Take a fresh look at your lifestyle.

যশোরে পুলিশের সঙ্গে স্বর্ণ পাচারকারীদের সংঘর্ষ, নিহত ১

৩০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার, ককটেল বিস্ফোরণে দুই পুলিশ আহত

0

প্রতিবেদক :
ভারতে পাচারের সময় যশোরের শার্শা সীমান্তে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানে ৯ কেজি ৭৫৯ গ্রাম ওজনের ৩০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুজন পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। এসময় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালানোর সময় পাচারকারী একজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শার্শার নাভারণ-সাতক্ষীরা সড়কের জামতলা এলাকায় মবিল ফ্যাক্টরির সামনে এসব ঘটনা ঘটে। অভিযানে চোরাকারবারিদের ককটেল বিস্ফোরণে পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সহকারি পুলিশ সুপার (নাভারণ সার্কেল) জুয়েল ইমরান।

নিহত চোরকারবারি হলেন ওলিয়ার রহমান (৩৬)। তিনি শার্শার রাজাপুর গ্রামের জাহান আলীর ছেলে। আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন : কুমিল্লার হোমনা উপজেলার আবু সরদারের ছেলে রবিন সরদার (৩২) ও একই জেলার পাঁচগাছিয়া গ্রামের কবির হোসেনের ছেলে আবুল কাশেম (৩১)। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন : কনস্টেবল তৌহিদ ইসলাম ও রনবীর।

সংবাদ সম্মেলনে সহকারি পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে শার্শা সীমান্তপথ জামতলা বাজারে মবিল ফ্যাক্টরির সামনে জেলা ডিবি পুলিশের একটি টিম রাত্রিকালিন চেকপোস্ট পরিচালনা করে। এসময় সাদা রঙের দ্রুতগতির প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো গ-২২০৪২৪) সন্দেহ হলে চেক করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গাড়িতে স্বর্ণ আছে স্বীকার করেন। ঠিক সেই সময়ে সড়কের দুই প্রান্ত দিয়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেলযোগে ২০ থেকে ২৫ জন ব্যক্তি অতর্কিতভাবে এসে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ৪-৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। বিস্ফোরিত ককটেলে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে চোরাবারকারিদের শরীর ও গাড়ি তল্লাশি করে ৯ কেজি ৭৫৯ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বাজারমূল্য ৭ কোটি ৫৭ লাখ ১২ হাজার ৬৮০ টাকা। একইসাথে ঘটনাস্থলের সামনে থেকে ওলিয়ার রহমান নামে চোরকারবারিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শার্শা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযানে একটি প্রাইভেটকার, তিনটি মোটরসাইকেল ও ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে সহকারি পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান ব্রিফিং করেন, ছবি : কপোতাক্ষ

সহকারি পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান আরও বলেন, এই ঘটনায় স্বর্ণসহ পাচারকারীদের শার্শা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। স্বর্ণের পাচার রোধে সীমান্ত এলাকায় পুলিশের টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। স্বর্ণের চোরাচালান শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা ডিবির ওসি রুপন সরকার, শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন খান প্রমুখ।

এদিকে, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গভীররাতে বোমার বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন পুলিশ ও স্বর্ণ পাচারকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।

নিহত ওলিয়ারের পিতা জাহান আলী সাংবাদিকদের জানান, মোটরসাইকেল ভাড়ায় চালাতেন তার ছেলে। রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। সকালে জানতে পারেন সোনা পাচারের ঘটনায় তার ছেলে মারা গেছেন।

প্রসঙ্গত, গত এক সপ্তাহে যশোরের শার্শা সীমান্তপথে ভারতে পাচারের সময় বিজিবির অভিযানে দুটি ও পুলিশের অভিযানে একটি স্বর্ণের চালান আটক হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.