Take a fresh look at your lifestyle.

বেনাপোল বন্দরে ন্যায্য মজুরির দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ

বৃহৎ আন্দোলনসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

0

বেনাপোল প্রতিনিধি :
সরকারি আইন পরিপন্থী মজুরি দেওয়ার অভিযোগ এনে বেনাপোল স্থলবন্দরে ন্যায্য মজুরির দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ হয়েছে। বৈরি আবহাওয়াকে তুচ্ছ করে জীবনজীবিকার মান উন্নয়নে আজ সোমবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ৩টার দিকে বেনাপোল স্থলবন্দরের সামনে এ সমাবেশ করেছে বন্দরে কর্মরত হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন ৯২৫ ও ৮৯১ রেজিস্ট্রেশনভুক্ত দুটি শ্রমিক সংগঠন।

শ্রমিকরা জানান, দেশের অন্যান্য বন্দরে সরকারি কার্গো হ্যান্ডলিং আইনে (ম্যানুয়াল) টনপ্রতি চার্জ ৬০.২০ টাকা। সেখানে বেনাপোল স্থলবন্দরে ট্যারিফ সিডিউলের কার্গো হ্যান্ডলিং (ম্যানুয়াল) চার্জ টনপ্রতি ৪৩.৬৯ টাকা। অর্থাৎ অন্যান্য স্থলবন্দরের চেয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরে টনপ্রতি ১৬.৫১ টাকা চার্জ কম। একারণে বেনাপোল স্থলবন্দরে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে দীর্ঘদিন অসন্তোষ বিরাজ করছে। অন্যান্য স্থলবন্দরের সাথে সমতা রেখে বেনাপোলের কার্গো হ্যান্ডলিং (মানুয়াল) চার্জ টনপ্রতি ৬০.২০ টাকা করা হলে শ্রমিক অসন্তোষ রোধ হবার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিসহ বন্দরে কর্মরত শ্রমিকের আর্থিক ও সামাজিক মানের উন্নয়ন হবে বলে তারা দাবি করেন।

শ্রমিকরা জানান, শ্রমিক সংগঠনগুলো অন্যান্য বন্দরের মতো বেনাপোল স্থলবন্দরের চার্জ নির্ধারণের জন্য দীর্ঘদিন দাবি উত্থাপন করে আসছেন। এ দাবির সাথে বেনাপোল স্থলবন্দরের সাবেক উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার একমত পোষণ করে সভাও করেছেন। সভার আলোচনার বিষয় তিনি বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে পাঠিয়েও ছিলেন।

বেনাপোল স্থলবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রাজু আহমেদ জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে বেনাপোল স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই থেকে এ বন্দর থেকে সরকার প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করে দেশ উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। কিন্তু এ বন্দরের শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ন্যায্য মজুরি না পেয়ে অর্ধাহারে খুবই নাজুক অবস্থায় জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ন্যায্য মজুরি পেতে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন। তাদের পক্ষে বেনাপোল স্থলবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন ৯২৫-এর সাধারণ সম্পাদক অহিদুজ্জামান অহিদ বাদি হয়ে গতবছরের ২৪ জানুয়ারি মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল দাখিল করেন।

সর্বশেষ ২০১৯-এর ১৭ ডিসেম্বর এ বন্দরের হ্যান্ডলিং ঠিকাদার নিয়োগের টেন্ডার হয়েছিল। পরবর্তীতে টেন্ডার হবার কথা থাকলেও হাইকোর্টে রিট পিটিশন ও সুপ্রিম কোটে আপিলের কারণে থমকে আছে টেন্ডার প্রক্রিয়া। শ্রমিকদের দাবি, টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল রেখেই সরকারি আইনে দেশের অন্যন্য বন্দরের সাথে একযোগে টনপ্রতি ৬০.২০ টাকা মজুরি দিলে তারা সন্তোষ প্রকাশ করবেন।

বেনাপোল স্থলবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন ৮৯১-এর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দেশের সর্ববৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে দেশের সিংহভাগ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার মেট্রিকটন পণ্য লোড-আনলোড হয়। যার প্রতিটি পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে এখানকার শ্রমিকরা যত্নসহকারে কায়িক পরিশ্রম করে দেশের উন্নয়নের চাকা সচল রেখেছে। তাদের ন্যায্য মজুরির দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে ১৪০০ পরিবারের এ দুটি শ্রমিক সংগঠন থেকে বৃহৎ আন্দোলনসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.