এবারও শঙ্কায় ইতালির বিশ্বকাপ স্বপ্ন
সংবাদকক্ষ :
লুজার্নে সুইজারল্যান্ড যখন একটা একটা করে গোল দিচ্ছিল তখন একটু একটু করে বিশ্বকাপ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ছিল ইতালির। শেষ পর্যন্ত সুইজারল্যান্ড পেল বড় জয়। অন্যদিকে কোনো গোলই দিতে পারলো না ইতালি। আরও একটি হতাশাজনক ড্রয়ে প্লে অফ রাউন্ডে চলে গেল আজ্জুরিরা। তাতে ফের বিশ্বকাপ স্বপ্ন শঙ্কায় পড়েছে ইতালির।
সোমবার উইন্ডসর পার্কে ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইয়ে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে ইতালি। একই গ্রুপের অপর ম্যাচে বুলগেরিয়ার মাঠে ৪-০ গোলে জিতে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে সুইজারল্যান্ড।
তবে ব্যাপারটা এমন নয় যে ইতালির বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ। প্লে অফ খেলতে হবে তাদের। কিন্তু প্লে অফের সমীকরণ একটি উলটপালট হলেই বাদ পড়ে যেতেও পারে তারা। গত বিশ্বকাপেই এই নির্মমতা দেখেছে আজ্জুরিরা। প্লে অফ থেকে বিদায় নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলতে পারেনি দলটি।
এবার ইউরোপিয়ান অঞ্চলের প্লে-অফে বেশ পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রতিবারের মতো হোম-অ্যাওয়ে দুটি ম্যাচে সীমাবদ্ধ থাকছে না। গ্রুপ বেশি হওয়ায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। ১০ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে ১০টি দল। বাকি ৩টি জায়গার জন্য লড়াই করবে রানার্স হওয়া ১০টি দলের সঙ্গে পয়েন্ট অনুযায়ী সেরা (সেরা তৃতীয়) আরও দুটি দল। ১২টি দল তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে যাবে। প্রতিটা গ্রুপে থাকবে ৪টি করে দল। এরপর ৪টি দলের মধ্যেই সেমিফাইনাল-ফাইনালে শেষে চ্যাম্পিয়ন হলে মিলবে বিশ্বকাপের টিকেট। তাই কাজটা মোটেও সহজ নয়।
অথচ কী দারুণ ছন্দেই না ছিল ইতালি। বুড়ো পিয়েরো ভেঞ্চুরার কাছ থেকে দায়িত্ব পেয়ে দলকে রাতারাতি বদলে দেন রবার্তো মানচিনি। একের পর এক বড় জয়। জিতে নিল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত থেকে গড়ল নতুন বিশ্ব রেকর্ডও। সেই ইতালিই এখন সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে সংশয়ে।
মূলত ইউরোর পর থেকেই দলটির ছন্দপতন শুরু। দলের এক ঝাঁক খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়ে যাওয়াতেই যতো সমস্যা। মার্কো ভেরাত্তিম লরেঞ্জো স্পিনাজ্জোলা, রাফায়েল তোলোই, আলেহান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি, চিরো ইম্মোবিলে, নিকোলো জানিওলো, লোরেঞ্জো পেলেগ্রিনি, জিওর্জিও কিয়েলিনি, আলেহান্দ্রো বাস্তোনি, ক্রিস্তিয়ানো বিরাঘি, সালভাতোর সিরিগুরা মতো খেলোয়াড়রা ছিলেন না স্কোয়াডে।
নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় সারীর দল নিয়ে মাঝমাঠের দখলে এগিয়ে থাকলেও সে অর্থে তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। বড় সুযোগ বলতে যা বুঝায় তা পুরো ম্যাচে ছিল ৩টি। যার দুটিই পাল্টা আক্রমণ থেকে করে আইরিশরা। জিয়ানলুইজি দোনারুমার দুটি অসাধারণ সেভ করায় বেঁচে যায় ইতালি।
তবে ইতালিয়ানদের স্বপ্নটা কঠিন হয়ে যায় আক্রমণভাগের দুর্বলতায়। বেশ কিছু সুযোগ ছিল তাদের কাছে। কিন্তু ডি-বক্সে ঢুকে জোরালো শট নিতে ব্যর্থ হয় তারা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বেশ কয়েকবার দূরপাল্লার প্রচেষ্টা চালান ইতালিয়ানরা। কিন্তু লক্ষ্যে না থাকায় আইরিশ গোলরক্ষক পিকক-ফেরিলকে সে অর্থে বড় কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি আজ্জুরিরা। তবে ৬৪তম মিনিটে ভালো শট নিয়েছিলেন কিয়েসা। দারুণ দক্ষতায় সে শট ঠেকান আইরিশ গোলরক্ষক। এছাড়া বাকি সময় জমাট রক্ষণে কাটিয়ে দেয় নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড।
৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করল সুইজারল্যান্ড। সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট পেয়ে প্লে অফ খেলবে ইতালি।