Take a fresh look at your lifestyle.

জন্মদিনে স্মরণঃ গণেশ পাইন

0
বাবলু ভট্টাচার্য : 
কবিরাজ রো থেকে বিধান সরণির মন্দার মল্লিকের স্টুডিও পর্যন্ত মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের জীবন ছিল তাঁর আশৈশব পড়শি। সে অঞ্চল ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ধর্মতলার আশপাশেও। দেখেছেন দুস্থ জীর্ণ অসহায় মানুষের জীবনধারণ। বস্তিতে, ফুটপাথে, মেডিকেলে— আকাশের নিচে পৃথিবীতে। প্রতিকারহীন বঞ্চনা আর অন্তহীন প্রতারণা যেন তাদের নিয়তি। তাদের জীবনচর্যার প্রান্তিকতাই কি তাঁর ছবিতে এত অন্ধকার মেলে ধরে? তাদের প্রাত্যহিকে নিহিত স্বাভাবিক কিন্তু অস্পষ্ট সংগ্রামই কি তাঁর ছবিতে একাধিক অনির্দিষ্ট আলোর উৎসব হয়ে ওঠে? লোকজ উপাদানই তাঁর পুরাণভাবনার স্পর্শে ধ্রুপদী রূপ পায়?
গণেশ পাইন ভারতবর্ষের বিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের মধ্যে অন্যতম একজন। শৈশবে তিনি ঠাকুরমার কাছে পৌরানিক, শ্রুতি গল্প, রূপকথা শুনতে শুনতে  বড় হয়ে উঠেছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি ভবিষ্যতে একজন চিত্রশিল্পী হবার মনস্থির করেন এবং কলকাতার সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৫৯ সালে তিনি চিত্রশিল্প বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। এর পরেই চাকরিতে যোগ না দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
শুরু থেকেই অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রভাব পড়ে গণেশ পাইনের কাজে। মূলত রঙ তুলিতেই মাধুরী মেশান তিনি। পাশ্চাত্যের শিল্পীদের মধ্যে মূলতঃ রেমব্রান্টের শ্যাডো এবং লাইটের মিশ্রণে চিত্রকলা তাঁর উপর প্রভাব বিস্তার করে।
গণেশ পাইন ভারতীয় চিত্রশিল্পকে নতুন মাত্রা দেন। শুধু দেশ নয়, বিদেশেও সমাদৃত হয়েছেন তাঁর গুণের জন্যে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় দেশ-বিদেশে তিনি অনেক পুরস্কার লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, জার্মানীসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক চিত্র প্রদর্শনীতে তিনি অংশ নেন। দ্বিমাত্রিক ছবি আঁকাতে অনন্য ছিলেন গণেশ পাইন।
১২ মার্চ ২০১৩ গণেশ পাইন ৭৫ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
গণেশ পাইন ১৯৩৭ সালের আজকের দিনে (১১ জুন) কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।
লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.