Take a fresh look at your lifestyle.

জন্মদিনে স্মরণঃ কিম কি-দুক

0

বাবলু ভট্টাচার্য:

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর কিম কি দুক-এর জন্মস্থান। এই সৌন্দর্যই তাকে সিনেমার জন্য নান্দনিক প্রকৃতিকে ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে বেছে নিতে সহায়তা করেছে। শিল্পকলা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, হয়তো এ কারণেই তার নির্মিত সিনেমায় কাহিনি আর ঘটনার বিমূর্তচিত্র ফুটে উঠে বেশ সফলতার সাথে।

২০ বছর বয়সে রাষ্ট্রীয় নীতির অংশ হিসেবে বাধ্যতামূলকভাবে যোগ দিতে হয়েছে সামরিক বিভাগে। তখন থেকে ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত নৌবাহিনীর জীবনে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যই ছিল। কিন্তু মন টানেনি।

১৯৯০ সাল থেকে চার বছর তিনি প্যারিসে চারুকলা নিয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৯৩ সালে দেশে ফিরে শুরু করেন চিত্রনাট্য লেখার কাজ। ১৯৯৫ সালে কোরিয়ান ফিল্ম কাউন্সিল কর্তৃক আয়োজিত এক প্রতিযোগিতায় চিত্রনাট্যকার হিসেবে পুরস্কার পান। এটিই চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট কিমের প্রথম পুরস্কার।

তার প্রথম ছবি ‘ক্রোকোডাইল’ মুক্তি পায় ১৯৯৬ সালে। স্বল্প বাজেটের ছবিটি দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।

২০০০ সালে ‘দ্য আইল’ ছবিটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসা কুড়ানো কিমের প্রথম ছবি। ভেনিস ও টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবেও এ ছবি দেখানো হয়। একই বছর মুক্তি পাওয়া কিমের ‘রিয়েল ফিকশন’ ছবিটি ২৩ তম মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রণ পায়।

‘ক্রোকোডাইল’, ‘দ্য আইল’, ‘রিয়েল ফিকশন’, ‘অ্যাড্রেস আননোন’, ‘স্প্রিং, সামার, ফল, উইন্টার… অ্যান্ড স্প্রিং’, ‘সামারিতান গার্ল’, ‘টাইম’, ‘ব্রিদ’, ‘ড্রিম’, ‘রাফ কাট’, ‘পিয়েতা’, ‘আরিরাং’, ‘ওয়ান ওন ওয়ান’, ‘স্টপ’, ‘মেড ইন চায়না’, ‘হিউম্যান’, ‘স্পেস’, ‘টাইম অ্যান্ড হিউম্যান’– কিম কি দুকের উল্লেখযোগ্য সিনেমা।

তার সর্বশেষ ছবি ‘ডিজলভ’ মুক্তি পায় ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। সিনেমাটিকে তুলনা করা হয় তার আগে বানানো ছবি ‘সামারিতান গার্ল’–এর সঙ্গে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কিমের অর্জনও অসামান্য। ৬৯তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সেরা ছবি হয়েছিল তার ‘পিয়েতা’ ছবিটি। এই ছবির জন্য বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ও নামকরা এই চলচ্চিত্র উৎসবে কিম কি দুক পেয়েছিলেন গোল্ডেন লায়ন। এই উৎসবের ৬১তম আসরে ‘থ্রি আয়রন’ ছবির জন্য সিলভার লায়ন বা সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছিলেন কিম।

৪৫তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘সামারিতান গার্ল’ সিনেমাটি কিমকে দেয় সেরা পরিচালকের পুরস্কার। এটি এই উৎসবের দ্বিতীয় সেরা পুরস্কার।

২০১১ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘আরিরাং’ ছবির জন্য ‘আঁ সার্তে রিগা’ পুরস্কার দেওয়া হয় কিমকে।

২০১১ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের আঁ সার্তে রিগা বিভাগে দেখানো হয় ‘আরিরাং’ ছবিটি এবং জিতে পুরস্কার। ‘স্প্রিং, সামার, ফল, উইন্টার… অ্যান্ড স্প্রিং’ কিমের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছবি।

কিম কি দুক পরিচালিত দুটো ছবি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে অস্কারে সেরা আন্তর্জাতিক সিনেমা বিভাগে পাঠানো হয়। সেই ছবি দুটির একটি ‘স্প্রিং, সামার, ফল, উইন্টার… অ্যান্ড স্প্রিং’ ও অন্যটি ‘পিয়েতা’।

কিম কি দুক এশিয়ার তার প্রজন্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্মাতাদের একজন।

চলতি বছরের (২০২০) ১১ ডিসেম্বর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লাটভিয়ার একটি হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কিম কি দুক। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর।

কিম কি দুক ১৯৬০ সালের আজকের দিনে (২০ ডিসেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ার উত্তর জিয়েয়ং স্যাং প্রদেশের বংহুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.