Take a fresh look at your lifestyle.

যশোর ক্ষণিকা পিকনিক কর্ণারে ওজনস্কেল না বসাতে সওজের চিঠি মন্ত্রণালয়ে

0

প্রতিবেদক

যশোরে নাগরিক আন্দোলন ও গণমাধ্যমের ভূমিকার কারণে ঐতিহ্যবাহী ক্ষণিকা পিকনিক কর্ণারে ওজনস্কেল বসানো থেকে সরে আসতে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোর। বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য যশোরের পিকনিক কর্ণারে ১০ বিঘা জমির উপর ‘ওজন স্কেল’ বসানোর সিন্ধান্ত নিয়েছিল সড়ক ও জনপদ বিভাগ। কিন্তু ওজনস্কেল যাতে না বসানো হয় সেজন্য নাগরিক আন্দোলনের ব্যানারে যশোরের সচেতন মানুষ আন্দোলনে নেমেছে। ইতিমধ্যে তারা মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান করেছে সওজের দপ্তরগুলোতে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। যাতে জনমত ওজনস্কেল বসানোর বিপক্ষে গেছে। যেকারণে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এড়াতে ওজনস্কেল যশোর পিকনিক কর্ণারে না বসিয়ে যশোর-খুলনা মহাসড়কের নওয়াপাড়ার আশপাশে বসালে সবার জন্য ভালো হবে।

মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সওজ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, সড়ক ও জনপদের এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে খাদ্য ও বাসস্থান হুমকিতে পড়বে পিকনিক কর্ণারটিতে থাকা বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীরা। পুকুরটিও নষ্ট হয়ে যাবে। আবার নাগরিক আন্দোলন এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদগুলো আমাদের নজরে এসেছে। যেকারণে ওজনস্কেল নওয়াপাড়ায় বসানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

জানাযায়, ১৯৬২ সালে অবাঙ্গালী প্রকৌশলী ফারুকির উদ্যোগে ৫৬ বিঘা জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত হয় যশোরের রামনগরের ঐতিহ্য ক্ষণিকা পিকনিক কর্ণার। যা যশোরবাসীসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে। এখানে বিশাল দিঘী ছাড়াও রয়েছে নানা ধরনের গাছ-গাছালি ও জীববৈচিত্র। কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগ দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই জৌলুস হারাতে থাকে ক্ষণিকা। এ অবস্থায় ৯০ দশকে এসে উৎসাহে ভাটা পড়ে দর্শনার্থীদের মাঝেও। এক পর্যায়ে ঐতিহ্যবাহী বিনোদনকেন্দ্রটি ভরে যায়। গাছ-পালা আর ঝোপঝাড়ে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা এবং পরিবেশবাদীরা বারবার প্রশাসন ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে যশোরের ঐতিহ্যবাহী পিকনিক কর্ণারটির জৌলুস ফেরাতে ভুমিকা রাখতে। সড়ক ও জনপদের এমন আত্মঘাতি সিদ্ধান্তে উদ্যোগের ফুঁসে উঠে যশোরের পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। প্রতিবাদ জানিয়ে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময়, স্মারকলিপি  প্রদান করেছেন।

যশোর নাগরিক অধিকার আন্দোরনের আহ্বায়ক মাস্টার নুর জালাল বলেন, সওজ যশোরের কর্মকর্তারা ওজনস্কেল না বসানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে যে চিঠি দিয়েছে তার জন্য তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে পিকনিক কর্ণারটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার জন্য উদ্যোগ নেবার দাবি জানাচ্ছি। যশোরের সমান্বয়ক মাসুদুজ্জামান মিঠু বলেন, যশোরের ঐতিহ্যবাহী পিকনিক কর্ণারের জলাশয়ে ও গাছগাছালিতে পানকৌড়ি, বক, হাসপাখিসহ ছোট বড় প্রাণী বসবাস করে। এমন একটা জায়গায় ওজনস্কেল বসলে এর জীব-বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়তো। সওজ ওজনস্খে বসানো থেকে সরে এসেছে এটা ভালো খবর। এখন পিকনিক কর্ণারটি আধুনিকায়ন করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। তাহলে এঅঞ্চলের মানুষ বিনোদন সুবিধা পাবে।

সওজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আরিফ মাহমুদ জানান, ইতমধ্যে আমাদের মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব একেএম শামীম আক্তার মহোদয় ক্ষণিকা পিকনিক কর্ণারটি পরিদর্শন করেছেন। ওই সশয় তিনি ক্ষণিকায় ওজনস্কেল না বসানোর পক্ষে মত দিয়ে বলেন, এটিকে আরও বেশি সৌন্দর্যবর্ধন করতে হবে। এখানে ওজনস্কেল না বসিয়ে নওয়াপাড়ার দিকে জায়গা খুজতে বলেছিলেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.