Take a fresh look at your lifestyle.

সেই যুবলীগনেতা মাজহারকে শোকজ

৪৮ ঘন্টার মধ্যে দিতে হবে শোকজের ব্যাখ্যা

0

প্রতিবেদক :
প্রধান শিক্ষককে গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেয়ার ঘটনায় যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম মাজহারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা যুবলীগ। তাকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে মোবাইল ফোনে প্রধান শিক্ষকে হুমকির কথোপকথনের ভাইরাল অডিও বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাতে যশোর জেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুর সাক্ষরিত এই নোটিশ জারি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত যুবলীগনেতা মাজহারুল ইসলাম মাজহার বলেন, শোকজ নোটিশের বিষয়ে আমি শুনেছি। তবে আমার কাছে এখনও আসনি। ফেসবুকে যে হুমকির কথোপকথনের ভাইরাল অডিও সেটি আমার হলেও অনেক কথা এডিট করা হয়েছে। শোকজ নোটিশে দেখি কি বলেছে, তারপর ব্যাখা দেব।

এ বিষয়ে যশোর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু বলেন, ‘যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ বিষয়ে আমার কথা হয়েছে। যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলামের একজন শিক্ষকের সঙ্গে এমন আচরণ যুবলীগের কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এটা করতে পারে না, যা দলীয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘন ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মতো যুবলীগনেতা মাজহারকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শোকজের সঠিক ব্যাখা দিতে না পারলে আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।

গত সোমবার ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন করা নিয়ে যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম মাজহার বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে মুঠোফোনে হুমকির কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ৬ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ওই কথোপকথনের অডিওতে শোনা যাচ্ছে, যুবলীগের নেতা মাজহারুল বারবার অকথ্য ভাষায় প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে গালাগালি করছেন। প্রধান শিক্ষকের উদ্দেশে মাজহারুলকে বলতে শোনা যায়, ২৪ ঘণ্টা পর যদি ওই শিক্ষক যশোরে থাকতে পারেন, তাহলে তিনি চুড়ি পরে ঘুরে বেড়াবেন। এ ঘটনায় গত ৩১ মার্চ ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, যশোর সদর উপজেলার ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আগের কমিটির অগোচরে যুবলীগনেতা মাজহার ও তার সহযোগিরা এডহক কমিটির সভাপতি হিসাবে মনিরুজ্জামানকে নিযুক্ত করেন। এতে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবকরা ঐ কমিটির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনাসহ একজন অভিভাবক হাইকোর্টে মামলা করেন। বর্তমানে এই মামলাটি চলমান রয়েছে। এর জের ধরে গত ২৪ মার্চ দুপুর দুটোর দিকে মাজহার তার নম্বর ফোন থেকে প্রধান শিক্ষককে ফোন দিয়ে কমিটি অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে বলেন। তাকে কমিটির বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে জানালে গালিগালাজসহ জীবননাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ঐ জিডিতে নিরাপত্তা চেয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন।

এদিকে শিক্ষককে গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেয়ার ঘটনা তদন্তের অনুমতি দিয়েছে আদালত। বুধবার যশোর সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইসলাম এ অনুমতি দেন। এরপর অভিযোগ তদন্তের জন্য ইছালী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মোকাররম হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও ডিবি যশোরের ওসি রূপন কুমার সরকার বলেন, যুবলীগ নেতা মাজহারুলের বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। মুঠোফোনের কথোপকথনের তালিকা চেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা মোকাররম পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছেন। সেটি পাওয়ার পর তদন্ত শুরু হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.