Take a fresh look at your lifestyle.

অবশেষে সরিয়ে দেয়া হলো সেই শীর্ষ মাদক কারবারিকে!

ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিতর্কিত সভাপতি

0

প্রতিবেদক :
অবশেষে ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত ‘বিতর্কিত’ সভাপতিকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। পুলিশের শীর্ষ মাদক কারবারির তালিকায় থাকা ১৬ মামলার আসামি শফিকুল ইসলাম ওরফে শফি মেম্বরকে গত ২৮ মে যশোরের চৌগাছা উপজেলার ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছিল। এরপর তার ‘আমলনামা’ আলোচনায় উঠে আসায় উপজেলা আওয়ামী লীগ তার পদ স্থগিত করেছে।

সূত্র জানায়, পাঁচ বছর আগে যশোরের শীর্ষ ১৪ মাদক কারবারিকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল জেলা পুলিশ। সেই তালিকায় চার নম্বরের ছিলেন চৌগাছা উপজেলার বড়কাবিলপুর গ্রামের সোনাই মন্ডলের ছেলে শফি মেম্বর। সেই শফি মেম্বর ওরফে শফিকুল ইসলামকে ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে।

চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ জানান, শফিকুল ইসলাম ওরফে শফি মেম্বরের বিরুদ্ধে মাদকসহ ১৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বেশকিছু মামলায় ওয়ারেন্টও হয়েছিল।

সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২৪ মে যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ১৪ শীর্ষ মাদক কারবারিকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন। ঐ তালিকার ৪ নম্বরে ছিলেন চৌগাছার বড় কাবিলপুর গ্রামের সোনাই মণ্ডলের ছেলে শফি মেম্বার ওরফে শফিকুল ইসলাম। যে ১৪ জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর নাম ও ছবিসহ পুলিশ পোস্টারে মুদ্রণ করে, সেখানে প্রথম ৮ জনকে ধরিয়ে দিতে পারলে প্রত্যেকের জন্য ২৫ হাজার টাকার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। অপর ৬ জনের পুরস্কার ঘোষিত হয় ১০ হাজার টাকা করে। পুলিশের এ পোস্টার জেলা জুড়ে সাটানো হয়। এর পরপরই শফি মেম্বর বিদেশ চলে যান। সম্প্রতি দেশে ফিরে শফি মেম্বর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।

গত ২৮ মে যশোরের চৌগাছার ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে শফিকুল ইসলাম শফি মেম্বরকে সভাপতি ও মাস্টার ফারুক হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে আট সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমান।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা জানান, শীর্ষ মাদক কারবারি শফিকুল ইসলাম ওরফে শফি মেম্বর পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি দেশে এসে শীর্ষ নেতাদের ম্যানেজ করে দলীয় পদ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন।

এ বিষয়ে শফিকুল ইসলাম শফি মেম্বর বলেন, মানুষের নামে মামলা থাকলে দলীয় পদে আসতে পারবে না, এমন কথা কোথাও লেখা নেই। আমার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা হয়েছে, প্রত্যেকটিই ষড়যন্ত্রমূলক। এইসব মামলার ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ইতোমধ্যে দুটিতে খালাস পেয়েছি। বর্তমানে ১৬টি মামলা আছে। আমি বিদেশে অবস্থানকালেও তিনটি মামলায় আসামি হয়েছি। আমি কখনও মাদকসহ আটক হইনি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা ও পুলিশের লোকের সঙ্গে বিরোধ থাকায় আমাকে একের পর এক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ৫ বছর মেম্বর ছিলাম। জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করেছি। তখন অনেকের কাছে শত্রু হয়েছি।

এদিকে, ধরিয়ে দিতে পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত সেই শীর্ষ মাদক কারবারিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনীত করায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের তুলোধুনা করেন নেট ব্যবহারকারীরা। এই সমালোচনার ঝড়ের কারণে অবশেষে উপজেলা আওয়ামী লীগ শফিকুল ইসলাম শফি মেম্বরকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী জানান, সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে নাম প্রস্তাবের পর সমর্থনের ভিত্তিতে শফিকুল ইসলাম শফি মেম্বর সভাপতি মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু তখন আমরা তার ‘আমলনামা’ জানতাম না। সমর্থনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সাংগঠনিক কারণে তাকে সভাপতি মনোনীত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তার ‘আমলনামা’ আমলে বিবেচনায় নিয়ে সভাপতি পদ স্থগিত করা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.