Take a fresh look at your lifestyle.

জন্মদিনে স্মরণ : রামকিঙ্কর

0

বাবলু ভট্টাচার্য :

‘হারিয়ে গেলে মনের মানুষ
খুঁজলে মেলে না…’

ভরা গলায়, গুরুগম্ভীর রোদে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে গাইতেন চিত্রী-ভাস্কর রামকিঙ্কর বেইজ।

শান্তিনিকেতনে সবার প্রাণের মানুষ, আত্মার আপনজন রামকিঙ্কর। এক রক্তিম প্রাণউচ্ছ্বাস মাখা কর্মনিপুণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। আশ্রমের ফাঁকা আকাশের নিচে, পাখির কাকলিতে গলা মিলিয়ে গাইতেন কখনো লালন, কখনো রবীন্দ্রনাথ।

প্রথমদিকের শান্তিনিকেতনকে যাঁরা দু’হাত দিয়ে ভরিয়ে গেছেন- রামকিঙ্কর তাঁদের একজন।

রামকিঙ্করের পেশাগত জীবনের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয় ১৯৩৪ সালে। তিনি কলাভবনের স্থায়ী শিক্ষক হিসাবে নিয়োজিত হন। ১৯৩৫ এবং ১৯৩৬ সালে অনেকগুলি কাজ তিনি শেষ করেন।

রামকিঙ্করের বাবা চণ্ডীচরণ ও মা সম্পূর্ণা দেবীর কোলে রামকিঙ্করের জন্ম। বড় অভাবী পরিবার, ক্ষৌরকর্মই জীবিকা। মামার বাড়ি বিষ্ণুপুরের কাদাকুলি যাওয়ার পথে, সূত্রধরদের বাস। সেসময়ই অনন্ত সূত্রধর নামের এক মিস্ত্রির কাছে শিল্পী রামকিঙ্করের মূর্তি গড়ার প্রথম পাঠ। সেসময় বিষ্ণুপুরের মন্দিরের কাজও তাঁকে টেনেছে। মন্দিরের পোড়ামাটি আর পাথরের কাজের নকল করেই শিল্পীর পথ চলা শুরু।

লেখাপড়া যতটুকু করেছেন তাতে সাধারণ প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল না। ছবি আঁকা আর মূর্তি গড়াতে ছিল তাঁর আসল মনোযোগ। বাড়িতে লেখাপড়া করতে বসলে লেখাপড়ার কথা ভুলে শুরু করে দিতেন ছবি আঁকা। বাড়ির দেওয়ালে ঝোলানো দেবদেবীর ছবিগুলি দেখে দেখে আঁকতেন প্রায়শই।

আর্থিক অনটনের কারণে কিশোর রামকিঙ্করের হাতে নরুন দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয় দোলতলার এক গাছতলায়; যদি কিছু আয় হয়। কিন্তু ক্ষৌরকর্ম বাদ দিয়ে নরুন দিয়ে গাছের গায়ে অনুবাদ করে চলেন তাঁর মনে তৈরি ছবি।

রামকিঙ্কর বেইজ ১৯০৬ সালের আজকের দিনে (২৫ মে) পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার যুগীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.