যশোরে হত্যা ও মাদক মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদন্ড
প্রতিবেদক :
যশোরে হত্যা ও মাদকের দুটি মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। আজ মঙ্গলবার (৩১ মে) যশোরের পৃথক দুটি আদালত দুই আসামির এ রায় দেন। একইসাথে একজনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ১৩ জুলাই সকালে বেনাপোল পুটখালী রহমতপুর এলাকার একটি কবরস্থান থেকে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চালক হাবিবুর রহমান হবির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হাবিবুর পাটবাড়ি গ্রামের সাজ্জাদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে বেনাপাল পোর্ট থানায় মামলা করেন হাবিবুরের ভাই আনোয়ার হোসেন।
মামলায় উল্লেখ করেন, ১২ জুলাই রাত ১০টার পর বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্তে উঠে আসে, হবির পালক সন্তান বেনাপোল পাটবাড়ি গ্রামের আবুল কালামের ছেলে রানা ও রানার শ্যালক পূর্বপরিকল্পিতভাবে হবিকে খুন করে। রানা আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে জানায়, রানার স্ত্রীকে হাবিবুর রহমান হবি প্রায় কুপ্রস্তাব দিতেন। রাজি না হওয়ায় ক্ষতির চেষ্টা করতে থাকেন। সর্বশেষ ১২ জুলাই সকালে রানা বাড়িতে না থাকার সুযোগে রানার স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে রানা বাড়িতে এসে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এর জেরেই রানা ও জসিম পরিকল্পিতভাবে হবিকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই ওমর শরীফ ২০০৯ সালের ৩১ জানুয়ারি ওই দুজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
এ মামলায় স্পেশাল জজ মোহাম্মদ সামছুল হক রানাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন। অপর আসামি জসিমকে খালাশ প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় স্পেশাল পিপি সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা উপস্থিত ছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত রানা পলাতক রয়েছেন।
অপর মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৭টায় ডিবি পুলিশ মণিরামপুর অবস্থানকালে জানতে পারেন যোগীপোল গ্রামে একব্যক্তি হেরোইন নিয়ে অবস্থান করছেন। ডিবি পুলিশ তাৎক্ষণিক ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে মণিরামপুর উপজেলার যোগীপোল গ্রামের মৃত নওয়াব আলীর ছেলে শহিদকে আটক করে। এসময় তার দেহ তল্লাশি করে হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ থেকে ৫শ’ গ্রাম হোরোইন উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মণিরামপুর থানায় মামলা করেন ডিবির এসআই সেকেন্দার আবু জাফর। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর ডিবির এসআই আবুল খায়ের মোল্লা আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
মঙ্গলবার এ মামলার রায়ে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবু বকর সিদ্দিকি আসামি শহিদকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৫ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। এসময় অতিরিক্ত পিপি নজরুল ইসলাম বকুল উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।