Take a fresh look at your lifestyle.

বাঘারপাড়া পৌর মেয়র বাচ্চুর বিরুদ্ধে ৭ কাউন্সিলরের সংবাদ সম্মেলন

0

প্রতিবেদক :
যশোরের বাঘারপাড়া পৌরসভার মেয়র কামরুজ্জামান বাচ্চুর বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করছেন তার পৌরসভার ৭ কাউন্সিলর। একইসঙ্গে মেয়র নিজের আত্মীয়-স্বজনদের বাইরে কাউকে ঠিকাদারি লাইসেন্স নবায়ন করছেন না। এছাড়া ঠিকাদারি কাজের ৫০ শতাংশ কমিশন দেওয়ার গোপন চুক্তিতে কয়েকজন ঠিকাদারের মাধ্যমে পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সমস্ত কাজ করানো হচ্ছে। এমন ১৪টি বিষয়ে অভিযোগ তুলে পৌরসভার সাতজন কাউন্সিলর আজ রোববার (১৭ জুলাই) বিকেলে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বাঘারপাড়া পৌরসভার মেয়র কামরুজ্জামানকে বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছেন। একইসাথে সম্মেলন থেকে মেয়রের সব অনিয়মের সহযোগি হিসেবে প্যানেল মেয়র শরীফুল ইসলামের বিরুদ্ধেও অনাস্থা আনা হয়েছে। তবে পৌর মেয়র কামরুজ্জামান অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বাঘারপাড়া পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে পৌরসভার আইইউআইডিপি প্রকল্পের প্রায় ১০ কোটি টাকার রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হচ্ছে না। পৌরসভায় ৪০টি ঠিকাদারি লাইসেন্স ইস্যু করা আছে। এরমধ্যে তার আত্মীয়স্বজনের ১০-১২টি লাইসেন্স নবায়ন করা হয়েছে। তারাই পৌরসভার সব কাজের দরপত্রে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু মেয়রের পক্ষের লোকজন না বলে অন্যদের লাইসেন্স নবায়ন করা হচ্ছে না। ফলে মেয়রের মতের বাইরে কেউ দরপত্রে অংশ নিতে পারছেন না।

সম্মেলনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে পৌরসভা সচিবের পদ শুন্য রয়েছে। প্রকৌশলীকে সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অস্থায়ী কর্মচারি টিউবয়েলের মিস্ত্রি রবিউল ইসলামকে দিয়ে সহকারি হিসাবরক্ষকের কাজ করা হচ্ছে। তাকে দিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে বড় অংকের টাকা আত্মসাৎ করছেন মেয়র কামরুজ্জামান। কোনো কাউন্সিলরকে বিল ভাউচার দেখতে দেওয়া হয় না। মাসিক সভার রেজুলেশন পর্যন্ত কাউন্সিলরদের দেওয়া হয় না কিংবা পরিবর্তী সভায়ও গত সভার রেজুলেশন পাঠ করার নিয়ম থাকলেও সেটা করা হয় না। মেয়র মাসে দুই একদিন অফিস করেন। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে তিনি ঘন্টার পরে ঘন্টা বসিয়ে রাখেন। এছাড়া কাউন্সিলরদের সাথে গালিগালাজ করে কথা বলেন। পৌরসভার কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্যে কাউন্সিলররা স্থানীয় সরকারি বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম বলেন, আজকের পর থেকে আমরা সংখ্যাগরিস্ট পৌর কাউন্সিলর মেয়রকে বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছি। আজ থেকে পৌরসভার কোনো কার্যক্রমে আমরা অংশ নেব না। একইসাথে মেয়রের সব অবৈধ কাজের সহযোগি হিসেবে প্যানেল মেয়র শরীফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানাচ্ছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র কামরুজ্জামান বলেন, পৌরসভার সব অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি স্থানীয় সরকারি বিভাগের কর্মকর্তারা নিয়মিত পরিদর্শন করেন। গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ঠিকাদারি লাইসেন্স নবায়ন করা হয়। সেখানে আমার আত্মীয়স্বজন বলে কোনো কথা না। এছাড়া কাজের বিল ভাউচার সংশ্লিষ্ট অডিট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত অডিট করে।’ অনিয়ম-দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই বলে তিনি দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফয়সাল আহম্মেদ, দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহিন আলম, পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওলিয়ার রহমান, সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সর্দার শহিদুল ইসলাম, ১, ২, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর সম্পা রানী সরকার, ৪, ৫, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর নমিতা শর্মা এবং ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর তাসলিমা খাতুন।

প্রসঙ্গত, কামরুজ্জামান বাচ্চু যশোরের বাঘারপাড়া পৌরসভার মেয়র ছাড়াও তিনি পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক। তিনি টানা দ্বিতীয় মেয়াদে পৌরসভার মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছেন। সর্বশেষ গতবছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ৪ হাজার ২৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.