Take a fresh look at your lifestyle.

ভৈরব নদ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে মাঠে যশোরের প্রশাসন

0

প্রতিবেদক :
যশোরে ভৈরব নদ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বিকেলে ভৈরব নদে সরেজমিন অভিযানে যায় এ সংক্রান্ত উপকমিটি। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও যশোর ভৈরব নদে স্যুয়ারেজ লাইন মনিটরিং ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ উপকমিটির আহ্বায়ক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন।

ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে শেখহাটি বাবলাতলা শফিয়ার রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঘাট থেকে শুরু হয়ে নীলগঞ্জ ব্রিজে গিয়ে শেষ হয়। ওইসময় নৌকা থেকে হ্যান্ডমাইকের মাধ্যমে দু’পাড়ের অধিবাসীদের নদে ময়লা আবর্জনা না ফেলা এবং সরাসরি স্যুয়ারেজ লাইন ও সেফটিক ট্যাংক স্থাপন না করার নির্দেশনা দেয়া হয়। প্রাথমিক এ সতর্কবার্তা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা করা হবে বলে তিনি নির্দেশনা দেন।

এ সময় তার সাথে ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাশ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সায়েদুর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী শরীফ রেজা প্রমুখ।

দুইপাশের অনেক প্রতিষ্ঠান বাসাবাড়ি থেকে নির্গত পয়ঃবর্জ্যসহ অন্যান্য বর্জ্য সরাসরি নদে ফেলায় ভৈরব নদের পানি দূষিত হচ্ছে, ছবি : কপোতাক্ষ

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান বলেন, ‘ভৈরব নদের দু’পাশের অনেক প্রতিষ্ঠান বাসাবাড়ি থেকে নির্গত পয়ঃবর্জ্যসহ অন্যান্য বর্জ্য সরাসরি নদে ফেলার কারণে ভৈরব নদের পানি দূষিত হচ্ছে এবং নদ ভরাট তরান্বিত হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির এহেন কার্যক্রম প্রতিবেশ ব্যবস্থার উপর বড় হুমকি। নদ-নদীতে বর্জ্য ফেলার মাধ্যমে নদ-নদী ভরাট করা বা নদনদী ভরাট তরান্বিত করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানের নির্দেশনায় যশোর জেলা শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদের পানি দূষণ ও নদ ভরাট বন্ধে ভৈরব নদে কোনোপ্রকার বর্জ্য না ফেলার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে। নির্দেশনা প্রতিপালন করা না হলে ওইসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত ভৈরব নদ খনন কাজ (ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন) প্রকল্প প্রায় শেষের পথে। এখন মাটি অপসারণ ও নদের দুইপাড়ের সৌন্দর্য্যবৃদ্ধির কাজ চলছে। রাজারহাট ব্রিজ অবমুক্ত হলেই আগামী দু’মাসের মধ্যে যশোর শহর এলাকার এ নদেও জোয়ার-ভাটা দেখা যাবে। তাই কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বা বাসাবাড়ির কারণে ভৈরব নদের পানি দূষিত হয় এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে তিনি অনুরোধ করেন। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারও দেন তিনি।

দুইপাশের অনেক প্রতিষ্ঠান বাসাবাড়ি থেকে নির্গত পয়ঃবর্জ্যসহ অন্যান্য বর্জ্য সরাসরি নদে ফেলায় ভৈরব নদের পানি দূষিত হচ্ছে, ছবি : কপোতাক্ষ

প্রসঙ্গত, ১৭ জুলাই জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় ১০৬টি দূষণকারী প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির তালিকা প্রকাশ করে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড। তালিকাতে ভৈরব নদে সরাসরি সেপটিক ট্যাংক ব্যবহার করছে যশোর শহরের প্রথিতযশা বিভিন্ন হাসপাতালসহ ব্যক্তিমালিকাধীন বাড়ি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বলে উল্লেখ করা হয়। একইসাথে নদের সাথে পৌরসভার ড্রেন যুক্ত রয়েছে। ফলে খনন কাজ প্রায় শেষ হলেও ভৈরব নদ দূষণ আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সেই দূষণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে পানি দূষণ ও নদ ভরাট বন্ধে নদে কোনোপ্রকার বর্জ্য না ফেলার নির্দেশনা দিয়ে দূষণকারীদের নামে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর জেলা কার্যালয় থেকে এ নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। ভৈরব নদ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট উপ-কমিটিও করে দেন জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান, সদস্য সচিব পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সাঈদ আনোয়ার, সদস্য পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন, প্রেসক্লাব যশোরের সম্পাদক তৌহিদুর রহমান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.