Take a fresh look at your lifestyle.

জন্মদিনে স্মরণ : সোমেন চন্দ

0

বাবলু ভট্টাচার্য :

সোমেন চন্দ- জানা-অজানার মাঝে একটি অনন্য নাম। ‘তরুণের প্রেরণা’, ‘গল্পকার’, ‘সাহিত্যিক’ কিংবা ‘বিপ্লবী’, যে নামেই তাঁকে ডাকা হোক না কেন, খুব অল্প বয়সের সকল কিশোর ও তরুণের জন্য তিনি আদর্শ। মাত্র ২১ বছর ১৫ দিন তিনি ছিলেন এই পৃথিবীর বুকে।

১৯৩৬ সালে তিনি পগোজ স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বই খোঁজার আগ্রহ থেকেই শিশুকাল থেকে সোমেন চন্দ পাঠাগারমুখী হন।

ঢাকার জোড়পুল লেনের প্রগতি পাঠাগার ছিল সাম্যবাদে বিশ্বাসী মানুষদের পরিচালিত। পাঠাগারে পড়তে পড়তে সোমেন বাংলা সাহিত্যে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং কার্ল মার্ক্সের তত্ত্বে অনুরক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৩৭ সালে তিনি প্রগতি পাঠাগারের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ওই সময়েই মিটফোর্ড হাসপাতালে ডাক্তারি পড়ার জন্য ভর্তি হন। কিন্তু ১৯৩৯ সালে ডাবল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আগেই ডাক্তারি পড়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

স্কুলজীবন থেকেই গল্প লিখতেন সোমেন। তখন তাঁর প্রকাশিত লেখা বা নতুন লেখার কথা পরিবারের কেউ জানতেন না। ১৯৩৭ সালে ১৭ বছর বয়সে প্রকাশ পায় সোমেনের প্রথম গল্প ‘শিশু তপন’ সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায়। এরপর আরও উল্লেখযোগ্য কিছু লেখা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ওই বছরেই প্রকাশিত হয়। এই ১৭ বছরেই বাংলাদেশে বন্যার যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ভোগ, তা নিয়ে সম্ভবত বাংলা সাহিত্যে প্রথম উপন্যাস ‘বন্যা’ লেখেন সোমেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয় নবশক্তি পত্রিকায়।

তিনি “প্রগতি লেখক সংঘে” যোগদান করেন এবং মার্ক্সবাদী রাজনীতি ও সাহিত্য আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন। তিনি বাংলা সাহিত্যে প্রথম গণসাহিত্যের উপর কাজ করেন। ১৯৪১ সালে সোমেন চন্দ প্রগতি লেখক সংঘের সম্পাদক নির্বাচিত হন। প্রচণ্ড মেধাবী সোমেন চন্দের লেখা সাধারণত প্রগতি লেখক সংঘের সাপ্তাহিক বা পাক্ষিক সভাসমূহতে পাঠ করা হতো। ১৯৪০ সালে তার “বনস্পতি” গল্পটি “ক্রান্তি” পত্রিকায় ছাপা হয়। ১৯৪১ সালের দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে সোমেন গল্প লেখেন ‘দাঙ্গা’।

তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর বিভিন্ন গল্প সংকলন ছাপা হয়। ১৯৭৩ সালে রণেশ দাশগুপ্ত তাঁর গল্পসমূহের একটি সঙ্কলন সম্পাদনা করেন। তাঁর “ইঁদুর” গল্পটি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়।

সোমেন চন্দ পুরস্কারের প্রবর্তন করে কলকাতার বাংলা অ্যাকাডেমি।

তাঁর অনবদ্য সাহিত্য সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে শিশু তপন, ইঁদুর, সংকেত, বনস্পতি, দাঙ্গা, সত্যবতীর বিদায়, ভালো না লাগার শেষ, উৎসব, মুখোশ ইত্যাদি গল্প। এ পর্যন্ত তাঁর ১টি উপন্যাস, ২৮টি গল্প, ৩টি কবিতা, ২টি নাটক সহ তাঁর লেখা চিঠির সংকলনও প্রকাশিত হয়েছে।

১৯৪২ সালের ৮ মার্চ ঢাকায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী একটি সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি আততায়ীর হামলায় নিহত হন।

সোমেন চন্দ ১৯২০ সালের আজকের দিনে (২৪ মে) বাংলাদেশের নরসিংদি জেলার আশুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.