Take a fresh look at your lifestyle.

জন্মদিনে স্মরণঃ রমাপদ চৌধুরী

0

বাবলু ভট্টাচার্য: যাঁর বইয়ের ব্লার্বে লেখা হত, ‘সতেরোয় শুরু, পচিঁশে প্রতিষ্ঠিত, তিরিশের আগেই বিখ্যাত লেখক’, তিনি রমাপদ চৌধুরী। বাংলা সাহিত্যে এক শ্রদ্ধেয় নাম।

প্রথম গল্প ‘উদয়াস্ত’ প্রকাশিত হয় ‘যুগান্তর’ পত্রিকায়। তখন তাঁর বয়স ১৭-১৮। তারপর খুব বেশি লেখেননি, কিন্তু যা লিখেছেন তা এক একটি হীরক খণ্ড। ‘আমি, আমার স্বামী ও একটি নুলিয়া’, ‘ভারতবর্ষ’, ‘ফ্রীজ’, ‘একটি হাসপাতালের জন্ম ও মৃত্যু’, ‘বিনু, পালা’র মতো সব ছোটগল্প, ‘খারিজ’, ‘বাড়ি বদলে যায়’-এর মতো উপন্যাস। এতেই বাজিমাত। বুঝে গিয়েছিলেন আর দরকার নেই। তাই হয়ত খুব সচেতন হয়েই তাঁর সোনার কলমটি তুলে রেখেছিলেন।

খড়গপুরেই স্কুল শিক্ষার পাঠ সম্পূর্ণ করেন তিনি। এর পর কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে উচ্চশিক্ষার পাঠ নেওয়া শুরু করেন তিনি। প্রেসিডেন্সি থেকেই ইংরাজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর হন তিনি। তরুণ বয়স থেকেই লেখালেখি শুরু হয় তাঁর। যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর প্রথম গল্প ‘উদয়াস্ত’। সেই থেকে শুরু তাঁর সাহিত্যযুগের। কর্মজীবন শুরু আনন্দবাজার পত্রিকায়। সম্পাদনার পাশাপাশি চলতে থাকে সাহিত্য সৃষ্টির কাজও।

উপন্যাস থেকে ছোট গল্প, প্রবন্ধ, অনুবাদ সাহিত্য—সবেতেই ছিল রমাপদ চৌধুরীর অবাধ বিচরণ। তাঁর বহু বিখ্যাত উপন্যাসের মধ্যে ‘বনপলাশীর পদাবলী’, ‘এখনই’, ‘খারিজ’, ‘লালবাঈ’, ‘দ্বীপের নাম টিয়ারং’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে ১৯৬০ সালে তাঁর লেখা ‘বনপলাশীর পদাবলী’ ব্যপক প্রশংসিত হয় বাংলার সাহিত্যিক ও পাঠক মহলে।

তাঁর বহু উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়নও হয়েছে যেগুলি চলচ্চিত্র হিসেবেও দারুণ সাফল্য পায়। যেমন, দ্বীপের নাম টিয়ারং (১৯৬৩), পিকনিক (১৯৭২), বনপলাশীর পদাবলী (১৯৭৩), খারিজ (১৯৮২), এক দিন অচানক (১৯৮৯) ইত্যাদি বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।

১৯৮২ সালে টেস্ট টিউব বেবির জনক সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জীবনী অবলম্বনে লিখেছিলেন ‘অভিমূন্য’। পরবর্তী কালে চলচ্চিত্র পরিচালক তপন সিনহা এই কাহিনি অবলম্বনে হিন্দিতে তৈরি করেন বিখ্যাত ছবি ‘এক ডক্টর কি মত’।

‘বাড়ি বদলে যায়’ উপন্যাসের জন্য ১৯৮৮ সালে রমাপদ চৌধুরীকে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। এ ছাড়াও একাধিক সাহিত্য সম্মান ছিল তাঁর ঝুলিতে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৯৬৩ সালে পাওয়া আনন্দ পুরস্কার, ১৯৭১ সালে পাওয়া রবীন্দ্র পুরস্কার এবং ২০১১ সালের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ।

২০১৫ সালে রমাপদ চৌধুরীর শেষ লেখা প্রকাশিত হয়। নাম ‘হারানো কথা’। এর পর রীতিমতো ঘোষণা করেই লেখা থামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

রমাপদ চৌধুরী ১৯২২ সালের আজকের দিনে (২৮ ডিসেম্বর) খড়গপুরে জন্মগ্রহণ করেন।

-লেখক: সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.