Take a fresh look at your lifestyle.

শুভ জন্মদিন মৌসুমী

0

বাবলু ভট্টাচার্য

আরিফা পারভিন জামান মৌসুমী- যিনি ‘মৌসুমী’ নামে অধিক পরিচিত। ঢাকাই সিনেমার উজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি। কয়েক দশক ধরে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছেন।

খুলনা জেলায় জন্ম নেয়া এই অভিনেত্রীর বাবার নাম নাজমুজ্জামান মনি এবং মায়ের নাম শামীমা আখতার জামান। তিনি ছোটবেলা থেকেই একজন অভিনেত্রী এবং গায়িকা হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।

এরপর তিনি ‘আনন্দ বিচিত্রা ফটো বিউটি কনটেস্ট’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন, যার উপর ভিত্তি করে তিনি ১৯৯০ সালে টেলিভিশনের বাণিজ্যিক ধারার বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে হাজির হন।

মৌসুমী ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছায়াছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে পদার্পণ করেন। এই চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে ছিলেন অকাল প্রয়াত অভিনেতা সালমান শাহ। দুজনেরই এটি ছিল প্রথম চলচ্চিত্র। একই বছর আরও অভিনয় করেন ‘দোলা’ ছায়াছবিতে, তার বিপরীতে ছিলেন ওমর সানি। এরপর একে একে অভিনয় করেন গীতিকার ও পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার পরিচালিত ‘স্নেহ’, শিবলি সাদিক পরিচালিত ‘অন্তরে অন্তরে’ ও শফি বিক্রমপুরির ‘দেনমোহর’ ছায়াছবিতে।

১৯৯৫ সালে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র শহীদুল ইসলাম খোকনের সাইকো-থ্রিলার ‘বিশ্বপ্রেমিক’। ১৯৯৬ সালে নিজের প্রযোজিত ‘গরীবের রানী’ ও ‘সুখের ঘরে দুখের আগুন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়া চিত্রনায়ক মান্না প্রযোজিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘লুটতরাজ’-এ অভিনয় করেন।

১৯৯৯ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘আম্মাজান’ ও মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘মগের মুল্লুক’ ছায়াছবি দুটি ব্যবসাসফল হয়। ২০০১ সালে নার্গিস আক্তার পরিচালিত ‘মেঘলা আকাশ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে অর্জন করেন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে তার প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। পরের বছর কাজী হায়াতের ‘ইতিহাস’ ও এফ আই মানিক পরিচালিত ‘লাল দরিয়া’ ছায়াছবিগুলো বাণিজ্যিক সফলতা লাভ করে।

২০০৩ সালে তার নিজের পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ ও দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত ‘বীর সৈনিক’ ছায়াছবিতে অভিনয় করেন। ২০০৪ সালে তার অভিনীত ‘মাতৃত্ব’ চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। পরের বছর ধর্মীয় গোঁড়ামি নিয়ে নির্মিত ‘মোল্লা বাড়ীর বউ’ ও তার নিজের পরিচালিত ‘মেহের নিগার’ ছায়াছবিতে অভিনয় করেন।

২০০৮ সালে ‘একজন সঙ্গে ছিল’ ছায়াছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১০ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন বিলাতে’ ছায়াছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করে অর্জন করেন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে বাচসাস পুরস্কার ও দর্শক জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী (নারী) বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার।

২০১৩ সালে নন্দিত কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত উপন্যাস দেবদাস অবলম্বনে চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত দেবদাস চলচ্চিত্রে ‘চন্দ্রমুখী’ চরিত্রে অভিনয় করেন। এ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার-এর সমালোচক শাখায় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী (নারী) হিসেবে মনোনীত হন। একই বছর মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

২০১৪ সালে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত তারকাঁটা ছায়াছবিতে আরিফিন শুভর বোনের চরিত্রে অভিনয় করেন। এ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য লাভ করেন তৃতীয় বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন নাটকে ও টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন। ২০১৬ সালে চিত্রগ্রাহক জেড এইচ মিন্টুর নির্দেশনায় মেঘের আড়ালে টেলিফিল্মে অভিনয় করেন।

২০০৩ সালে ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ দিয়ে মৌসুমী চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে পরিচালনা করেন ‘মেহের নিগার’। ২০১৬ সালে ‘শূন্য হৃদয়’ নামে একটি টেলিফিল্ম পরিচালনা করছেন।

মৌসুমী ২০০৪ সালে জাহিদ হোসেন পরিচালিত ‘মাতৃত্ব’ ছায়াছবিতে একটি গানে কণ্ঠ দেন। ২০০৭ সালে ইথুন বাবুর সুরে ২০১৪ সালে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত তারকাঁটা ছায়াছবিতে ‘কি যে শূন্য লাগে তুমিহীনা’ গানে কণ্ঠ দেন। এছাড়া মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ছায়াছবি চলচ্চিত্রে ‘মন যা বলে বলুক’ গানের গীত রচনা করেছেন।

বাংলাদেশের শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনমত ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূতের দায়িত্ব পান।

মৌসুমী ১৯৭৩ সালের আজকের দিনে (৩ নভেম্বর) খুলনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.