Take a fresh look at your lifestyle.

ছাত্রলীগের সম্পাদক লেখক নিজ উপজেলায় অবাঞ্চিত ঘোষণা

0

প্রতিবেদক :

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ১৭ ইউনিয়নের সভাপতি-সম্পাদক, আহ্বায়ক-যুগ্ম আহ্বায়কসহ ১৯ নেতা পদত্যাগ করেছেন। একই সঙ্গে নিজ উপজেলা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্য্যকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে।

তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে অর্থের বিনিময়ে অযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে পকেট কমিটি ঘোষণা করায় এই সিন্ধান্ত নিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।

শনিবার বিকালে প্রেস ক্লাব যশোরে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা এই সংবাদ সম্মেলন করেন। এদিকে, ছাত্রলীগের কমিটিতে বিতর্কিত নেতাদের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে এসে প্রেস ক্লাবের সামনে ১০ জন নেতাকর্মী বেধড়ক মারপিটের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করে পদবঞ্চিত নেতারা। তবে কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত আহতরা তাদের নাম প্রকাশ না করলেও তারা সবাই লেখক ভট্টচার্য্যরে অনুসারী বলে জানিয়েছেন। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পকেট কমিটির বিরুদ্ধে এবং পদবঞ্চিত নেতাদের উপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৯ এপ্রিল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মণিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। একই সাথে ৫ সদস্যের বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির সভাপতি করা হয় মাহমুদুল হাসান রকি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় রমেশ দেবনাথকে। ৫ সদস্য বিশিষ্ট ঐ কমিটিতে ১ জন সহ সভাপতি ১ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ১জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। ঘোষিত উপজেলা কমিটিতে অনভিজ্ঞ, বিতর্কিত, রাজনৈতিক ভারসাম্যহীন এবং সদ্য এস এসসি পাশ করা ব্যক্তিদের অন্তভুক্ত করা হয়েছে। ঘোষিত উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে একটি শিশু কমিটি আখ্যা দিয়ে খেদাপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হাদিউজ্জামান বলেন, ঘোষিত কমিটির সভাপতি মণিরামপুর বাজারে একটি ফাস্টফুড ব্যবসায়ী এবং তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এসসি পর্যন্ত। এমনকি উপজেলায় ছাত্র সমাজের কাছে তিনি বিবাহিত ও ডিভোর্সী হিসাবে সমালোচিত। সাধারণ সম্পাদক রমেশ দেবনাথ যিনি মনোনীত হয়েছে তার কোন ছাত্রত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যুগ্ম সাধারণ পদে এস এম বাপ্পী হুসাইন তার কোন ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড শাখাও কোন সাধারণ সদস্য পদ নাই। সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান অভি তিনি সদ্য এস এসসি পাস এবং ছাত্রলীগের কর্মকান্ডের দেখা যায়নি। এরা সকলেই মণিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের অপরিচিত মুখ। আমরা দীর্ঘদিন উপজেলা রাজনীতি সংক্রিয় থেকেও আমরা পদ পদবী না পেয়ে হতাশ। অর্থের বিনিময়ে বিতর্কিত ও অযোগ্যদের পদ দেওয়া হয়েছে। এসকল কর্মকান্ডের মূল হোতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্য্যকে অবাঞ্চিত করেন। একই সাথে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের সংক্রিয় সভাপতি-সম্পাদক এবং আহ্বায়করা গণপদত্যাগ করার সিন্ধান্ত নিয়েছি।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগনেতা হাদিউজ্জামান বলেন, ছাত্রলীগের কমিটিতে বিতর্কিত নেতাদের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে এসে প্রেস ক্লাব সামনে সন্ত্রাসীদের কাছে হামলার শিকার হয়েছি। এই ঘটনায় ১০ জন ছাত্রলীগনেতা আহত হয়েছেন। আহতদের ভিতর মণিরামপুর সরকারি কলেজের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান ও ভোজগাতি ইউনিয়নের আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ গুরুত্বর আহত হয়েছে। তারা শহরের একটি বাড়িতে সন্ত্রাসীদের ভয়ে আত্মগোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান। তবে কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত সংবাদ সম্মেলনে তাদের নাম প্রকাশ করেননি তিনি। তবে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানিয়েছেন মণিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দরা যখন প্রেস ক্লাব যশোরের সামনে দাঁড়ায় তখন যশোর সরকারি এম এম কলেজ ছাত্রলীগনেতা সৌরভ ভট্টচার্য্য এবং ছাত্রলীগনেতা রাব্বীর নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ যুবক আসে। এর পর মণিরামপুর থেকে আসা ছাত্রলীগনেতাদের সাথে তারা বাগবিতন্ডা করতে থাকে। এক পর্যায়ে সৌরভ ভট্টচার্য্যরে সাথে থাকা ছাত্রলীগনেতা রাব্বী, এনামুলসহ আট থেকে ১০ জন যুবক পদবঞ্চিতদের সবাইকে ডেকে নিয়ে সার্কিট হাউজের দিকে যায়। সেখানে হাতুড়ি, লাঠি, হক স্ট্রিক দিয়ে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেলে তারা পালিয়ে যায়।

শনিবার বিকালে প্রেসক্লাব যশোরে মণিরামপুর উপজেলা ১৭টি ইউনিয়নের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যকে তার নিজ এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এর আগে ছাত্রলীগের একটি প্রেসক্লাবের সামনে মহড়া দেন

এই বিষয়ে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব সাংবাদিকদের জানান, মণিরামপুরে একটি সুন্দর কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে আরো কয়েকজন ত্যাগী নেতার নাম অনুভুক্ত করার জন্য কেন্দ্রে নাম প্রস্তাবনা করা হয়েছে। পদ বঞ্চিতদের উপর যারা হামলা চালিয়েছে তারা কেউ ছাত্রলীগনেতা না। তার পরেও এমন হামলার ঘটনার সাথে যদি কোন ছাত্রলীগনেতা জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে ,মণিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগে স্থানীয় সংসদ ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টচার্য্যরে একক আধিপত্যের অবসান ঘটেছে। সদ্য ঘোষিত কমিটিতে ছাত্রলীগের কোন নেতা অন্তভুক্ত না হওয়ায় তিনি ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। এর পর থেকে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টচার্য্যরে অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুকে বর্তমান কমিটি নিয়ে নানা সমালোচনা করছেন। এমনকি শনিবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা পরিষদের ভিতর জেলা ডাকবাংলোতে প্রতিমন্ত্রী অবস্থানকালে ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ প্রতিমন্ত্রীকে ফুলের শুভেচ্ছা জানাতে গেলেও নবনির্বাচিতদের শুভেচ্ছা গ্রহন করেননি বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছাত্রলীগের নির্ভরশীল একটি সূত্র।

Leave A Reply

Your email address will not be published.