একেকজনের কাছে একেক রকম কথা বলেছেন। সংবাদ পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি টিম এবং পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশ (পিবিআই)’র একটি টিম সেখানে যায়। এছাড়া সদর পুলিশ ফাঁড়িরও একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কোতয়ালি থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ভবনের নৈশ্য প্রহরী শহিদুল ইসলামকে আটক করেছেন।
ভবন মালিক ইয়াকুব আলী জানিয়েছেন, শহিদুল ইসলাম ১০/১৫ বছর ধরে কাজ করছেন। তিনি এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে বিশ্বাস হয় না। কারণ তিনি খুবই বিশ্বাসি। তবে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করলে প্রকৃত আসামি কারা তা জানা যাবে।
তিনি আরও জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নৈশ্য প্রহরী তার ফ্লাটে এসে জানায় নিচের সোনার দোকানে চুরি হয়েছে। চুরির আগে চোরচক্র তার হাত পা ও মুখ বেধেঁ ফেলে। চোরচক্র চলে গেলে তিনি কোন রকম ছাড়িয়েছেন।
ভিডিও ফুটেজে দেখাগেছে, নৈশ্য প্রহরী ভবনের বাইরে একটি খাট পেতে ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোর পাঁচটার দিকে ৫জনের একটি দল দোকানের সামনে ঘোরাফেরা করে। এদের মধ্যে একজন লুঙ্গী পরিহিত ছিল। তারা দোকানের পাশে রাখা একটি ট্রাক থেকে লোহার শাবলসহ আরো কিছু যন্ত্রপাতি বের করে দোকানের তালা ভাঙ্গে। পরে দোকানের সামনে একটি ট্রাক ঠেকিয়ে দিয়ে লোহার সিন্দুক চারজনে মিলে ট্রাকে উঠায়। একজন ট্রাকের ওপর ছিলো। পরে ট্রাকটি দ্রুত মনিহার প্রেক্ষাগৃহের দিকে চলে যায়। এর কিছু সময় পর নৈশ্য প্রহরী উঠে বিল্ডিং মালিককে সংবাদ দেয়। পুরো ফুটেজের কোথাও নৈশ্য প্রহরীর বাঁধে রাখার কোন দৃশ্য দেখা যায়নি।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, দোকান মালিক সঞ্জিত ওই এলাকায় বন্দকি ব্যবসা করে থাকেন। বিভিন্ন মানুষের সোনার গহনা তিনি রেখে দিতেন। ওই সোনার গহনা না দেয়ার ফন্দি হতে পারে। আর সিন্দুকে সচারচর কোন সোনা রাখেন না মালিকেরা। সিন্দুকে কী পরিমান সোনা ছিলো এ বিষয়েও তিনি ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন। কখনো বলছেন ৫০ ভরি, কখনো বলছেন ২০ ভারি। আবার নগদ টাকাও বলেছেন ৩ লাখ। এইসব মিলিয়ে চুরির ঘটনাটি সন্দেহ হচ্ছে।
এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রথমে ডাকাতির ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি বিষয়টি চুরি। সেখানে স্থাপন করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়েছে। আর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নৈশ্য প্রহরী শহিদুলকে থানায় নেয়া হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। আর চোরচক্রকে আটকের জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.