Take a fresh look at your lifestyle.

শুভ জন্মদিন জনি ডেপ

0

বাবলু ভট্টাচার্য :

পৃথিবী থেকে অনেক অনেক দূরে হওয়ার কারণে আকাশের তারার আলো যেমন ক্ষীণ হয়ে পৌঁছায়, ঠিক সেভাবেই তিন-তিনবার মনোনয়ন পেয়েও অস্কার নামক গ্রহটিকে আলোকিত করতে পারেননি এই জনপ্রিয় অভিনেতা।

তিনি আমাদের অতি পরিচিত জনি ডেপ।

আসল নাম ছাড়াও তিনি ভক্তদের কাছে ‘ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো’ হিসেবেই বহুল পরিচিত। এছাড়াও তার আরো একটি নাম রয়েছে, সেটা হচ্ছে ‘মি. স্টেঞ্চ’। অবসরে ভ্রমণরত অবস্থায় জনপ্রিয় ব্যক্তিরা হোটেলে ওঠার সময় পাপারাজ্জি আর পাগল ভক্তদের এড়াতে বিশেষ ছদ্মনাম ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু জনি ডেপ বিশ্বাসযোগ্য কোনো ছদ্মনামের পরিবর্তে সবসময় ‘মি. স্টেঞ্চ’ নামটি ব্যবহার করেন।

চার ভাইবোনের মধ্যে জনি ডেপ সবার ছোট। তার বাবা জন ক্রিস্টোফার ডেপ, একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং মা স্যু পালমার ছিলেন একজন ওয়েট্রেস।

তার শৈশব খুব একটা সুখময় ছিল না। প্রতিনিয়ত মা-বাবার ঝগড়া দেখতে দেখতে অসহ্য হয়ে মাত্র বারো বছর বয়সেই তিনি সিগারেট আর বিভিন্ন ড্রাগ সেবন করতে শুরু করেন। সারাদিন নিজেদের গ্যারেজের দরজায় তালা মেরে সেখানে পড়ে থাকতেন এবং গিটার বাজাতেন। এক সময় নিজের শরীরের বিভিন্ন অংশে কাটাকুটি শুরু করেন– যার কিছু চিহ্ন তার শরীরে আজও রয়ে গেছে। তার পনের বছর বয়সের সময় তার মা-বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

জনপ্রিয়তার তুলনায় তার পুরস্কারের ঝুলি খুব হালকাই বলা যায়। তার বেশ কিছু চরিত্র সমালোচকদের কাছে ব্যাপক- ভাবে প্রশংসিত হওয়ার পরেও তিনি কখনও অস্কার জিততে পারেননি। ‘সুয়েনি টড : দ্য ডিমন বার্বার অফ ফ্লিট স্ট্রিট’ সিনেমাতে মূল চরিত্রে অভিনয় করে তিনি জিতেছেন গোল্ডেন গ্লোবস। স্ক্রিন অ্যাক্টর্স গিল্ড পুরস্কার জিতেছেন ‘পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান : দ্য কার্স অফ দ্য ব্ল্যাক পার্ল’ চলচ্চিত্রের ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো চরিত্রের জন্য।

যুক্তরাষ্ট্রের পিপল ম্যাগাজিন তাকে ২০০৩ ও ২০০৯ সালে সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরুষ হিসেবে নির্বাচিত করে।

তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো : দ্য পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান সিরিজ, এডওয়ার্ড সিজরহ্যান্ডস, ফাইন্ডিং নেভারল্যান্ড, পাবলিক এনিমিস, ব্ল্যাক ম্যাস, ট্রানসেন্ডেন্স, সুইনি টড : দ্য ডিমন বার্বার অফ ফ্লিট স্ট্রিট, স্লিপি হলো, ব্লো, দ্য নাইন্থ গেইট, ডার্ক শ্যাডো দ্য লোন রেঞ্জার, এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড, চার্লি এন্ড দ্য চকোলেট ফ্যাক্টরি, র‍্যাংগো, দ্য টুরিস্ট, দ্য রাম ডায়েরি, সিক্রেট উইন্ডো, ডনি ব্রাস্কো এবং হোয়াটস ইটিং গিলবার্ট গ্রেপ।

জনিকে অভিনয়ে নিয়ে আসার জন্যে ধন্যবাদ প্রাপ্য নিকোলাস কেইজের। লস অ্যাঞ্জেলেসে আসার পরের বছর লরি তার প্রাক্তন প্রেমিক নিকোলাসের সাথে জনির পরিচয় করিয়ে দেন। জনির প্রতিভা দেখে নিকোলাস তাকে অভিনয় শুরু করার পরামর্শ দেন এবং হলিউডের এক এজেন্টের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।

১৯৮৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘এ নাইটমেয়ার অফ এল্ম স্ট্রিটে’ তিনি প্রথমবারের মতো মৌলিক কোনো চরিত্রে অভিনয় করেন। তবে তার পরিচিতি বৃদ্ধি পায় ‘২১ জাম্প স্ট্রিট’ টেলিভিশন ড্রামার মাধ্যমে। পরে ১৯৯০ সালে ‘এডওয়ার্ড সিজরহ্যান্ডস’ চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে তিনি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন।

তিনি হলিউডের সবচেয়ে দামি অভিনেতাদের একজন। ‘দ্য পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান সিরিজ’ এত বেশি সফল হয়েছিল যে, ২০১১ সালে আরেকটি সিক্যুয়েল করার জন্য প্রডিউসার জনিকে ৫০ মিলিয়ন ডলার অফার করেন।

তার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলো যুক্তরাজ্যে আয় করেছে ৩.১ বিলিয়ন ডলার এবং সারা বিশ্বে প্রায় ৭.৬ বিলিয়ন ডলার। তার মোট আয় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার। ২০১২ সালে ‘সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা’ হিসেবে গিনেজ বুকে তার নাম উঠে যায়।

জনি ডেপ ১৯৬৩ সালের আজকের দিনে (৯ জুন) উত্তর আমেরিকার কেনটাকি প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন।

লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.