Take a fresh look at your lifestyle.

মাহে রমজান

0

বিল্লাল বিন কাশেম :

২৯তম রোজার দোয়া : হে আল্লাহ ! আজ আমাকে আপনার রহমত দিয়ে ঢেকে দিন। গুনাহ থেকে মুক্তিসহ আমাকে সাফল্য দান করুন। আমার অন্তরকে মুক্ত করুন অভিযোগ ও সন্দেহের কালিমা থেকে। হে ঈমানদার বান্দাদের প্রতি দয়াবান।
রমজানের শেষ দশকে মসজিদে ইতেকাফ করেছেন অনেকে। আমাদের নারী বা মায়েরা একাকি সতর্কতা ও সচেতনতার সঙ্গে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে ইতেকাফ করতে পারছেন আশা করি। সে ক্ষেত্রে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি তাওবা ইসতেগফার করতে হবে। মহামারি করোনা থেকে মুক্তির জন্য বিশ্ববাসীর জন্য তথা প্রত্যেক মুসলমানের জন্যই দোয়া করা আবশ্যক।
এবারে আমরা রমজানের শেষ দশ দিন নিয়ে আলোচনা করবো। রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিনের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ‘রমজান মাসের শেষ দশক শুরু হলেই নবী করিম (সা.) তাঁর কোমর শক্ত করে বেঁধে নিতেন। এ সময়ের রাতগুলোতে তিনি জাগ্রত থাকতেন এবং ঘরের লোকদের সজাগ করতেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘রাসূল (সা.) রমজান মাসের শেষ দশকে ইবাদত-বন্দেগির কাজে এতই কষ্ট স্বীকার করেছেন, যা অন্য সময় করতেন না।’ আর হজরত জয়নব বিনতে সালমা (রা.) বলেন, ‘রমজান মাসের শেষ দশকে তাঁর ঘরের লোকদের মধ্যে রাত জেগে ইবাদত করতে পারে এমন কাউকেও ঘুমাতে দিতেন না এবং সবাইকে জেগে থেকে ইবাদত করার জন্য প্রস্তুত করতেন।’
এ দশকের কিছু বিশেষ আমল রয়েছে। যেমন ইতেকাফ, শবে কদর। এ দশকজুড়েই শবে কদরের অনুসন্ধান করে মুসলিম উম্মাহ। তাই এ দশকের মর্যাদা একটু ভিন্ন। এক হাজার মাস ৮৩ বছরের চেয়েও বেশি হয়। এ রাতের কারণেই পুরো রমজান তাৎপর্য ও ফজিলতপূর্ণ হয়েছে। আর পবিত্র কোরআনও অবতীর্ণ হয়েছে শেষ দশকের কদরের রাতে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তো এই কিতাবকে অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রজনীতে। অবশ্যই আমি সতর্ককারী। এ রজনীতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয়।’ (সূরা : আদ-দুখান, আয়াত : ৩-৪)
এ দশকের বিশেষ আরো একটি আমল হলো, ইতেকাফ। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ইতিকাফ করেছেন, সাহাবায়ে কেরামও করেছেন, তাই আমাদের জন্যও ইতিকাফ করা সুন্নাত। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন : ‘ইন্তেকাল পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন, এরপর তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন।’ (বুখারি : ১৮৬৮; মুসলিম : ২০০৬)
হজরত আবু হুরাইরা (রা) বলেন, ‘রাসূল (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি পরলোকগত হন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফে কাটান।’ (বুখারি : ১৯০৩) রাসূল (সা.) আরো বলেন, ‘আমি কদরের রাত্রির সন্ধানে প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করলাম। এরপর ইতিকাফ করলাম মধ্যবর্তী ১০ দিন। অতঃপর ওহি প্রেরণ করে আমাকে জানানো হলো যে তা শেষ ১০ দিনে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ইতিকাফ পছন্দ করে, সে যেন ইতিকাফে বসে।’ (মুসলিম : ১৯৯৪)
এ দশকে ইতেকাফ ও শবে কদর অঙ্গাঙ্গি জড়িত। রমজানের বিদায়ী দশক হিসাবে এ দিনগুলোতে কোনভাবেই হেলায় হেলায় কাটানো উচিত নয়। ইতেকাফ ও শবে কদর দুটিই পবিত্র মাহে রমজানের গুরুত্বপূর্ণ আমল। রহমত ও মাগফেরাতের মতোই নাজাতের দশককে আমল, দোয়া দরুদ ও মুক্তি প্রার্থনার মাঝ দিয়ে কাটানো উচিত। ঈদ উৎসবের নামে যেন এ দশকের গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো কোনভাবেই হারিয়ে না যায়।

লেখক : উপ-পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়

Leave A Reply

Your email address will not be published.