ঝিনাইদহে করোনা টিকা নেয়ার পর স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ
প্রতিবেদক:
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলায় করোনা ভাইরাসের টিকা গ্রহণের তিনদিন পর আল্লাদী খাতুন (১৩) নামে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত আল্লাদী খাতুন কোটচাঁদপুর উপজেলার দুধসরা গ্রামে টিটো হোসেনের মেয়ে ও কোটচাঁদপুর বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, অবস্থার অবনতি হলে বুধবার সন্ধ্যার পর তাকে যশোরে আনা হয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেও তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়েটা মারা গেছে।
স্বজনরা জানায়, সারাদেশে স্কুল শিক্ষার্থীদের করোনার টিকার আওতায় আনা কর্মসূচি চলছে। এরই অংশ হিসেবে সোমবার কোটচাঁদপুর পৌর পাঠাগারে বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হয়। আল্লাদী খাতুন ওই দিন টিকা নেয়। টিকা নেওয়ার পর মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোররাত থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরদিন সকালে তাকে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
আল্লাদী খাতুনের ফুফু জাহানারা খাতুন বলেন, টিকা নেয়ার কয়েকদিন আগে আল্লাদীর জ্বর ছিল। ওষুধ খাওয়ার পর সে সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু শরীর খুব দুর্বল ছিল। টিকা নেয়ার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। যারা টিকা দিল তারা জিজ্ঞাসা না করে টিকা দিল কেন?
পিতা টিটো হোসেন বলেন, আমার মেয়েকে স্কুল থেকে কার্ড দিয়ে টিকা দিতে বলা হয়েছে। টিকা যেখানে দেওয়া হয়েছে সেখানে কোনো প্রকার স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করেনি। টিকা দেয়ার পর মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্কুলের শিক্ষক আর যারা টিকা দিয়েছে তাদের কারণে আমার মেয়েটা মারা গেছে । আমি বিচার চাই। কেন ওরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করে টিকা দিল। যদি পরীক্ষা করে টিকা দিত, তাহলে আজ এই ঘটনা ঘটত না।
কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েটিকে যখন হাসপাতালে আনা হয়েছিল তখন জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনি ছিল। মেয়েটির আগে থেকেই জ্বর ছিল। কেন সে জ্বর থাকা অবস্থায় টিকা নিল। আমরা তো ওই সময় সবাইকে বলে দিয়েছিলাম, অসুস্থ হলে টিকা নেওয়া যাবে না।