Take a fresh look at your lifestyle.

যশোর মেডিকেল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

রোববার সমাবেশ মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ

0

প্রতিবেদক :
যশোর মেডিকেল কলেজের ৫শ’ শয্যা হাসপাতাল এক যুগেও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের সাধারণ মানুষ কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থায় হাসপাতাল দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটি। রোববার (১৩ নভেম্বর) বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।

২০১১ সালে যশোর মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়। ২০১০-১২ সেশনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। তখন কলেজের কাজ চলত যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। ২০১৬ সালের আগস্টে শহরের শংকরপুর বাস টার্মিনাল এলাকায় হরিনার বিলে নিজস্ব ক্যাম্পাসে কলেজ ভবনে কার্যক্রম চালু হয়। ৭৫ বিঘার নিজস্ব ক্যাম্পাসের কলেজে বর্তমানে ইন্টার্নসহ চারশতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। তবে দীর্ঘ প্রায় ১২ বছরেও এখানে চালু হয়নি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। যশোরে সরকারি ও বেসরকারি তিনটি মেডিকেল কলেজ আছে। যার একটিরও হাসপাতাল নেই। এতে ব্যাহত হচ্ছে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম। ব্যবহারিক শিক্ষার জন্য তাদের যেতে হয় ৫ কিলোমিটার দূরের যশোর জেনারেল হাসপাতালে।

মেডিকেল শিক্ষার্থী নাজমুল সাদিক বলেন, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ১২ বছর পার হলেও আমরা পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস পাইনি। হাসপাতাল তো দূরের কথা, ক্যাম্পাসেই অনেক অসুবিধা। অন্য জেলার ক্লাসমেটরা আমাদের বিভিন্ন সময়ে ঠাট্টাচ্ছলে বলে ‘হাসপাতাল ছাড়া যশোর মেডিকেল কলেজে পড়ছে হবু ডাক্তাররা!’ তাবাছুম ইবনে সুরাইয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, হাসপাতাল থাকলে আমরা থিয়োরি যা পড়লাম, পড়ে প্রাকটিক্যাল ভাবে বিষয়টি শিখতে ভূমিকা রাখে। কিন্তু কলেজের সাথে হাসপাতাল না থাকায় আমাদের পড়াশুনায় অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

যদিও যশোরের পরে স্থাপিত পাশর্^বর্তী জেলা সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়ায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চালু হলেও যশোরেরটা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ যশোরবাসী। দীর্ঘদিন হাসপাতাল বাস্তবায়নের দাবিতে যশোরে আন্দোলন করে আসছে যশোরবাসী। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, যশোরসহ, নড়াইল, ঝিনাইদহ ও মাগুরার মানুষ বর্তমানে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। এতে হাসপাতালে রোগির চাপ অনেক বেড়ে যায়। ফলে ভালো চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন সাধারণ মানুষ। মেডিকেল কলেজ চালু থাকলে সদর হাসপাতালে ৭৫ শতাংশ রোগীর চাপ কমে যেত। চিকিৎসাসেবার মানও বৃদ্ধি পেত বলে মনে করেন তিনি। তাই যশোর মেডিকেল কলেজে দ্রæত ৫শ’ বেডের হাসপাতল নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মহিদুর রহমান বলেন, মেডিকেল কলেজের সাথে ৫শ’ শয্যার হাসপাতাল থাকতে হবেই। এটি নিয়ম। যশোরে ৫শ’ শয্যার হাসপাতালের জন্য ভারতের সাথে একটা চুক্তি ছিল। তবে তা শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়েছে। এখন সরকারি তহবিলেই হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদিকে, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির এক সভায় ‘অবিলম্বে যশোর মেডিকেল কলেজে ৫শ’ শয্যা হাসপাতাল বাস্তবায়নে আগামীকাল (রোববার) ১৩ নভেম্বর বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। একইসাথে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করার ঘোষণা দেয়া হয়। কমিটির আহ্বায়ক অ্যাড. আবুল হোসেন ও সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষকে অংশ নিয়ে যশোরবাসীর প্রাণের দাবির প্রতি সমর্থন জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.