Take a fresh look at your lifestyle.

একদিনেই ৭ মামলার আসামি মনিরা

চড়া সুদের ফাঁদে নির্যাতন

0

প্রতিবেদক: যশোরে চড়া সুদের কারবারিতে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগে মনিরা বেগম নামে এক নারীর বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক সাতটি  মামলা দায়ের হয়েছে।  বৃহস্পতিবার যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম মামলাগুলো আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।  সাতটি মামলার একমাত্র আসামি মনিরা বেগম যশোর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা এলাকার রবিউল ইসলামের স্ত্রী।

বাদী সাতজন হলেন- যশোর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা গ্রামের রঞ্জনের স্ত্রী ভাদুরী রাণী, ধনী কর্মকারের স্ত্রী প্রমিলা কর্মকার, খোকন সরদারের স্ত্রী ইলা সরদার, শংকর কর্মকারের স্ত্রী চঞ্চলা কর্মকার, নিমাই কর্মকারের স্ত্রী ভুলামনি কর্মকার, শংকর কর্মকারের স্ত্রী রিতা রাণী কর্মকার ও কমল কস্তার স্ত্রী রুপালী কস্তা।

অভিযোগের বিষয়ে  মনিরা বেগম  সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কয়েকজন মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমি নিজে স্থানীয় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে ভাদুরি রানী, তার স্বামী রঞ্জন ও ইলা সরদারকে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা ওই ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করছে না। তাদের কাছ থেকে ফাকা চেক ও স্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া আছে-এটা সত্য। কিন্তু এখানে আমার কোনো লাভ নেই। দুঃসময়ে টাকা দিয়ে আমি তাদেরকে সহায়তা করেছি।

বাদি পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার কাজী রিফাত রেজওয়ান সেতু জানান, যশোর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা এলাকার মনিরা বেগমের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণের টাকা নিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়েছেন। এ রকম সাত নারী সাতটি পৃথক মামলা করেছেন। আদালতের বিচারক মামলাগুলো আমলে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্যে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এজাহারে বলা হয়েছে, মনিরা বেগম নামের ওই নারী পেশাদার সুদে টাকার ব্যবসায়ি। তার সুদে ব্যবসার জালে আটকা পড়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেক পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ফাঁকা স্ট্যাম্প ও চেকে স্বাক্ষর নিয়ে জিম্মি করে পরে ভিটেমাটি লিখে নেওয়া, এলাকা ছাড়া করা, মারপিট ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। মানসিক যন্ত্রনায় হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইতিমধ্যে অনেকে মারাও গেছেন।

যশোর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা ভাদুরী রানী ২০১৮ সালে মেয়ের অস্ত্রপচারের সময়ে দুই দফায় স্থানীয় মনিরা বেগমের কাছ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ নেন। মনিরার চাপে ভাদুরি স্থানীয় বিভিন্ন বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ পরিশোধ করেন।  তাতেও মনিরা নিবৃত্ত হননি। অবশিষ্ট টাকার জন্যে ক্রামাগত চাপ দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

আরেক মামলার বাদি ইলা সরদার গত ২০১৬ সালের ৫ জুলাই চিকিৎসার জন্যে ৩৫ হাজার টাকা ঋণ নেন মনিরার কাছ থেকে। পরে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেও তিনি রক্ষা পাননি। সুদ হিসেবে আরো ৫ লাখ দাবি করেন মনিরা। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় বাড়িতে গুন্ডা পাঠিয়ে আরো ৮৮ হাজার টাকা জোর করে নিয়ে যান।  ভুলামনি কর্মকার মনিরার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা নিয়ে কিস্তিতে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। এরপর আরো টাকা দাবি করেন। তার একমাত্র সম্বল ভিটে বাড়ির দেড় শতক জমি জোর পূর্বক স্টাম্পে লিখে নেন। বাড়ি দখলে নেওয়ার জন্য ভুলামনির ঘরের আসবাবপত্র ও থালা-বাটি নিয়ে যায়। মানসিক অত্যাচারে তার ছেলে লিটন কর্মকার সম্প্রতি মারা যান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.