Take a fresh look at your lifestyle.

বিএনপির মানুয়ার নির্দেশেই যশোর যুবদল নেতা ধোনিকে হত্যা

0

প্রতিবেদক :

যশোর যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধোনিকে নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমেদ মানুয়ার নির্দেশেই হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ

পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনের আগে মামলার পাঁচ নম্বর আসামি আল আমিনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানা গিয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে তাকেসহ আরও দুইজনকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়েছে।

তারা হলেন, এক নম্বর আসামি শহরের রেলরোড এলাকার ফরিদ মুন্সির ছেলে ২৫ বছরের রায়হান ও শংকরপুর এলাকার বাবু মীরের ছেলে ২০ বছরের ইছা মীর।

এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত গাছি দা, চায়নিজ কুড়াল ও বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়।

হত্যা আধিপত্য বিস্তারে

মূলত বিএনপির রাজনীতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় বিএনপি নেতা শামীম আহম্মেদ মানুয়া ও বদিউজ্জামান ধোনির মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব ছিল। ওই দ্বন্দ্বের জেরে মানুয়ার মেয়ের জামাই ইয়াসিন হত্যা মামলায় ধোনিকে আসামি করা হয়।

‘সর্বোপরি এলাকায় দলীয় কোন্দল আর রাজনীতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে ধোনিকে হত্যা করা হয়। মানুয়ার নির্দেশে তার ভাগনে রায়হান হত্যা করে।’

মঙ্গলবার দুপুরের দিকে যশোরের নাজির শংকরপুরে আকবরের মোড় এলাকায় ধোনিকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় বুধবার রাতে পৌর বিএনপির নেতাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান মণি। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ধোনিকে হত্যার পর মানুয়ার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন তার স্বজনরাও। তাদের অভিযোগ, পূর্ববিরোধের কারণে ধোনিকে লোক দিয়ে খুন করিয়েছেন শামীম আহমেদ মানুয়া নামে সেই বিএনপি নেতা। তিনি পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক। তার সঙ্গে ধোনির বিরোধের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন তিনি।

ধোনির শ্যালক তপু রহমান বলেন, ‘এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শামীম আহমেদ মানুয়া ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তাকে ধরতে পারলেই এই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হবে।’

হত্যা মামলা ধোনির বিরুদ্ধেও

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, ধোনির বিরুদ্ধে হত্যা, সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে ১২টি মামলা রয়েছে। যুবলীগ কর্মী ইয়াসিন আরাফাত হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বেজপাড়া ব্রাদার্স ক্লাবের সামনে হত্যার শিকার হন ইয়াসিন আরাফাত। এই মামলায় মাসখানেক আগে ধোনি জেল থেকে বের হন।

মানুয়া নামে বিএনপির যে নেতার সঙ্গে ধোনির বিরোধ ছিল, তিনি ইয়াসিন আরাফাতের শ্বশুর।

প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় হত্যাকাণ্ড

হত্যার তিন প্রত্যক্ষদর্শী ক্লিনার আব্দুল ওয়াদুদ, স্থানীয় স-মিল শ্রমিক শাহজাহান শেখ ও রাজমিস্ত্রি শ্রমিক ফয়সাল হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, মঙ্গলবার ১১টার একটু পর বাসার সামনে শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ে ইউসুফের চা দোকান থেকে চা পান করেন ধোনি। পরে স্থানীয় শান্তি কমিটির অফিসে বসেছিলেন তিনি।

এ সময় একটি রিকশায় করে এসে ধোনিকে কুপিয়ে হত্যা করেন ২০ থেকে ২২ বছরের তিন যুবক। এতে চার থেকে পাঁচ মিনিট সময় নেন তারা।

সেই তিনজনের মধ্যে একজন অফিসের ভেতর থেকে ধোনিকে তার জামার কলার ধরে বের করে নিয়ে আসেন। এরপর সড়কের মধ্যে তার ডান পায়ে রামদা দিয়ে কোপ দেন।

ধোনিকে টানতে টানতে তার সামনে বৌরানী ফার্মেসির সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি পড়ে যান। সেখানে দুই যুবক তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। একজন ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। এই হত্যায় তিন যুবক থাকলেও গেঞ্জি ও টি-শার্ট পরা একজন পাহারা দিচ্ছিলেন।

এ সময় এগিয়ে আসলেও তাকে বাঁচাতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরা। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.