Take a fresh look at your lifestyle.

‘হাতের ছাপ্পা মিলিনি, তাই মেশিনে ভোট দিতি পারিনি’

0

প্রতিবেদক :

দুলাল মন্ডল (৭০)। জীবনে প্রথম ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ( ইভিএম) ভোট দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু হাতের ছাপ মেলেনি। এজন্য তিনি ভোট দিতে পারেনি। তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের সামনে আক্ষেপ করে দুলাল মন্ডল বলেন, জীবনে প্রথম মেশিনে ভোট দিতে আসলাম, হাতের ছাপ্পা মিলিনি, তাই ভোট দিতি পারিনি। বলেছে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে যাতি। আবার যাবো। ভোট দিতি পারবো কিনা জানি না।

একই কেন্দ্রের ভোটার লিয়াকত আলী (৭০)  ভোট দিতে পারেননি। তিনি বলেন, হাতের ছাপ মেলেনি। এজন্য ভোট দিতে পারিনি। সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে আবার যাচ্ছি। দেখি ভোট দিতে পারি কিনা।

কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আবিদ হাসান বলেন, বয়স্ক অনেক ভোটারের হাতের ছাপ মিলছে না। তাদেরকে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে পরে আসতে বলছি। পরে আসলে ভোট দিতে পারবে। তবে হাতের ছাপ না মিললে ভোট দেয়ার সুযোগ নেই।

শুধু দুলাল মন্ডল কিংবা লিয়াকত আলী নয় তাদের মত অনেকেই ইভিএম কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে।

রোববার তৃতীয় ধাপে যশোরের মণিরামপুর, বাঘারপাড়া ও শার্শা উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহন চলছে। এরমধ্যে ৩ ইউপিতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ চলছে।

সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ । সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষে ২৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ৩ প্লাটুন বিজিবি, ২ হাজার ৫৯১ পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। ভোট গ্রহনের দিন (আজ) ভোরে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছেছে।

জানা যায়, তিন উপজেলার ৩৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান-সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১ হাজার ৮৭৮ প্রার্থী লড়ছেন। এরমধ্যে তিনটি ভোট গ্রহন চলছে ইভিএমে। যেসব এলাকায় ব্যালট পেপারে ভোট সেখানে ভোটের দিন সকালে ব্যালট পাঠানো হয়েছে।

বাঘারপাড়া উপজেলায় ৯টি ইউনিয়নে ৪৭১ জন প্রার্থী লড়ছেন। এর মধ্যে ৫০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, সংরক্ষিত নারী মেম্বর ১০২ ও সাধারণ মেম্বর পদে ৩১৯ জন প্রার্থী রয়েছে। ৮১ কেন্দ্রের ৪৮৫ বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোট গ্রহণে দায়িত্ব পালন করছে ৮১ জন প্রিজাইডিং অফিসার ৪৮৫জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারসহ  ৯৭০জন পোলিং এজেন্ট। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৭৫জন।

মণিরামপুরের ১৬টি ইউনিয়নে মোট প্রার্থী ৮৬৩ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৭৮ জন, সংরক্ষিত নারী মেম্বর ১৮০ জন ও সাধারণ মেম্বর ৬০৫জন। এ উপজেলায় ভোট গ্রহণ ১৫২ কেন্দ্রের ৮০৫টি বুথে। নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করছেন ১৫২জন প্রিজাইডিং অফিসার ৮০৫ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ১ হাজার ৬১০ জন পোলিং এজেন্ট। মোট ভোটার ২ লাখ ৯৪ হাজার ৯২১জন।

শার্শা উপজেলার ১০ ইউনিয়নে নির্বাচনে লড়ছেন ৫৪৪ জন প্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪৩ জন, সাধারণ মেম্বর ৪০৬ জন ও সংরক্ষিত নারী মেম্বর ৯৫ জন। এ উপজেলায় ১০৮টি কেন্দ্রে ৬২৭টি বুথে ভোট গ্রহণ চলছে। নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছে ১০৮জন প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৬২৭ জন ও পোলিং এজেন্ট ১ হাজার ২৫৪জন। এউপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৮ জন।

জেলা অতিরিক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ইতিমধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে আনসার, পুলিশ, বিজিবি এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন আছে।

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, নির্বাচনে কোনো বিশঙ্খলা প্রশ্রয় দেয়া হবে না। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন লক্ষ্যে কঠোর অবস্থানে পুলিশ প্রশাসন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.