Take a fresh look at your lifestyle.

জন্মদিনে স্মরণঃ এলিজাবেথ টেইলর

0

বাবলু ভট্টাচার্য :

হলিউডের সর্বকালের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী ডেইম এলিজাবেথ রোজমন্ড টেইলর, যিনি ‘লিজ’ টেইলর নামে ব্যাপক পরিচিত।

তাঁর বাবা ফ্রান্সিস লেন টেইলর পেশায় ছিলেন আর্ট ডিলার এবং মা সারা ভায়োলা ওয়ার্মরড ছিলেন মঞ্চকর্মী। ১০ বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে কমেডি ঘরানার ছবি ‘দেয়ার’স ওয়ান বর্ন এভরি মিনিট’-এ অভিনয়ের সুবাদে রূপালী পর্দায় অভিষেক ঘটে এলিজাবেথের। এরপর ১৯৪৩ সালে ‘লেসি, কাম হেয়ার’ ছবিতে রডি ম্যাকডুয়ালের সাথে পর্দায় জুটি বাঁধেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রডি ছিলেন টেইলরের সবচেয়ে কাছের মানুষের একজন।

১৯৪৪ সালে টেইলর সর্বপ্রথম খ্যাতি পান ‘ন্যাশনাল ভেলভেট’ ছবিতে অভিনয় করে। প্রযোজক টেইলরের কাজে মুগ্ধ হয়ে ছবিতে তাকে যে ঘোড়াটিতে চড়তে দেখা যায়, সেটা উপহার হিসেবে দেন। ১৯৪৯ সালে ‘কন্সপাইরেটর’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। এই চলচ্চিত্রটি ফ্লপ হলেও টেইলর সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ান।

১৯৫০ সালে তিনি প্রথমবারের মত বিয়ের পীড়িতে বসেন। এরপর আরো সাতবার বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের মাত্র দু’দিনের মাথায় মুক্তি পায় ‘ফাদার অব দ্য ব্রাইড’। পরে ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রটির সিকুয়্যেল তৈরি হয়। তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয় জর্জ স্টিভেন্সের ‘এ প্লেস ইন দ্য সান’ ছবিটি। ৬টি বিভাগে অস্কার জিতে চলচ্চিত্রটিতে লাইব্রেরি অব কংগ্রেস ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্ট্রিতে জায়গা করে নেয়।

১৯৫৪ সালে ‘লাস্ট টাইম আই স দ্য প্যারিস’, ‘বুয়ো ব্রামেল’, ‘এলিফ্যান্ট ওয়াক’সহ মোট ৪টি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়।

আমেরিকার গৃহযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত ‘রেইনট্রি কান্ট্রি’ চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করে এলিজাবেথ প্রথমবারের মত সেরা অভিনেত্রীর অস্কার মনোনয়ন পান। ছবিতে টেইলরের বিপরীতে ছিলেন মন্টগোমরী ক্লিফ।

‘বাটারফিল্ড ৮’ চলচ্চিত্রটিতে টেইলর এবং তাঁর স্বামী এডি ফিশার অভিনয় করেন। এ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে জীবনের প্রথম অস্কারটি জুটলেও টেইলর-ফিশার জুটির কাছে চলচ্চিত্রটি ছিলো খুবই অপছন্দের।

এরপর মুক্তি পেলো ‘ক্লিওপেট্রা’। এই চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে ইতিহাস সৃষ্টি করলো। ৪৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এ এপিক মুভিটি সেই সময়ে সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। টেইলর রেকর্ড এক মিলিয়ন ডলার পারিশ্রমিকের চুক্তি করেন। ‘হু’জ অ্যাফরেইড অফ ভার্জিনিয়া উলফ?’ এলিজাবেথকে এনে দেয় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অস্কার।

‘হ্যামারস্মিথ ইজ আউট’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর খেতাব জেতেন।

আশির দশকের শুরুতে ধীরে ধীরে চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকেন আর টেলিভিশনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এরপর বছর বিশেক ফিচার ফিল্মের চেয়ে টিভি সিরিজে কাজ করেছেন বেশি। ‘জেনারেল হসপিটাল’, ‘দ্য সিম্পসন’, ‘পোকার হাউজ’ প্রভৃতি জনপ্রিয় টিভি সিরিয়ালে তাঁকে দেখা গেছে।

১৯৮৪ সালে প্রথম হলিউড তারকা হিসেবে এইডস রোগের বিরুদ্ধে জনমত গড়তে এগিয়ে আসেন টেইলর। এইডস রোগীদের জন্য গঠন করেন অর্থ তহবিল। এর পরের বছর আমেরিকান ফাউন্ডেশন ফর এইডস রিসার্চ-এর যাত্রা শুরু হয়, যার সহ-প্রতিষ্ঠাতা টেইলর। ১৯৯২ সালে এইডস-এর বিরুদ্ধে লড়তে অবদান রাখার জন্য বিশেষ অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড ‘জিন হার্শনট হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন।

চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ২০০০ সালে টেইলরকে পুরুষ নাইটের সমতুল্য ‘ডেইম’ উপাধিতে ভূষিত করেন।

২০১১ সালের ২৩ মার্চ লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এই হলিউড কিংবদন্তী।
ডেইম এলিজাবেথ রোজমন্ড টেইলর ১৯৩২ সালের আজকের দিনে (২৭ ফেব্রুয়ারি) উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.