Take a fresh look at your lifestyle.

জন্মদিনে স্মরণ : এন্ডু কিশোর

0

বাবলু ভট্টাচার্য

‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘ডাক দিয়েছেন দয়াল আমারে’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’- এমন অনেক গান নিয়ে গত শতকের ৮০ দশক থেকে শুরু করে টানা অন্তত দুই দশক বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে গানের জগতে ছিল তার রাজত্ব।

তিনি এন্ডু কিশোর কুমার বাড়ৈ।

তার পিতা ক্ষীতিশ চন্দ্র বাড়ৈ এবং মাতা মিনু বাড়ৈ রাজশাহীর একটি হাসপাতালে চাকরি করতেন। মায়ের কাছে পড়াশোনায় হাতেখড়ি হয়েছিল। তার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে রাজশাহী। তার মা ছিলেন সংগীত অনুরাগী, তার প্রিয় শিল্পী ছিলেন কিশোর কুমার। প্রিয় শিল্পীর নামানুসারে তার সন্তানের নাম রাখেন ‘কিশোর’। মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেই তিনি সংগীতাঙ্গনেই পা রাখেন।

এন্ডু কিশোর আব্দুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে প্রাথমিকভাবে সঙ্গীত পাঠ গ্রহণ শুরু করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর কিশোর নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, আধুনিক, লোক ও দেশাত্মবোধক গান শ্রেণিতে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী ছিলেন। কিশোর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে পড়াশোনা করেছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনায় পড়লেও গানই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান। গানের নেশায় এন্ডু কিশোর ছুটে আসেন রাজধানী ঢাকায়। চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু হয়েছিল ১৯৭৭ সালে; ‘মেইল ট্রেন’-এ আলম খানের সুরে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে। এরপর বাদল রহমানের ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ চলচ্চিত্রেও কণ্ঠ দেন তিনি।

১৯৭৯ সালে ‘প্রতিজ্ঞা’ চলচ্চিত্রের ‘এক চোর যায় চলে’ গান গাওয়ার পর আর পেছনে ফিরতে হয়নি তাকে।

তার গাওয়া- ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমেরও কাঙাল’, ‘বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে’- এমন অনেক গান এখনও মানুষের মুখে ফেরে।

গান গেয়ে আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন তিনি।

’৯০ এর দশকের শেষ দিক পর্যন্ত চলচ্চিত্রের গানে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল তার। ওই সময়েও তার গাওয়া ‘পড়ে না চোখের পলক’ গানটি ছিল তুমুল জনপ্রিয়।

বাংলাদেশে প্লেব্যাকে শীর্ষে থাকা অবস্থায় বলিউডের প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক রাহুল দেব বর্মনের ডাকেও এন্ডু কিশোর ভারতে যাননি বলে জানিয়েছেন তার বন্ধু আরেক কণ্ঠশিল্পী লীনু বিল্লাহ।

এন্ডু কিশোর ৬৪ বছর বয়সে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ৬ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।

এন্ডু কিশোর ১৯৫৫ সালের আজকের দিনে (৪ নভেম্বর) রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন।

লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.