Take a fresh look at your lifestyle.

সবুজে বিস্তৃত বাংলার জীবন্ত প্রতিচ্ছবিতে শিশুদের উদ্ভাস

ব্রাদার টিটোস হোমে বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী

0

প্রতিবেদক :
একেকটি ছবি যেন সবুজে বিস্তৃত বাংলার গ্রাম-গ্রামান্তরের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। কোমল হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় আঁকা ছবিগুলোয় প্রতিবিম্ব ছড়িয়েছে শ্যামলে ভরা দেশ ও মাটি। ছবির আঁকিয়েদের সবাই একদমই কচিকাঁচা। তাদের কারোরই এখনও প্রাথমিকের গন্ডি পেরোয়নি। অথচ তাদেরই কাঁচা হাতে সৃজিত ছবিগুলো হয়ে উঠেছে নিসর্গের এক নান্দনিক উপলব্ধি।

শনিবার ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে তিনটা ছুঁইছুঁই। হেমন্ত বেলা তখন ঢলে পড়েছে নরম রোদের বিকেলের কোলে। যশোর শহরের লালদিঘির পাড়ে ব্রাদার টিটোস হোম আঙিনায় সোরগোল। সেখানটায় চলছে স্কুলটিতে পড়ুয়া শিশুদের বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী উদ্বোধনের প্রস্তুতি।

শিশু শিক্ষার্থীদের সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর ছিল আমরা ‘সুন্দর মানুষ হবো’ শপথ গ্রহণ। ‘অ্যাসেম্বলি’ (সমাবেশ) শেষের পর ফিতা কেটে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার আব্দুলাহ। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাব যশোরের যুগ্ম সম্পাদক ও শিশু সাহিত্যিক হাবিবুর রহমান মিলন। উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন ব্রাদার টিটোস হোম স্কুলের অধ্যক্ষ আলী আযম টিটো।

স্কুলের সামনের আঙিনায় আয়োজন করা হয় বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীর। এখানেই ছিল শিশুদের আঁকা ছবির গ্যালারি। স্কুল আঙিনার গাছের পাতার ফাঁক গলে রোদ খেলা করছিল রঙ-বেরঙের ছবিগুলোর ক্যানভাসে। গ্যালারি ঘুরে দেখা যায়, ছোট ছোট হাতের শিল্পনৈপুণ্য। পেন্সিলের আঁচড়ে, রঙ-তুলির ছোঁয়ায় একেকটি ছবিতে উঠে এসেছে চিরায়ত গ্রামবাংলার প্রতিচ্ছবি। শিশু আঁকিয়েদের চিত্রগুলোয় ফুটে উঠেছে নদীমাতৃক বাংলার একেকটি জনপদের ছবি। নদীর কূল থেকে কলসিতে জল ভরে বাড়ি ফিরছেন গ্রামীণ নারী। কোনো কোনো ছবিতে ছিল সবুজ নিসর্গে ভরা গ্রাম। গাছগাছালিতে ভরা গ্রামের ঘরবাড়ি। সবুজ বিস্তীর্ণ ক্ষেতের পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদী ও খাল। উঁচু পাহাড়ের পেছন দিয়ে সূর্য্যি মামার উঁকি। শিশুদের এই ছবির ভাবনায় বাদ পড়েনি দেশমাতৃকার প্রেম ও ভাষার প্রতি বাঙালির ভালোবাসার ভাবনাখানি। রঙ-রেখায় শহিদ মিনারের ছবিও এঁকেছে তারা। বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে ও সৃষ্টিকর্তার মহিমা-কীর্তন করে কেউ কেউ এঁকেছে ক্যালিগ্রাফি ও থ্রিডি আর্ট। সুন্দর হস্তাক্ষর ও লিখনিরও আর্কষণীয় প্রদর্শনও ছিল। সব মিলিয়ে আয়োজন ছিল সত্যিই নান্দনিক। স্কুলটির ৪৮ শিক্ষার্থীর ২০৮টি ছবি নিয়ে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

প্রদর্শনীর শেষ পর্যায়ে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের হাতে সনদপত্র ও পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার আব্দুল্লাহ এবং বিশেষ অতিথি প্রেসক্লাব যশোরের যুগ্ম সম্পাদক ও শিশু সাহিত্যিক হাবিবুর রহমান মিলন পুরস্কার বিতরণ করেন।

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.