Take a fresh look at your lifestyle.

অভয়নগরে ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপবৃত্তির টাকা লাপাত্তা!

0

অভয়নগর প্রতিনিধি :
যশোরের অভয়নগর উপজেলার ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে হ্যাকাররা। এ ঘটনায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হ্যাকাররা বিকাশ, ডাচ বাংলা, নগদ-এর মাধ্যমে উত্তোলন করে নিয়েছে। এ কারণে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সরকার প্রদত্ত উপবৃত্তির টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা হ্যাক করা মোবাইল নম্বরের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী হতে সরকারের পক্ষ থেকে শ্রেণিভেদে জনপ্রতি ১ হাজার ৪৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৯৫০ টাকা উপবৃত্তি ও স্কুল ড্রেস কেনার জন্য দেয়া হয়। এজন্য অভিভাবকদের প্রত্যেককে খুলতে হয়েছে ‘নগদ’ নামের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় বাস্তবায়নাধীন সমন্বিত উপবৃত্তির সুবিধাভুক্ত উপজেলার আল হেলাল ইসলামী একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির উপবৃত্তিপ্রাপ্ত চার জন শিক্ষার্থীর এইচএসপি ও এমআইএস মোবাইল অনলাইন একাউন্ট নম্বর পরিবর্তন করে বিকাশ, নগদ, রকেট একাউন্ট নম্বর ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে। এ বিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষার্থীর টাকা ০১৫১৬০০৪৩৮২ (নগদ) ০১৭০৪৪০৮০১৪ (বিকাশ) ০১৭৩৪১৬৩৬৭১৯ (রকেট) ০১৯৩০৯৪৯৯৯৪০ (রকেট) নম্বর থেকে নেয়া হয়েছে। আহম্মদ আলী সরকার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ২ শিক্ষার্থীর টাকা ০১৭০৪৪০৭৭১৭৩ (রকেট), ০১৯৩০৯৪৯৯৯৪০ (রকেট) নম্বর থেকে নেয়া হয়েছে। নওয়াপাড়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থীর টাকা ০১৫১৬০০৪৩৮২ নগদ, ০১৯৩০৯৪৯৯৯৪০ রকেট এর মাধ্যমে নেয়া হয়েছে। বর্ণী বিছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর টাকা ০১৭৪০৮৪২২৫৭ বিকাশ নম্বরের এর মাধ্যমে নেয়া হয়েছে। বাশুয়াড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর টাকা ০১৭৪০৮৪২২৫৭ বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে, ভাটপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর টাকা ০১৭৪০৮৪২২৫৭ বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে, মহাকাল পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৪ শিক্ষার্থীর টাকা ০১৬৩১৮৪৬৪৩৫ বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে হ্যাকাররা।

আল-হেলাল ইসলামী একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সনিয়া খাতুন বলেন, আমাদের অভাবের সংসারে লেখাপড়ার খরচ যোগাতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। সরকার কিছু টাকা দিত সেই টাকা দিয়ে খাতা-কলমসহ অন্যান্য খরচ করতে পারতাম। কিন্তুহ্যাকাররা আমার উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে।

এ ব্যপারে আল-হেলাল ইসলামী একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, যে সমস্ত নম্বর দিয়ে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে ওই নম্বরের বিরুদ্ধে আমরা জিডি করেছি। বাশুয়াড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল হোসেন বলেন, আমার স্কুলের ৭ম শ্রেণির ২ জন শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা হ্যাকাররা হ্যাক করে তুলে নিয়েছে। এ ব্যপারে ওই নম্বর উল্লেখ করে থানায় জিডি করেছি। শুনেছি বিষয়টি তদন্ত করছেন পুলিশ অফিসারেরা। বর্নী বিছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, আমার স্কুলের ২ জন শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির ১ম কিস্তির টাকা হ্যাক করে তুলে নিয়েছে হ্যাকাররা। বছরে দুইবার এই টাকা মোবাইলের মাধ্যমে দিয়ে থাকে সরকার। তাই বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

০১৬৩১৮৪৬৪৩৫ নম্বরে কল করলে নোয়াখালির জাহিদুল ইসলাম (হ্যাকার) নামের একব্যক্তি পরিচয় দিয়ে বলেন, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের সরকার প্রদত্ত উপবৃত্তির টাকা সম্পর্কে কিছু জানি না।

অভয়নগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা কল্যাণ ট্রাস্ট সমন্বিত উপবৃত্তি সেল থেকে এ সকল নম্বরের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে সাধারণ ডায়রি করতে বলেছি। বিষয়টি নিয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম শামীম হাসান বলেন, অভয়নগরে ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপবৃত্তির টাকা হ্যাকাররা উত্তোলন করে নিয়েছে। এসব মোবাইল নম্বরের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষকে জানানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাহ উদ্দিন বলেন, সরকার যে নির্দেশ দিয়েছে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এ ব্যাপারে যশোর জেলা শিক্ষা অফিসার গোলাম আজম বলেন, হ্যাকাররা যে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে সে টাকা অবশ্যই শিক্ষার্থীরা ফেরত পাবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.