Take a fresh look at your lifestyle.

এবার মাজহার ইছালী যুবলীগ নেতাকে হত্যার হুমকি দিলেন

যুবলীগনেতা মাজহার আওয়ামী যুবলীগে অনুপ্রবেশকারী : জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন

0

প্রতিবেদক :
প্রধান শিক্ষককে হত্যার হুমকির রেশ কাটটে না কাটতেই এবার ইছালী ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দুখু মিয়াকে হত্যার হুমকি অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম মাজহারের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে লাগাতার প্রাণনাশের হুমকি ও অকথ্যভাষায় গালিগালাজ দিচ্ছে এমন অভিযোগ এনে গত ১৬ এপ্রিল যুবলীগনেতা মাজহারসহ ৬ জনের নামে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তবে অভিযুক্ত যুবলীগনেতা মাজহার বিষয়টি মিথ্যা দাবি করে বলেন, রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের কারণে একটি গ্রুপ আমার নামে নানা মিথ্যা তথ্য রটাচ্ছে।

এদিকে বারবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের পরেও দলের স্বপদে রাখায় নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে যুবলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে। দাবি জানিয়েছেন, বিতর্কিত, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী এই যুবলীগনেতাকে বহিষ্কার করে সদর উপজেলা যুবলীগ কলঙ্কমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়ার।

ইছালী ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দুখু মিয়া জিডিতে উল্লেখ করেছেন, ইছালী ইউনিয়নের বাসিন্দা তৌহিদ হোসেন, ইকরামুল, আসিব হোসেন, বোরহান উদ্দিন, সৈকত হোসেন যুবলীগনেতা মাজহারুল ইসলাম মাজহারের সন্ত্রাসী বাহিনী সদস্য। আমাদের মধ্যে দলীয় মতপার্থক্যের কারণে ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে যুবলীগনেতা মাজহারুল বিভিন্ন সময়ে আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে আসছিল। গত ১৩ এপ্রিল বেলা ২টার দিকে আমি মনোহরপুর বাজারের গোলচত্বরে সামনে অবস্থানকালে যুবলীগনেতা মাজহারের নেতৃত্বে তিনটি মোটরসাইকেলে এসে আমাকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দিতে থাকে। তাছাড়া অপহরণ করার হুমকিও প্রদান করেন যুবলীগনেতা মাজহার। এই ঘটনার পরে ভুক্তভুগী যুবলীগনেতা দুখু মিয়া নিরাপত্তায় ভুগছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করেছেন। একইসাথে তাকে নিরাপত্তা এবং এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

এই বিষয়ে মুঠোফোনে দুখু মিয়া বলেন, জিডি করার পরে তিনি ও তার পরিবার আরও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। রোববার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ৬টার দিকে যুবলীগনেতা মাজহারের নেতৃত্বে কয়েকটি মোটরসাইকেলে এসে তার বাড়ির সামনে মহড়া দিয়েছে বলে তিনি জানান। লোকমারফত তিনি শুনেছেন, দ্রুত জিডি তুলে না নিলে তার অবস্থা আরও খারাপ হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এদিকে, রোববার জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবসে আলোচনায় যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন যুবলীগনেতা মাজহারের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, বির্তকিত যুবলীগনেতা মাজহারকে দ্রুত বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় যুবলীগের কাছে সুপারিশ করবে জেলা আওয়ামী লীগ। যশোর জেলায় কোনো বিতর্কিত নেতার স্থান আওয়ামী লীগসহ তাদের সহযোগী সংগঠনেও হবে না।

যুবলীগনেতা মাজহার আওয়ামী যুবলীগে অনুপ্রবেশকারী উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বিএনপি এবং অবৈধ রাজনৈতিক দলের সাথে মাজহারের আতাত ছিল। তাকে যুবলীগে কারা এনেছে, কারা জায়গা দিয়েছে তাদেরও নামের তালিকা করা হচ্ছে। মাজহারের মতো অনুপ্রবেশকারী নেতা যেন আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনে আসতে না পারে, সেই কারণে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

প্রসঙ্গ, ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন করা নিয়ে গত সোমবার যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম মাজহার বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে মুঠোফোনে হুমকি দেন। এর কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ৬ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ওই কথোপকথনের অডিওতে শোনা যাচ্ছে, যুবলীগের নেতা মাজহারুল বারবার অকথ্য ভাষায় প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে গালাগালি করছেন। প্রধান শিক্ষকের উদ্দেশে মাজহারুলকে বলতে শোনা যায়, ২৪ ঘণ্টা পর যদি ওই শিক্ষক যশোরে থাকতে পারেন, তাহলে তিনি চুড়ি পরে ঘুরে বেড়াবেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই জিডিতে নিরাপত্তা চেয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন। পরে শিক্ষককে গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেয়ার ঘটনা তদন্তের অনুমতি দিয়েছে আদালত। যশোর সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইসলাম এ অনুমতি দেন। এরপর অভিযোগ তদন্তের জন্য ইছালী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মোকাররম হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এছাড়া যশোর সদর উপজেলার আয়শা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যুবলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম মাজহারের কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে গণপদত্যাগ করেছেন অভিভাবক সদস্যরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেনের কাছে এ পদত্যাগপত্র জমা দেন ছয় সদস্য। পরে শিক্ষককে গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম মাজহারকে শোকজ করে যুবলীগ। পরবর্তীতে তার জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সাময়িক বহিষ্কারের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় যুবলীগ। কেন্দ্রীয় যুবলীগের বহিষ্কারের নির্দেশ দিলেও জেলা কমিটি অজ্ঞাত কারণে সদর উপজেলার এই বিতর্কিত নেতাকে বহিষ্কার করতে পারেনি। ফলে নেতৃমূলের যুবলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.