Take a fresh look at your lifestyle.

যশোরে তিন খুন প্রসঙ্গে নিহত বিথির পিতা যা জানালেন

0

প্রতিবেদক :

যশোরের অভয়নগরে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার পর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণকারী পাষণ্ড স্বামী জহিরুল ইসলাম বাবুর সাথে বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্যকলহ চলে আসছিল। আজ শুক্রবার (১৫ জুলাই) হত্যাকাণ্ডের দিনও শ্বশুরবাড়িতে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। হত্যার পর জহিরুল ইসলাম বাবুর পিতা সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার মশিউর রহমান বিশ্বাস নিহত বিথির পিতার কাছে ফোন করে নিজের ছেলেকে আটক করে পুলিশে দেয়ার খবর জানান।

নিহত সাবিনা ইয়াসমিন বিথির পিতা মুজিবর রহমান জানান, একমাস আগে আমার মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বিথি ও তার দুই মেয়ে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। শুক্রবার আমার জামাই জহিরুল ইসলাম বাবু আমার মেয়ে ও তার দুই কন্যাকে নিতে আসে। সকাল সাড়ে ১১টার সময় আমাদের বাড়ি থেকে তারা রওনা দেয়। এরপর আমার বিয়াই (জামাই জহিরুলের পিতা) ফোন করে বলে আমার ছেলেকে আটক করে পুলিশে দিয়েছি আপনারা চলে আসেন। এরপর জানতে পারি আমার মেয়ে ও তার দুই কন্যাকে জামাই খুন করেছে।

তিনি আরও জানান, ১২-১৩ বছর আগে যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মুজিবর রহমানের ছেলে জহিরুল ইসলাম বাবুর সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেতেই থাকতো। শুক্রবারও আমার বাড়িতে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর তারা আমার বাড়ি থেকে রওনা দেয়।

বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই কামরুজ্জামান বলেছেন, বড় ভাই মঞ্জুরুল ইসলামের খবর পেয়ে বাড়ি থেকে শুক্রবার বিকেলে জহিরুল ইসলাম বাবুকে আটক করা হয়। আটক বাবু প্রাথমিকভাবে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। পরে এদিন সন্ধ্যায় অভয়নগর থানার এসআই মাসুদ রানা এসে বসুন্দিয়া ক্যাম্প থেকে বাবুকে নিয়ে যান। এরপর রাতে অভয়নগর থানা পুলিশ লাশ তিনটি উদ্ধার করেছে।

অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম শামীম হাসান বলেন, জহিরুল ইসলাম বাবু তার স্ত্রী ও দুই কন্যাকে হত্যা করেছে। নিহত তিনজনের লাশ উপজেলার চাপাতলা নগরঘাটের ঘাসবন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কেন বা কী কারণে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তা এ মুহুর্তে বলতে পারছিনা। এই ঘটনার পর ঘাতক নিজে পুলিশের কাছে আসে আত্মসমর্পন করেছে।

যশোর পুলিশের মুখপাত্র ডিবি ওসি রূপন কুমার সরকার জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পারিবারিক কলহের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আসামি বাবু শ্বশুরবাড়ি অভয়নগরের সিদ্দিপাশা হতে ফেরার পথে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। এরপর কোতোয়ালি মডেল থানার অধীনে বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে আত্মসমর্পণ করে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে উপজেলার চেঙ্গুটিয়া গ্রামের শালবাগান এলাকায় আব্দুস সবুরের বাড়ির পিছনে কলাবাগানে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার চাপাতলা নগরঘাটের একটি ঘাসবন থেকে  লাশ তিনটি  উদ্ধার করে। নিহতরা হলেন, বাবুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বিথি (২৮), মেয়ে সুমাইয়া খাতুন (৯) ও সাফিয়া খাতুন (২)।

এদিকে, আটক বাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, শ্বশুরবাড়ির সাথে তার বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি লোকজনও জানে। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি অভয়নগরের কলাতলা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে আসছিলেন। চাপাতলা গ্রামে আব্দুস সবুরের বাড়ির পিছনে কলাবাগানের কাছে এসে প্রথমে স্ত্রী বিথিকে এবং পরে বড় মেয়ে সুমাইয়া খাতুন এবং সব শেষে ছোট মেয়ে সাফিয়া খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। লাশ তিনটি সেখানে ফেলে বাড়িতে এসে সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজনকে ঘটনা জানান বাবু। এসময় তার বড়ভাই মঞ্জুরুল ইসলাম বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ বাড়িতে গেলে বাবু পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.