Take a fresh look at your lifestyle.

এইচএসসিতে দেশসেরা যশোর শিক্ষাবোর্ড

0

প্রতিবেদক

এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সবচেয়ে বেশি পাসের হার যশোর শিক্ষাবোর্ডে। এইচএসসি-২০২১ এর ফলাফলে পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন শিক্ষার্থী। ২০২০ সালের এইচএসসি’ ফলাফলের (পরীক্ষা হয়নি) চেয়েও এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্তি প্রায় দ্বিগুণ। গতবছর প্রকাশিত ওই ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১২ হাজার ৮৯২ জন। যদিও করোনার কারণে পরীক্ষা না হওয়ায় শতভাগ শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। এবারের ফলাফলে শুধু দেশসেরাই নয়, যশোর বোর্ডেরও অতীতের সব পরীক্ষার ফলাফলের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। রোববার দুপুরে প্রকাশিত ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড’র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সুনির্দিষ্ট করে ভালভাবে বেশি সময় ধরে প্রস্তুতি নিতে পেরেছে। এ কারণে এমন ফল অর্জন সম্ভব হয়েছে।
যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৬৪ হাজার ১০৬ জন এবং ছাত্রী ৬১ হাজার ৬৩৫ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন। বহিষ্কৃত হয়েছে ৩ জন।

শিক্ষাবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে যশোর বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৮ হাজার ৯৭০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৮ হাজার ২১ জন। পাসের হার ৯৫ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ হাজার ৩৮৮ জন। মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৯১ হাজার ৯৮৫ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ৯১ হাজার ২৩০ জন। পাসের হার ৯৯ দশমিক ১৮ ভাগ। এই বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮ হাজার ৫৭৬ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ১৭ হাজার ২০৮ জন ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে পাস করেছে ১৬ হাজার ৪৯০ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৮৩ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৯১৪ জন ছাত্রছাত্রী।

করোনা মহামারীর কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। কোভিড-১৯ জনিত বৈরী পরিস্থিতির কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত ‘এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রণয়ন সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটি’র সুপারিশ অনুসারে এবং বোর্ড কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এই ফলাফলে ২০২০ সালে যশোর বোর্ড থেকে ১ লাখ ২১ হাজার ৫২৮ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিল। করোনা ভাইরাসের কারণে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব না হওয়ায় ঘোষণা অনুযায়ী এদের সবাইকে উত্তীর্ণ করা হয়। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৬১ হাজার ৭৬১ জন এবং ছাত্রী ৫৯ হাজার ৭৬৭ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১২ হাজার ৮৯২ জন।

এবারের ফলাফলের চিত্র তুলে ধরে যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, করোনা মহামারি কারণে প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থীদের তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবার পরীক্ষাও নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ জন্য শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনেক সময় ধরে প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পেয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে উত্তর প্রদানের জন্য অনেক অপশন ছিল। একইসাথে অ্যাসাইনমেন্টের জন্যও শিক্ষার্থীর উপরে চাপ ছিল। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা যেমন পড়াশোনার মধ্যে ছিল; তেমনি অভিভাবকরাও ছেলেমেয়েদের ওপর বাড়তি নজর রেখেছেন।

আর যশোর বোর্ডের ভাল ফল করার কারণে হিসেবে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র আরও উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যারা অবতীর্ণ হয়েছিল, এরা ২০১৯ সালে এসএসসি উত্তীর্ণ হয়। ওই বছর এসএসসিতে যশোর বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৮৮ ভাগ। যশোর বোর্ডে প্রশ্নব্যাংক তৈরি করে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার যে উদ্যোগ চালু হয়েছে; এই শিক্ষার্থীরা সেই উদ্যোগের প্রথম ব্যাচ। এই সব মিলিয়েই যশোর বোর্ড ভাল ফলাফলের ধারা অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ফলাফল প্রকাশের মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গণভবন থেকে এ অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের বিস্তারিত তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তবে দুপুর ১২টা থেকে দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট থেকে কিংবা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এসএমএসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার ফল জানতে পারবে।

এবার নয়টি সাধারণ বোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের ১৪ লাখ ৪ হাজার ২৪৪ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পাসের হার ৯৫.২৬ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। একজন ও শিক্ষার্থী পাস করেনি এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫টি।

৯টি সাধারণ বোর্ডে পাসের হার ৯৫.৫৭ হাজার, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২২ জন। মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৯৫.৪৯ শতাংশ, জিপিএ-পেয়েছে ৪ হাজার ৮৭২ জন। কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৯২.৮৫ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৭৭৫ জন।

নয়টি সাধারণ বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৯৬.২০%, রাজশাহীতে ৯৭.২৯ %, কুমিল্লায় ৯৭.৪৯%, যশোরে ৯৮.১১%, চট্রগ্রামে ৮৯.৩৯%, বরিশালে ৯৫.৭৬%, সিলেটে ৯৪.৮০%, দিনাজপুরে ৯২.৪৩% এবং ময়মনসিংহ শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৯৫.৭১% শিক্ষার্থী পাস করেছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.