Take a fresh look at your lifestyle.

অভয়নগরে কাঠ পুড়িয়ে আবারও কয়লা তৈরি, নির্বিকার প্রশাসন

0

প্রতিনিধি অভয়নগর :
অভয়নগরে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আবারও কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বানানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই এলাকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়চ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধ এ কারবারে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার সিদ্দিপাশা এলাকায় প্রতিনিয়ত কাঠ পুড়িয়ে কয়লার ব্যবসা করা হচ্ছে। ট্রলিতে করে কাঠ নিয়ে শতাধিক মাটির কাঁচা চুল্লি তৈরি করে কয়লা বানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে। গাছপালা কেটে ছোট ছোট কাঠের টুকরা বানিয়ে চুল্লির মধ্যে দিয়ে জ্বালানো হচ্ছে। একপাশ দিয়ে ছোট কয়লা বের করা হচ্ছে, অন্যপাশে সেই কয়লা শুকানো হচ্ছে। বাকি জায়গায় বস্তায় ভর্তি করে রাখা হয়েছে। চুল্লির মধ্যে সারিবদ্ধভাবে কাঠ সাজিয়ে চুল্লির খোলা মুখ দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়। প্রতিটি চুল্লিতে প্রতিবার ২৫০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। কাঠ পুড়ে কয়লা হয়ে গেলে সেগুলো বের করে ঠান্ডা করে বিক্রির উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এলাকাবাসী জানান, এ এলাকায় অনেক গাছপালা ছিল। বর্তমানে গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বানানোর কারণে আমাদের শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে দেখা দিয়েছে। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এসব ব্যক্তি কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছে।

সূত্র জানায়, উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর চারবার অভিযান চালিয়ে চুল্লিগুলো গুড়িয়ে দিলেও বন্ধ হয়নি এ অবৈধ ব্যবসা। প্রতিবারই আরও নতুন নতুন চুল্লি তৈরি হয়েছে। ফলে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, উজাড় হচ্ছে গাছপালা, অপরদিকে স্থানীয়রা শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে ভুগছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন বলেন, এদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের উপর নানা হুমকি ধামকি নেমে আসে বলে অভিযোগ রয়েছে। সেইসাথে এই এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও পোহাতে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনা। এর আগে অনেকবার এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগও দিয়েছেন।

স্থানীয়দের দাবি, কতিপয় ব্যক্তি জোটবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে মাটির চুল্লি বানিয়ে কাঠ ও শিসা পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছে। এমনকি সরকারি দাতব্য চিকিৎসালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকাতেও তারা এ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কয়লা তৈরির চুল্লি নির্মাণ করেছে। সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে অবাধে চুল্লিতে এ কয়লা তৈরি হওয়ায় নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।

সোনাতলা গ্রামের বেশ কয়েকজন এ অঞ্চলে শতাধিক চুল্লি তৈরি করে কয়লা বানিয়ে আসছে। তারা এতটাই প্রভাবশালী যে স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো দূরের কথা, মুখ খুলতেও সাহস পায় না। মাটি, ইট ও কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি করা চুল্লিতে প্রতিদিন কয়েকশ মণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।

কয়েকজন চুল্লি মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে আমাদের ব্যবসা চালাতে হয়। স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সব মহলকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই তারপর ব্যবসা চালাই।

অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাহ উদ্দীন বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুতই অভিযান চালানো হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.