Take a fresh look at your lifestyle.

যশোরে গতবছরের তুলনায় বৃষ্টিপাত এক-চতুর্থাংশ

0

প্রতিবেদক :

তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টিতে অতিষ্ঠ জনজীবন। পানির অভাবে মাটি ফেটে চৌচির। এদিকে রোপণ না করতে পেরে বিপাকে আমন চাষিরা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এ বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এক-চতুর্থাংশেরও কম। বিরাজ করছে প্রখর খরতাপ।

যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আষাঢ় মাস বিদায় নিয়ে শ্রাবণ শুরু হলেও যশোরে কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ১ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত দেড় মাসে যশোরে মোট ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অথচ গত বছর এই সময়ে (১জুন থেকে ১৫ জুলাই) ৪৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল। সেই তুলনায় এবার জেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এক-চতুর্থাংশেরও কম।

বৃষ্টিহীন এই দিনগুলোতে প্রতিদিনই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার যশোরে (১৫ জুলাই) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি এবং বুধবার রেকর্ড করা হয় সর্বোচ্চ ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির আশেপাশে থাকলেও আদ্রতা বেশি থাকায় গরমও বেশি অনুভূত হচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ ছিল ৭৭ শতাংশ, দুপুর ১২টায় ছিল ৬০ শতাংশ। গ্রীষ্মে দিনে এই আদ্রতার পরিমাণ অধিকাংশ সময় ৫০ শতাংশের নিচে থাকে।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান মোল্লার সঙ্গে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণেই পরিবেশ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে। যেখানে শীত নেই, সেখানে শীত পড়ছে, যেখানে গরম নেই, সেখানে গরম পড়ছে। বর্ষাকালে বৃষ্টি হচ্ছে না, শীতকালে শীত পড়ছে না। আবার গরমকালে মাত্রাতিরিক্ত গরম পড়ছে।

অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান মোল্লা উল্লেখ করেন, মূলত মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের কারণে ওজন স্তরের ঘনত্ব কমছে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি এই ওজন স্তরের আটকে যেত। এখন এই অতিবেগুনি রশ্মি ওজন স্তর ভেদ করে পৃথিবীতে চলে আসছে। ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। মূলত পরিবেশের এই পরিস্থিতি ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট চেঞ্জের ইমপ্যক্ট’। আর আমরা এর শিকার। বৈশ্বিকভাবে সিএফসি গ্যাস, কার্বন নিঃসরণ কমানোর পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব।

এদিকে গরমের কারণে শ্রমজীবী মানুষেরা বিপাকে পড়ছেন। শহরের রেলস্টেশন এলাকার ভ্যান চালক লোকমান মিয়া বলেন, গরমে মালামাল আনা নেওয়ায় খুব কষ্ট হচ্ছে। অল্পতেই ঘেমে যাচ্ছি। শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। আষাঢ় শ্রাবণে এত গরম পড়তে দেখিনি।

বিপাকে পড়েছেন আমন চাষিরাও। বৃষ্টিপাত না থাকায় আমন আবাদ নিয়েও তাদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ সেচ দিয়েই বীজতলা তৈরি করেছেন।

চাঁচড়া এলাকার কৃষক শামীম হোসেন জানালেন, বোরো আবাদে লাভ হয়নি। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সেচ দিয়েই আমনের বীজতলা তৈরি করেছেন। চারা রোপণের সময় এগিয়ে আসলেও বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষেত প্রস্তুত করতে পারছেন না। সেচ দিয়ে আমন চাষ করতে গেলে লোকসানের বোঝা আরও বাড়বে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.