যশোরের ছাত্রলীগ নেতার ফেনসিডিল সেবনের ভিডিও ভাইরাল
প্রতিবেদক :
যশোর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাজু রানার মাদক সেবনের ভিডিও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে তাকে একটি বাড়ির সিঁড়ির উপরে বসে ফেনসিডিল সেবন করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওতে ছাত্রলীগনেতা রাজু রানা ছাড়াও আরও কজনা উপস্থিতি থাকলেও তাদের মুখ দেখা যায়নি। তবে সবাই জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। ১ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ফেনসিডিল সেবনের ভিডিওটি আজ বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুর থেকে ফেসবুকে প্রকাশের পর সমালোচনার ঝড় ওঠেছে। এ নিয়ে যশোর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে নিন্দা এবং সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে ভিডিওটি মাদকবিরোধী তিন পর্বের একটি নাটকের অংশ দাবি করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রাজু রানা।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম রয়েল তার ফেসবুক আইডিতে ফেনসিডিল সেবনের ভিডিওটি আপলোড দেন। ১ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ঔ ভিডিওটি মুর্হতের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। তার স্ট্যাটাসে লেখেন ‘রাজু রানা (সহ-সভাপতি যশোর জেলা ছাত্রলীগ) এই যদি হয় ছাত্রনেতার চরিত্র! অবিলম্বে মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীর হাত থেকে যশোর জেলা ছাত্রলীগ কলঙ্কমুক্ত করা হোক। এবং তাদের গড-ফাদারদের চিহ্নিত করা হোক। রাজু রানা (পিতা-বজলুর রহমান পেশা ইজিবাইক চালক) গ্রাম-ঝুমঝুমপুর, চাঁনদের মোড়।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, নেশার ঘোরে বারবার ফেনসিডিলের বোতল ঘোরাচ্ছে ছাত্রলীগ নেতা রাজু রানা। ভিডিওর বাইরে থাকা একযুবককে বলতে শোনা যায় ৮৮ নাম্বার ঠিক আছে। আরেকটা নিয়ে আসেন। বোতলটি নিয়ে আসলে যুবকটি বলেন ওরে বাবা এটাই তো লাগবে। এরপর একটি ফেনসিডিলের বোতল রাজু রানাকে অনেকবার ঘোরাতে দেখা যায়। মোবাইলে ধারণকরা ভিডিওটি যিনি ধারণ করছিলেন তিনি একটি মুখখোলা ফেনসিডিলের বোতল রাজু রানার কাছে এগিয়ে দেন। এর র রাজু রানাকে ফেনসিডিল সেবন করতে দেখা যায়। সেটি শেষ করে আরেকজনকে আরেক বোতল আনতে নির্দেশ দেন রাজু রানা। এরপর আরেকটি বোতল সেবন করতে দেখা যায়। রাজু রানার সঙ্গে থাকা আরও কিছু যুবককে টাকা গুনতে শোনা যায়। এ সময় বলতে শোনা যায়, ‘আর টাকা নেই। এগুলো তাই বাকি খেলাম। এগুলো রাখেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও নিজের নিশ্চিত করে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাজু রানা বলেন, ‘আমরা মাদকবিরোধী তিন পর্বের একটি নাটক নির্মাণ করেছি। ভিডিওটি ঐ নাটকের একটি পর্বের অংশ। নাটকটি পাবলিশ হওয়ার আগেই এডিটিং করে কম্পিউটার দোকান থেকে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে কেউ এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে ভিডিও কোথায় কবে কখন ধারণ করা সেটা তিনি বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস, সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ ফোন ধরেননি।
যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মাদক সেবনের ভিডিওটি আমি দেখেছি। তবে উনি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কিনা সেটা বলতে পারব না। ভিডিওটি দেখছি ঐ পর্যন্তই। কারণ মাদকসহ কাউকে গ্রেফতার করতে না পারলে কারও উপর আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারি না। তারপরও আমি খোঁজখবর রাখছি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।