Take a fresh look at your lifestyle.

যশোরের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ২৮ নেতাকর্মী গ্রেফতার

0

প্রতিবেদক :
শনিবার বিকেলে যশোর সদরের রুপদিয়া বাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ২৮ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে এসব নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে, সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার রাতে বিএনপির ৫৪ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেন নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য উপজেলার বলরামপুর গ্রামের এস এম আকরাম হোসেনের ছেলে ফারুক হোসেন। মামলার পর তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী মডেল থানার এসআই নাজমুল হাসান অভিযান চালিয়ে আটকৃতদের আজ রবিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করেন।

তেল, গ্যাসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ভোলায় ছাত্রদলের দুই নেতা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শনিবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়ন বিএনপি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। সমাবেশ শেষে রূপদিয়া বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে নেতৃবৃন্দ। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা একে অন্যদের উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। বিএনপি নেতারাও নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এই ঘটনায় উভয়পক্ষের ৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। আতঙ্কে রূপদিয়া বাজার সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

তবে জেলা বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, সমাবেশ শেষে তারা শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা লাঠিশোটা দিয়ে রাস্তায় অবস্থান করে। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালালে তারাও প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

তবে এই হামলা নিয়ে এদিন বিকেলে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি দাবি করেন, কর্মসূচির নামে বিএনপি নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নে ভাংচুর-হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের উপস্থিতিতে এই হামলা চালানো হয়। তিনি উপস্থিত থেকে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদেও হামলা করান বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে, মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, আগস্ট মাসে তারা বিভিন্ন এলাকায় শোকসভা, দোয়া মাহফিল ও গণভোজের আয়োজন করে আসছিলেন। এসব বিষয়ে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের সেমিনারকক্ষে শনিবার বেলা ১১টায় চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদকে নিয়ে আলোচনা করছিলেন। একই সময় পাশের ইউনিয়ন কচুয়াতে বিএনপির সমাবেশ চলছিল। ঐ সমাবেশ শেষে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ে রূপদিয়া বাজারের দিকে ধেয়ে আসে। আসামিরা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে কয়েকটি ককটেল মেরে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ইউনিয়ন পরিষদ ভাংচুর করে। যাতে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পরিষদের গেটের সামনে চেয়ারম্যান রাজুর পাজেরো গাড়ি ও একটি প্রাইভেটকার এবং একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এতে সাড়ে সাত লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এছাড়া রাজুর গাড়িতে থাকা একলাখ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে। এসময় চেয়ারম্যান রাজুসহ অন্যরা এগিয়ে আসলে আসামিরা রামদা, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাজুর সাথে থাকা ১০ জনকে মারপিট করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, আওয়ামী লীগ ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে, তাদের সাথে প্রশাসন রয়েছে তাদের সঙ্গে আমার নেতৃত্বে হামলা চলেছে সেটা কোনো পাগলও বিশ্বাস করবে না। তারা আমাদের সঙ্গে রাজনীতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে শুক্রবার রাতে জেলা বিএনপির শীর্ষনেতাদের উপর হামলা করেছে, জনগণ এখন রাজপথে নেমে এসেছে; এখন আওয়ামী লীগনেতাদের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। সেই কারণে তারা আমাদের উপর এমন ধরনের অভিযোগ দিচ্ছে। এসব অভিযোগে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। কারণ এর আগেও আমাদের নামে শত শত গায়েবি মামলা দিয়ে আমাদের আটকে রাখা হয়েছিল। আমরা রাজনৈতিকভাবেই এসব মোকাবেলা করবো।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, রুপদিয়াতে আইনশৃঙ্খলা এখন স্বাভাবিক। সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ২৮ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.