প্রতিবেদক :
শুক্রবার ছিল ছুটির দিন। রৌদ্রোজ্জ্বল শ্রাবণের আকাশ। প্রচণ্ড রোদের তাপদাহে ঘেমে নেয়ে একাকার। কেউ এসেছেন সিনেমা দেখতে, কেউ আবার অগ্রিম টিকিট কাটতে। কাউন্টারের সামনে টিকিট নিয়ে উচ্ছ্বসিত দর্শকদের ভিড়। লাইন ধরে হলে প্রবেশ করছেন তারা। শনিবারও ছিল যশোরের মণিহার সিনেমা হলে দর্শকদের বাঁধভাঙা জোয়ার। এদিন মণিহার সিনেমা হলে লেগেছে বহুল আলোচিত ‘হাওয়া’ সিনেমা। হল কর্তৃপক্ষ বলছেন, গত ৫ বছরের মধ্যে দর্শকদের এমন সাড়া আর পাওয়া যায়নি। ভালোমানের সিনেমা বানালে দর্শকদের চাহিদা সবসময় থাকে।
সিনেমা হলের টিকিট বিক্রেতারা বলেন, হাওয়া সিনেমা নিয়ে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মাঝে উন্মাদনা দেখা দিয়েছে। সিনেমার পোস্টার, ট্রেলার ও গান প্রকাশের পর সেগুলো লুফে নিয়েছেন সবাই।
‘হাওয়া’ মুক্তির আগে সংবাদমাধ্যমে কমন শিরোনাম ছিল : ‘হাওয়া’র টিকিট হাওয়া। তবে কেবল মুক্তির আগে নয়, যশোরের মণিহার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর শুক্রবার ও শনিবার ছবিটির টিকিট পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয়েছে দর্শকদের, যা সাম্প্রতিক সময়ে কোনো বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। ‘হাওয়া’ সিনেমা মুক্তির পর থেকেই সাফল্যের হাওয়ায় ভাসছে নিভে যাওয়া বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি। মুক্তির পর থেকেই সিনেমাটি দেখার জন্য দর্শকের উপচেপড়া ভিড়। প্রেক্ষাগৃহগুলোতে তাৎক্ষণিক টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। দর্শকের চাপে দুই-তিনদিন আগে অগ্রিম টিকিট কিনে তারপর সিনেমাটি দেখতে হচ্ছে সবাইকে।
শহরের বেজপাড়া এলাকার রবিউল ইসলাম বলেন, সাদা সাদা, কালা কালা গান শুনে সিনেমা দেখার মন স্থির করলাম। যেকারণে গতকাল অনেক কষ্ট করে টিকিট সংগ্রহ করে সিনেমা উপভোগ করেছি। বেশ ভালো লেগেছে। আসলে আমাদের দেশে এখনতো ভালোমানের সিনেমা হয়না। যা হয় তা পরিবার নিয়ে দেখা যায়না। উপশহর এলাকার সোহেল রানা বলেন, পরিবার নিয়ে দেখার মতো সিনেমা। এই ধরনের সিনেমা নির্মাণ হলে বাংলা চলচ্চিত্র আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।
মেজবাউর রহমান সুমনের প্রথম সিনেমা ‘হাওয়া’ বাংলা সিনেমার পালে নতুন হাওয়া দিয়েছে। একদিকে ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানে যেমন পুরো দেশ মাতোয়ারা, তেমনি সিনেমাটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ বেশিরভাগ দর্শক।
‘হাওয়া’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান, মাহমুদ আলম, বাবলু বোসসহ আরও অনেকে।
যশোরের মণিহার সিনেমা হলের ম্যানেজার তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ৪-৫ বছর পর দর্শকদের এমন সাড়া পাওয়া গেল। আগে থেকেই টিকিট বুকিং হয়ে যাচ্ছে হাওয়া সিনেমার জন্য। আমাদের হলে এক হাজার ৩৪টি সিট রয়েছে যার সবই বুকিং ছিল গতকাল।