Take a fresh look at your lifestyle.

যশোরে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বাইক নিয়ে ট্রাকের নিচে যুবক

‘কী আব্বু বলেছিলাম না এমন কাজ করোনা, ছেলেকে হারিয়ে ফেলবে’

0

প্রতিবেদক :
যশোরের ঝিকরগাছায় বোনের বাড়িতে এসে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে আকাশ বিশ্বাস (১৯) নামের এক যুবক মারা গেছেন। তবে মারা যাওয়ার আগে তার ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যার ইঙ্গিত করে গেছেন। প্রথম পোস্টে লেখা হয়েছে ‘আমাকে যেন ওই পাপের শহরে নেওয়া না হয়, কবরটা যেন এই শহরের গোরস্থানেই দেওয়া হয়’। দ্বিতীয় এবং সর্বশেষ পোস্টে স্পষ্টভাবে পিতার উপর অভিমান করে আত্মহত্যার কথা লেখা হয়েছে। আজ রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যশোরের ঝিকরগাছা বাজারে রাজাপট্টি এলাকায় যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে ট্রাকের সাথে মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই আকাশ বিশ্বাস নিহত হন। আকাশ নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বি-পাটনা গ্রামের আবুল বিশ্বাসের ছেলে। তবে তিনি বিদ্যুৎ বিভাগে চাকরিসূত্রে খুলনার খানজাহান আলী থানা এলাকায় বসবাস করতেন।

ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বেনাপোলগামী পণ্যবাহী ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ট ১৮-৭২২০) ধীরগতিতেই রাস্তার বাম পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে রাস্তার ডানপাশ দিয়ে দ্রুতগতিতে একটি সুজুকি মোটরসাইকেল ট্রাকের সামনের দিক থেকে এসে আঘাত করে। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা বাইকচালক আকাশকে উদ্ধার করে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এটিকে শুধু দুর্ঘটনা বলে মনে হয় না; বরং আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই ট্রাকের সামনে বাইক চালিয়ে দেয়া হয়েছিল। নিহত আকাশের বোনজামাই, ঝিকরগাছা কাটাখাল এলাকার আব্দুর রহিমের কথাতেও সেই কথার সত্যতা মেলে। ঘটনাস্থলে এসে তিনি জানান, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আকাশ এ কাজ করেছে।

নাভারণ হাইওয়ে থানা ওসি মিজানুর রহমান মিজান জানান, রবিবার দুপুরে ঝিকরগাছায় ট্রাক-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে আকাশ বিশ্বাস নামের এক যুবক মারা গেছে। লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ট ১৮- ৭২২০) জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক রয়েছে।

এদিকে নিহত আকাশের ফেসবুক প্রোফাইলে মিলেছে আত্মহত্যার ইঙ্গিত। মারা যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে তার প্রোফাইলে ইংরেজি শব্দে বাংলায় একটা দীর্ঘ লেখা লেখেন। লেখার সারমর্ম হলো ‘কী আব্বু বলেছিলাম না এমন কাজ করোনা, ছেলেকে হারিয়ে ফেলবে। আমি চলে যাচ্ছি আমার মায়ের কাছে, তোমরা তোমাদের সম্মান নিয়ে ভালো থেকো। রেগুলার মরে যাওয়ার থেকে একেবারে মরে যাওয়া অনেক ভালো। তোমার অবাধ্য কখনো হইনি আব্বু, কিন্তু আমার একটা রিকোয়েস্ট রাখলে আজ আমি বেঁচে থাকতাম। আর হ্যাঁ, অনেকের সাথেই অনেক অন্যায় করেছি সবাই আমাকে মাফ করে দিও প্লিজ। ভাইয়া তোমার কাছে একটা রিকোয়েস্ট আমার কবরটা গোরস্থানে দিও। বাপের ঐ জমিনে আমাকে রেখো না ভাইয়া। অনেকটা ইচ্ছা ছিল বেঁচে থাকার, কিন্তু ওরা আমাকে বাঁচতে দিলোনারে ভাইয়া’ আর কেও তোমাকে বলবেনা, ও ভাইয়া তোমরা থাকতে আমাকে ওরা হুমকি দেয় কিভাবে। ভালো থাকুক প্রিয় ভালোবাসার মানুষগুলো।’

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.