Take a fresh look at your lifestyle.

ক্ষণিকা পিকনিক কর্ণারে ‘ওয়েট স্কেল’ বসানোর সিদ্ধান্তে ফুঁসে উঠছে যশোরবাসী

0

প্রতিবেদক :
যশোরের ঐতিহ্যবাহী ক্ষণিকা পিকনিক কর্ণার ভেঙ্গে ‘ওয়েট স্কেল’ বসানোর সিদ্ধান্তে ফুঁসে উঠেছেন যশোরবাসী। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে যশোরের পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। প্রকল্পটি ক্ষণিকা পিকনিক কর্ণার থেকে সরিয়ে অন্যখানে স্থাপনের দাবিতে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক মাস্টার নুর জালালের নেতৃত্বে আজ মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) একটি প্রতিনিধিদল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় সভায় পিকনিক কর্ণারের জীববৈচিত্র অক্ষুন্ন রেখে আধুনিক করা ছাড়া ওজন স্কেল স্থাপন না করার সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

এদিকে, এক সময়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্র যশোরের ক্ষণিকা পিকনিক কর্ণারটি ঐতিহ্য নষ্ট করে ওজন স্কেল বসানোর প্রতিবাদে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে পিকনিক কর্ণারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোরের নেতৃবৃন্দ।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্র ও সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬২ সালে অবাঙালি প্রকৌশলী ফারুকির উদ্যোগে ৫৬ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় যশোরের ঐতিহ্য ক্ষণিকা পিকনিক কর্ণার, যা যশোরবাসীসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে। এখানে বিশাল দিঘি ছাড়াও রয়েছে নানা ধরনের গাছ-গাছালি ও জীববৈচিত্র। কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগ দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই জৌলুস হারাতে থাকে ক্ষণিকা। এ অবস্থায় ৯০ দশকে এসে উৎসাহে ভাটা পড়ে দর্শনার্থীদের মাঝেও। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা এবং পরিবেশবাদীরা বারবার প্রশাসন ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে যশোরের ঐতিহ্যবাহী পিকনিক কর্ণারটির জৌলুস ফেরাতে ভূমিকা রাখতে। কিন্তু তাদের সেই দাবি পূরণ হয়নি। এখন পার্কটির পশ্চিমপাড়ের দেয়ালের ৪ একরের অংশ ভেঙ্গে ফেলে বসানো হচ্ছে ওজন স্কেল।

সূত্র জানায়, সারাদেশে মহাসড়কগুলোতে অতিরিক্ত চাপ কমাতে ২৭টি জেলায় ২৭টি স্থানে সড়কে ‘ওয়েট স্কেল’ বসানোর সিন্ধান্ত নিয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সরাসরি বাংলাদেশ সড়ক ও জনপদ বিভাগ প্রায় ১৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলাগুলোতে ‘ওয়েট স্কেল’ স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করেছে। এর মধ্যে যশোর-খুলনা মহাসড়কের ক্ষণিকা পিকনিক কর্ণারের পাশে একটি বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে মাটি পরীক্ষা ও আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। যশোরের ‘ওয়েট স্কেল’ স্থাপনের জন্য ৮ একর জমির ডিজাইন করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষণিকা পিকনিক কর্নার থেকে নেয়া হবে ৪ একর জমি। বাকি জমি সড়কের পাশ থেকে অধিগ্রহণ করা হবে। এখানে ‘ওয়েট স্কেল’ বসালে যশোর-খুলনা অঞ্চলের সড়কগুলোতে পরিবহনের অতিরিক্ত চাপ কমাতে ভ‚মিকা রাখবে বলে মত সংশ্লিষ্ঠদের।

তবে পরিবেশবাদীদের দাবি, নির্মাণ কাজ শেষের পর ওজন স্কেল চালু হলে সেখানে প্রতিনিয়ত পরিবহন দাঁড়ানো এবং পার্কিংয়ের ফলে পাখ-পাখালিসহ পার্কটির প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হবে। এমন পরিস্থিতি ওজন স্কেল স্থাপন বন্ধের দাবি জানিয়ে নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোর এবং সেবা সংগঠন, ঝিকরগাছার নেতৃবৃন্দ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এসময় নেতৃবৃন্দ বলেন, ওজন স্কেল প্রয়োজনে অন্যত্র করা যাবে। কিন্তু পিকনিক কর্ণারের ৪ একর জমি দখল করে তার গাছ কাটলে প্রকৃতির যে ক্ষতি হবে সেটা পোষানো সম্ভব হবে না। এসময় খুলনা-যশোর মহাসড়কের চেঙ্গুটিয়া বাজারের ওজন স্কেলের কথা উল্লেখ করে আরেকটি ওজন স্কেল নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।

এসময় নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, গাছ কেটে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হবে না। তিনি অন্যখানে ওজন স্কেল স্থাপনের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবেন বলে জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক মাসুদুজ্জামান মিঠু, কোর কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ, মোবাশ্বের হোসেন বাবু, আহসানউল্লাহ ময়না, অধ্যক্ষ বোরহানুস সোবহান, মুক্তিযোদ্ধা সেলিম হোসেন, তাসলিমা ইসলাম লিপা, জাহিদ গোলদার, ডা. আব্দুল্লাহ, ডা. আবিদ প্রমুখ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.