Take a fresh look at your lifestyle.

পাখির নাম জল-কুক্কুট

মেহেরপুরের খাল বিল মুখর হয়ে উঠছে অতিথি পাখির কলকাকলিতে

0

দিলরুবা খাতুন, মেহেরপুর :
শরৎ বিদায় নিচ্ছে। দৌড়গোড়ে হেমন্ত। রাতের কুয়াশায় ভিজে যাচ্ছে প্রকৃতির মাঠ-ঘাট। মাঠে সোনালী ধানের শীষ। কদিন পরেই ধান কাটতে হবে। সেই ধান দেখে কৃষকের বুকে আনন্দের ঢেউ আছড়ে পড়বে। কৃষকের আহ্বানে না হলেও প্রকৃতির টানে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। এরই মধ্যে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে মেহেরপুর জেলার খাল-বিলসহ বড় বড় জলাশয়গুলো। শীতের আগমনে মেহেরপুরের পাটাপোকা বিল, তেরঘরিয়া বিল, গৌরিনগর ছোট নাগরার বিল, ধলার বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে এসে জড়ো হয়েছে শীতের পাখি। এসব পাখিদের উড়াউড়িতে চোখ জুড়িয়ে যায় পাখিপ্রেমিদের। প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের শেষেই হিমালয়ের উত্তরে শীত নামতে শুরু করে। তখন সেখানে পাখিদের পক্ষে টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে ওঠে। তারা তখন পাড়ি জমায় দূর-দূরান্তের উদ্দেশ্যে। আসে মেহেরপুরের খাল বিলেও। এবার পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে জল-কুক্কুট পাখি আগাম এসেছে। এ পাখিটি সরাসরি পাখা ঝাপটে উড়েনা। বিমানের রানওয়ের মতো পানির ওপর দিয়ে ছলাৎ ছলাৎ শব্দে পানির ওপর দিয়ে বেশ কিছুটা উড়ে যায়। এরপর বিমানের মতো আকাশে ডানা মেলে। জল-কুক্কুট দেখতে হাঁসের মতো।

পাখিপ্রেমিদের সংগঠন ‘কিচির মিচির বার্ড ক্লাবের সভাপতি ফারিহা ইকবালের নেতৃত্বে ক্লাবের সদস্যরা পাখি শিকার বন্ধে সচেতন করতে কাজ শুরু করেছে। জেলার সেসব স্থানে পাখিদের অভয়ারণ্য সেসব এলাকার মানুষকে সচেতন করছেন। পাখি নিধন বন্ধে প্রচারপত্র বিলি এবং সাইনবোর্ড লটকে দিচ্ছেন।

ফারিহা বলেন, জলাশয় কমে যাওয়াতে এই জল-কুক্কুট বড় হুমকিতে। পরিবেশ দুষণ, শিকার, বিষক্রিয়া আর খাল বিলে পেতে রাখা জালে আটকে এই পাখিরা কমে যাচ্ছে। শীতের আগমনে ইতোমধ্যে পাতারিহাঁস, খয়রা পাখি ও সরাজি প্রজাতির পাখি আগাম এসে গেছে। কিছুদিনের মধ্যেই মেহেরপুরের জলাশয়গুলো পাখিদের মিছিলে পরিণত হবে।

‘কিচির মিচির বার্ড ক্লাবের’ সদস্য সদানন্দ মন্ডল ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে পুরো শীত খাল বিল, জলাশয় ঘুরে বেড়ান পাখি দেখতে। তারই ক্যামেরাতে ছুচোখোলা বিলে জল-কুক্কুট পাখি ধরা পড়ে। সদানন্দ জানান, পাখিটি ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পাখা হয় ৭০ থেকে ৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। দেহ কালো, ঠোঁট সাদা। পুরুষ ও স্ত্রী পাখি দেখতে অভিন্ন। প্রজনন মৌসুমে জল-কুক্কট জুটি বাসা তৈরি করে। দুটি করে ডিম দেয়। পালা করে ডিমে তা দেয়। দলবদ্ধভাবে এরা বসবাস করে। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি এরা এদেশে আসে। ফিরে যায় ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে। কেউ কেউ স্থায়ীভাবে এদশেই থেকে যায়। এদেশেই প্রজনন হয়। সর্বভূক এই পাখিটি জলজ উদ্ভিদ, বিভিন্ন গাছের ফল, ছোট ছোট মাছ পতঙ্গ ব্যাঙ খেয়ে থাকে।

মেহেরপুরের জলাশয়গুলোর যেখানে যেখানে পাখিদের অভয়ারণ্য সেসব স্থানগুলোতে সরকারি নজরদারির করার আহ্বান জানান বার্ড ক্লাবের সদস্যরা। তাতে প্রকৃতি থাকবে তার আপন রুপে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.