Take a fresh look at your lifestyle.

জন্মদিনে স্মরণ : ভাষা শহীদ আবুল বরকত

0

বাবলু ভট্টাচার্য :
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার অধিকার রক্ষা করতে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন এ দেশের বীর সন্তানরা। মাতৃভাষার মর্যাদার জন্য যে ক`জন ভাষা সৈনিক প্রাণ দিয়েছেন তাদের মধ্যে আবুল বরকত অন্যতম।

আবুল বরকত ছিলেন অস্বাভাবিক লম্বা। মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার বাবলা গ্রামে তাঁদের পরিবারটির নামই ছিল ‘টল ফ্যামিলি’। তাঁর বাবা শামসুজ্জোহাও ভীষণ লম্বা। এত লম্বা যে বহু দরজায় ঢোকার সময় তাঁর মাথা চৌকাঠে আটকে যায়। তিনি মাথা নিচু করে দরজা পার হন। সেই টল ফ্যামিলির ছেলে আবুল বরকতের পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। প্রাথমিক পড়াশুনা শেষে তিনি পার্শ্ববর্তী গ্রাম তালিবপুর ইংলিশ হাইস্কুলে ভর্তি হন।

১৯৪৮ সালে তিনি বাংলাদেশে চলে আসেন। ঢাকার পুরানা পল্টনে ‘বিষ্ণুপ্রিয়া’ ভবনে তার মামা আব্দুল মালেক সাহেবের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। ওই বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স কোর্সে ভর্তি হন। ১৯৫১ সালে তিনি অনার্স পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেনীতে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন এবং এমএ শেষ পর্বে ভর্তি হন।

১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকা ছিল উত্তাল। ভাষা আন্দোলনের ঢেউ আবুল বরকতকে আলোড়িত করে। তিনি ভাষা আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। অধিকার আদায়ের দাবিতে শত শত বিদ্রোহী কন্ঠে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ এই দাবিতে আন্দোলোন তীব্র হয়ে উঠে। পুলিশের সঙ্গে ছাত্র জনতার সংঘর্ষ হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ এবং গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে মারাত্মকভাবে আহত হয় অনেকে।

তলপেটে গুলি লেগেছিল বরকতের। দু’তিন জন ছুটে এসে সুঠামদেহী বরকতকে কাঁধে তুলে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের দিকে দৌড়াতে থাকেন। ডাক্তাররা তাকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি ওয়ার্ডে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আবুল বরকত।

ভাষা শহীদ আবুল বরকত ১৯২৭ সালের আজকের দিনে (১৩ জুন) পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর থানার বাবলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
লেখক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

Leave A Reply

Your email address will not be published.