বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে উধাও কলেজ পিয়ন
প্রতিবেদক, অভয়নগর (যশোর):
এনজিও,ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পঁচিশ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে সপরিবারে নিরুদ্দেশ হয়েছেন যশোরের নওয়াপাড়া মহিলা কলেজের অফিস সহায়ক (পিয়ন) মহিন রায়।৮ মাস ধরে তার কোন হদিস মিলছে না। কলেজ ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার স্থায়ী ঠিকানা মণিরামপুরে নোটিশ পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় অভয়নগর, মণিরামপুরের পাওনাদারদের মধ্যে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ২০১০ সালের ১৪ আগস্ট নওয়াপাড়া মহিলা কলেজে অফিস সহায়ক পদে যোগ দেন যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের ঝিকরডাঙ্গা গ্রামের মহাদেব রায়ের পুত্র মহিন রায় । যোগদানের পর তিনি তার অমায়িক ব্যবহারের মাধ্যমে সকলকে আকৃষ্ট করে ফেলেন। এ সুবাদে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান থেকে লাখ লাখ টাকা ধার ও ঋণ গ্রহণ করেন। তার এই লেনদেনের ঘটনাগুলো অপ্রকাশিত ছিল।
গোপনে টাকা ঋণ নিতে নিতে টাকার অংক বেশি হতে থাকে। বিশেষ করে সোনালী ব্যাংক থেকে আড়াই লাখ টাকা ঋণ তোলেন। একইভাবে সরখোলার এক সমিতি খেকে ৩ লাখ টাকা লোন নেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মালামাল বাকিতে নিতে থাকেন। নওয়াপাড়ার সরদার বস্ত্রালয়, শিক্ষক সেলিম, আয়া লতিফা খাতুন, শিক্ষক বিষ্ণুপদ শীলসহ অসংখ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে ধার নেন নানা কৌশলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক সহকর্মী জানান, ধার ও ঋণের পরিমাণ ২৫ লক্ষাধিক টাকা ছাড়িয়ে যাবে। ব্যাংক থেকেও বারবার নোটিশ পাঠানোর পরও মহিন রায় সাড়া মিলছেনা। তার হদিস পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রী প্রিয়া ও কন্যা মিষ্টিকে নিয়ে গৃহ ত্যাগ করেছেন বলে সকলে সন্দেহ করছেন। চাকরির সুবাদে তার পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে নওয়াপাড়া ও মণিরামপুরের অসংখ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ-ধার নেন।
মহিন রায়ের সহকর্মী লতিফা খাতুন জানান,‘আমার কাছ থেকে ৬/৭ মাস আগে ২ লাখ নিয়ে আর ফেরত দেননি। তিনি বিপদের কথা বলে এ টাকা নিয়েছিলেন। টাকা নেওয়ার পর তা’ কাউকে ফেরত দেননি। সপরিবারে নিরুদ্দেশ হওয়ার কারণে সবার মধ্যে সংশয় কাজে করছে।
সোনালী ব্যাংক নওয়াপাড়া শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার এ এস এম শামসুদ্দিন আহমেদ শামিম জানান, আড়াই লাখ টাকা লোন নিয়ে কিছু পরিশোধ করেছেন। তবে বাকি টাকা না দেয়ায় তার ঠিকানায় নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া চলছে। নওয়াপাড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ পাল জানান, ৩ বার তার স্থায়ী ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হলেও তা’ ফেরত এসেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। গভর্নিং বডির মিটিং হলে তার চাকরির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি আরও জানান, মহিন কলেজের অর্থ লোপাট করেননি । তার স্থায়ী ঠিকানায় নোটিশ গেলেও ফেরত এসেছে প্রাপককে না পেয়ে।