গৃহবধূকে গাছে বেঁধে ও চুল কেটে নির্যাতনে জড়িত ৬জন গ্রেফতার
প্রতিবেদক: যশোরে এক গৃহবধূকে গাছে বেঁধে মারধর ও মাথার চুল কেটে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোব ও সোমবার তাদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে রোববার কোতয়ালি থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২-৩জনের নামে মামলা করেন ভুক্তভোগী কাজল রেখা (৪২)। তিনি সদর উপজেলার মালঞ্চি মধ্যপাড়া গ্রামের নওয়াব আলীর স্ত্রী।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র ইন্সপেক্টর রুপন কুমার সরকার জানান, গৃহবধূ কাজল রেখাকে নির্যাতনের ঘটনায় সাতনের নামে মামলা হয়েছে। তারা হলেন- যশোর সদর উপজেলার মালঞ্চী মধ্যপাড়া গ্রামের আবদুল কাদের বিশ্বাসের ছেলে রাজিবুল হক শিমুল (৩০), হায়দার আলীর ছেলে রিপন হোসেন (৩০), আকবর আলীর ছেলে আজগর আলী (৩০), পেচো আলীর ছেলে আকতার আলী (৩২), আজগর আলীর মেয়ে বিউটি খাতুন (২৮), আজগর আলী স্ত্রী বিলকিস বেগম (২৫) ও রিপন হোসেনের স্ত্রী জোসনা বেগম (২২)। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ২/৩ জন। আসামিদের মধ্যে রোববার রিপন, বিউটি, বিলকিস, জোসনাকে এবং সোমবার আজগর ও আক্তারকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
জানা যায়, শনিবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার মালঞ্চি মধ্যপাড়া গ্রামের নওয়াব আলীর স্ত্রী কাজল রেখাকে গাছে বেধে ও মাথার চুল কেটে নির্মম নির্যাতন করা হয়। সন্ধ্যায় স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। ৯ মাস আগে নির্যাতিত ওই গৃহব ধূর প্রথম স্বামী রেজাউল ইসলাম মারা যান। মারা যাওয়ার আগে রেজাউল তার স্ত্রী কাজল রেখাকে ৪ শতক জমি লিখে দেন। ওই জমির ওপর লোভ ছিল রেজাউলের চাচতো ভাই আজগর হোসেন ও রিপন হোসেন। এ কারণে ওই জমি থেকে বিতাড়িত করতে ছয়মাস আগে কাজল রেখা’র নামে পরকীয়ার অপবাদ তোলেন তারা। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সালিশে কাজল রেখার সাথে প্রতিবেশী নওয়াব আলীর সাথে বিয়েও দেন স্থানীয় মাতবররা। নওয়াব আলীর সাথে বিয়ে হলেও প্রথম স্বামীর দেওয়া জমিতে কাজল রেখা বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি আজগর ও রিপন তাদের ভাই রেজাউলের জমি ফেরত নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এনিয়ে শনিবার দুপুরে শালিস বৈঠক বসার সিদ্ধান্ত হলে দেবর আজগর ও রিপনের নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ জন কাজল রেখাকে মারতে আসে। এক পর্যায়ে ওই গ্রামের যুবক রাজিবুল হক শিমুল কাজল রেখাকে গাছে বাঁধতে নির্দেশ দেন। পরে তাকে গাছে বেঁধে মারপিট করে মাথার চুল কেটে, মুখে চুনকালি মাখিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ নির্যাতিত ওই নারীর।