বর্ণিল উৎসবে পুনশ্চ’র বসন্তবরণ
প্রতিবেদক
ফাগুন হাওয়ার দোল লেগেছে বাংলার প্রকৃতিতে, এসেছে বসন্ত। আম্রমুকুলের সুবাস আর ফুলে ফুলে রঙিন বাংলার প্রান্তর। প্রকৃতির মোহনীয় এমন রূপকে বরণ করতে পুনশ্চ যশোরের আয়োজনে বর্ণিল উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে শহরের টাউন হল ময়দানে রওশন আলী মঞ্চে বসন্তের গান, নাচ আর কবিতায় উৎসবের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে দর্শকের মনেও।
উদ্বোধনী পর্বে উৎসব মঞ্চে যশোরবাসীকে বসন্তের শুভেচ্ছা জানান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার। তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় লালিত বাংলা বর্ষবরণ, বসন্ত উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসব। যে উৎসব আজ জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে; যেখানে সামিল হয় আপামর বাঙালি। করোনার বিধিনিষেধ পেরিয়ে আমারা আবারও মিলিত হয়েছি প্রাণের আবেগে।
তিনি বলেন, আমরা বাঙালিরা যতদিন থাকবো ততদিন উৎসবের মধ্য দিয়ে আমাদের অস্তিত্ব, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের মুল্যবোধ জাগরুক রাখবো। তিনি মুক্তবুদ্ধি ও সংস্কৃতি চর্চার সাথে জড়িতদর পাশে থাকতে সকলকে আহবান জানান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে পুনশ্চ যশোরের সাধারণ সম্পাদক পান্না লাল দে বলেন, করোনাভাইরাস বিস্তাররোধে স্বাস্থবিধি মানায় সরকারি বিধিনিষেধের কারণে বরাবরের মত এবছর পহেলা ফাল্গুনে এ উৎসব হয়নি। ৯ ফাল্গুন (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে সরকারি বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় স্বল্প প্রস্তুতিতে ১২ ফাল্গুন এ উৎসব আয়োজন করা হয়েছে।
সংগঠনের শিশু, কিশোর ও বড় বিভাগের শিল্পীদের পরিবেশনায় হয় এ উৎসব। শুরুতে শিশুদের সমবেত কণ্ঠে ‘ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল…’ গানের মাধ্যমে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শিশুশিল্পী অন্তরা ও ধারা গেয়ে শোনায় ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান…’, শর্মি ও নির্ঝর পরিবেশন করে ‘আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে…’, সুপর্ণ ও তাথৈ ‘আকাশা বাতাসে…’, মৌলি ও শ্রেষ্ঠা ‘যদি তারে নাই চিনিগো…’ পাঁপড়ি ও মৌমিতা ‘বসন্ত বাতাসে সই গো…’, লাবন্য ও টিশা ‘আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব…’ পরিবেশন করে। শিশুদের মধ্যে একক সংগীত পরিবেশন করে প্রিয়ন্তী ও মণিষা। তারা গেয়ে শোনায় যথাক্রমে নজরুল সঙ্গীত ‘রেশমি চুড়ির শিঞ্জিনীতে রিমঝিমিয়ে…’ ও কালো জলে কুচলা তলে…’। ‘লাগে দোল পাতায় পাতায়..’, ‘সুন্দরী রাধা…’, ‘বিহুর এ লগন…’ গানের তালে নৃত্য পরিবেশন করে শিশু শিল্পীরা।
কিশোর- কিশোরীদের সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘নীল দিগন্তে ওই…’। মনে কর আমি নেই গানটি দ্বৈতকণ্ঠে শোনায় অনন্যা ও বিদিশা, বসন্ত ও রিক্তী পরিবশন করে ‘ওহে শ্যাম…’, অমিয় ও অঞ্জন পরিবেশন করে ‘নারী হয় লজ্জাতে লাল…’। কিশোর বিভাগে একক সংগীত পরিবেশন করে সুচিত্রা দাস পিংকী। ‘চল পালায়ে যাই গানটি গেয়ে শোনায় তূর্য, তরঙ্গ ও অর্ঘ্য। ‘আজি এ আনন্দ প্রভাতে…’ গানের সাথে নৃত্য পরিবেশন করে মুক্ত ও ভূমি।
সংগঠনের বড় বিভাগের শিল্পী ‘আজ জীবন খুঁজি পাবি…’ সমবেতকণ্ঠে এ জীবনমুখী গানটি পরিবেশন করেন। ‘ও আমার বন্ধু গো…’ গানটি শোনায় চন্দন ও দ্যুতি। একক সংগীত পরিবেশন করেন শায়ন্তনী দেবনাথ, টুটুল বিশ্বাস, লক্ষ্মী রাণী বৈদ্য, প্রান্ত কীর্তনিয়া, আজিজুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর হোসেন।