Take a fresh look at your lifestyle.

`আইনি প্রক্রিয়া মেনেই দুজনের ফাঁসি কার্যকর’

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার ‌‌‌‌‌‌‌‌‌

0

প্রতিবেদক:
আপিল নিষ্পত্তির আগেই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০১৭ সালে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরের খবরে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গণমাধ্যমে এমন খবরের তোলপাড়ের মধ্যে অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মেনেই ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। বুধবার রাতে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান । তবে ফাঁসি হওয়া মামলার নম্বরের সাথে গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়া মামলার নম্বরের গড়মিল রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর যশোর কারাগারে চুয়াডাঙ্গা জেলার মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার মেম্বর হত্যা মামলায় দুই আসামি পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা আবদুল মোকিম ও গোলাম রসুল ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকর হয়।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের মৃত রবকুল মন্ডলের মেজো ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার হোসেনকে ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন গ্রামের বাদল সর্দ্দারের বাড়িতে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির কতিপয় চরমপন্থি কুপিয়ে হত্যা করে। ঐদিনই নিহতের ভাই মুক্তিযোদ্ধা অহিম উদ্দীন বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল এ হত্যা মামলার রায় ঘোষিত হয়। রায়ে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির দুই আঞ্চলিক নেতা দুর্লভপুরের মৃত মুরাদ আলীর ছেলে আব্দুল মোকিম ও একই গ্রামের মৃত আকছেদ আলীর ছেলে ঝড়ুসহ ৩ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং দুর্লভপুরের মৃত কুদরত আলীর ছেলে আমিরুল ইসলাম ও একই গ্রামের আবু বক্করের ছেলে হিয়াসহ ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। বাকি ১৬ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
মামলার রায় ঘোষণার পর উচ্চ আদালতে আপিলসূত্রে ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত এক আসামি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২ জন আসামি আমিরুল ইসলাম ও হিয়ার দণ্ডাদেশ মওকুফ করা হয়। মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসির আদেশ বহাল থাকে। এরপর ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর রাত পৌনে ১২টায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকর হয়।
এদিকে, বুধবার ‘আপিল নিষ্পত্তির আগেই যশোর কারাগারে ২০১৭ সালে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে’ এমন একটি সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচার হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুরাতন ফাইলপত্র নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার ও জেলা প্রশাসনে। বুধবার রাত অবধি চলে এসব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া। আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত তথ্যউপাত্ত এসেছে। এতে দেখা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ, কারা-২ শাখার সহকারী সচিব মোহাম্মদ আলী ২২ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে স্বাক্ষরিত কারা মহাপরিদর্শককে লেখা চিঠিতে (নং-৫৮.০০.০০০০.০৮৫.২৭.০১৩.১৭.৬৭৪) যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারের চিঠির সূত্র উল্লেখ করে লেখেন : (১) মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত কয়েদী নং-৯০৭৫/এ, ঝড়ু, পিতা-আকছেদ সরদার, (২) মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত কয়েদী নং-৫৯৮/এ, মকিম, পিতা- মুরাদ আলী, উভয় সাং-দুর্লভপুর, থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা এর প্রাণভিক্ষার আবেদন মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক না-মঞ্জুর করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় জেল কোড অনুযায়ী কার্যকর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এর আগে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর আপিল নিষ্পত্তি করে। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে বিচাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন এবং বিচারপতি মির্জা হোসাইন হায়দার এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) মো. ছগির মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপিল নিষ্পত্তির আগেই যশোর কারাগারে ২০১৭ সালে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে’ এমন খবর তাদের নজরেও এসেছে। কারা কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র-ফাইল পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.