Take a fresh look at your lifestyle.

জন্মদিনে স্মরণ : নন্দলাল বসু

0

বাবলু ভট্টাচার্য :

চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসুর নাম আমাদের দেশের অনেকেরই জানা আছে। নিঃসন্দেহে আপন আপন রুচি মেজাজ শিক্ষা ও প্রথাগত অভ্যাস অনুসারে তাঁর ছবির বিচার অনেকে অনেক রকম করে থাকেন। তিনি ছিলেন আধুনিক ভারতীয় চিত্রশিল্প প্রবর্তকদের অন্যতম।

নন্দলাল বসু দ্বারভাঙ্গা ও কলকাতা স্কুলে শিক্ষা লাভ করেন। এন্ট্রাস পাশ করেন ১৯০২ সালে। বাল্যকাল থেকেই তিনি চিত্রকলা এবং ভাস্কর্য শিল্পের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। এ আগ্রহ থেকেই তিনি কলকাতার একটি চারুকলা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ বিদ্যালয়ে তিনি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর একজন শিষ্য হয়ে ওঠেন।

ভারতের সমকালীন শিল্প জগতে তিনি সর্বজনগ্রাহ্য মাস্টারমশাই নামে খ্যাতি লাভ করেন। নন্দলালের কোনো কোনো ছাত্র, যেমন, বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়, রামকিঙ্কর বেইজ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিখ্যাত শিল্পী হিসেবে খ্যাতিলাভ করেছিলেন।

নন্দলাল বসুর রৈখিক ও অলংকারশোভিত শিল্পশৈলী তাঁর নিজের ব্যক্তিত্বে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। তাঁর অধিকতর পরিচিত চিত্রশিল্পের মধ্যে রয়েছে সাবিত্রী ও যম, গান্ধারী, সিদ্ধার্থ ও আহত হংস, হলাহল পানরত শিব, মিরাবাই, শ্রীচৈতন্যের জন্ম ইত্যাদি। শান্তিনিকেতনে বিদ্যমান তাঁর চিত্রশিল্পে ও অঙ্কনশিল্পে শান্তিনিকেতনের চারপাশের জীবনধারা চিত্রায়িত হওয়ার কারণে বিশিষ্টতা লাভ করেছে।

ভারতের প্রাচীরচিত্রের পুনরুজ্জীবনে নন্দলাল অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বরোদার কীর্তি মন্দির এবং শান্তিনিকেতনের চিনাভবনে তাঁর সর্বোৎকৃষ্ট দুটি কর্ম দেখা যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অন্যদের লেখা বেশ কিছু গ্রন্থের তিনি সচিত্র অলঙ্করণ করেন। ১৯৩০ সালে লবণ-আন্দোলনে গান্ধীর গ্রেফতারের ঘটনাকে স্মরণীয় করে তোলার জন্য তিনি লাঠিহাতে পদযাত্রারত গান্ধীর একটি বস্ত্রখোদিত নকশা অঙ্কন করেন। এটি অহিংস-আন্দোলনের একটি আদর্শ ছবি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

নন্দলাল বসু ভারতের শাসনতন্ত্রের প্রথম সংস্করণের সচিত্র অলঙ্করণ করেন। তাঁকে ভারত সরকারের নকশা তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি ভারতরত্ন, পদ্মভূষণ, পদ্মশ্রী সহ বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৫০ সালে কাশী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানিক ডিলিট. ডিগ্রি প্রদান করে। ১৯৫৬ সালে তিনি নয়া দিল্লীর ললিতকলা আকাদেমির ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯৫১ সালে তিনি কলাভবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং তাঁকে প্রফেসর ইমেরিটাস পদ প্রদান করে সম্মানিত করা হয়। ১৯৫২ সালে বিশ্বভারতী তাঁকে দেশীকোত্তম উপাধি প্রদান করে।

নন্দলাল বসু ১৮৮২ সালের আজকের দিনে (৩ ফেব্রুয়ারি) পূর্ববিহারের হাভেলি-খড়গপুরে জন্মগ্রহণ করেন।

লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.