Take a fresh look at your lifestyle.

শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত যশোরবাসী

পাঁচ বছর পর প্রধানমন্ত্রী আসছেন

0

প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত যশোরবাসী। পাঁচ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার যশোরে আসছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে তিনি যশোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে উৎসবের শহরে পরিণত হয়েছে যশোর। শহরের অলিগলি থেকে গ্রামের রাস্তাঘাটে চলছে মাইকিং; ছেয়ে গেছে ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড আর তোরণে। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী আগমনকে ঘিরে আশায় বুক বেঁধেছেন যশোরবাসী। যশোর ৫০০ শয্যা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, যশোর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিককরণ, ভবদহ জলাবদ্ধতা দূর ও যশোরকে সিটি কর্পোরেশন ঘোষণাসহ নানা দাবিতে মুখর স্থানীয়রা।

যশোরের সর্বস্তরের মানুষের বক্তব্য, স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও কালনায় মধুমতি সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এর ফলে যশোরসহ এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক, সামাজিক অবস্থা এবং মানুষের জীবনযাত্রায় উন্নয়ন ঘটেছে। এ উন্নয়ন ও দিন বদলের নেতৃত্ব দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করতে এবং তার মুখে আগামীর বার্তা শুনতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরবাসীর দীর্ঘদিনের বাকি চাওয়া-পাওয়া পূরণ করবেন; এমন প্রত্যাশাই এই অঞ্চলবাসীর।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, ৫০ বছর আগে ১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যশোরের যে স্থানে জনসমুদ্রে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেখানেই ভাষণ দেবেন তার কন্যা শেখ হাসিনা। করোনাকালের প্রায় তিন বছর পর প্রথমবারের মতো কোনো জনসভায় সশরীরে অংশ নিচ্ছেন তিনি। এই সমাবেশ থেকেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাজনৈতিক বার্তা দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। অন্যান্য নির্বাচনের আগে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে শুরু হতো প্রচারণা, কিন্তু এবার যশোর থেকে সূচনা হচ্ছে নির্বাচনী তৎপরতা।

জনসভাকে সফল করতে প্রচারণায় নতুন মাত্রা যোগ, ছবি : কপোতাক্ষ

এদিকে, যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে একগুচ্ছ দাবিতে সোচ্চার নাগরিক সমাজ। মানববন্ধন, স্মারকলিপি পেশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন সচেতন যশোরবাসী। নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা যশোরবাসীর প্রাণের দাবিগুলো আমলে নিয়ে ২৪ নভেম্বর যশোর স্টেডিয়ামের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাবি বাস্তবায়ন-উন্নয়ন প্রতিশ্রæতির ঘোষণা দিবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে যশোরবাসীর মনে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে।

যশোর মেডিকেল কলেজে ৫শ’ শয্যার হাসপাতাল বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, মেডিকেল কলেজের চালুর এক যুগেও হাসপাতাল বাস্তবায়ন হয়নি। এটি যশোরবাসীর জন্য দুঃখজনক। অবিলম্বের ৫শ’ শয্যার হাসপাতাল বাস্তবায়নের দাবি জানাই। মাইকেল মধুসূদন সংস্কৃতি বিশ^বিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটির আহŸায়ক অ্যাড. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভ‚মি সাগরদাঁড়িতে তার নামে একটি সংস্কৃতি বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি যশোরবাসীর। মহাকবির নামে বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে তাকে নিয়ে গবেষণাসহ আরও অনেক কাজের সুযোগ তৈরি হবে। আন্তর্জাতিকভাবে তাকে তুলে ধরা সম্ভব হবে। আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরের জনসভায় বিশ^বিদ্যালয় বাস্তবায়নের ঘোষণা দেবেন। যশোরের সিনিয়র সাংবাদিক সাজেদ রহমান বকুল বলেন, যশোর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিকে উন্নীতকরণ সময়ের দাবি। এটি আন্তর্জাতিক হলে ভারতের কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। মানুষের ভোগান্তিও কমবে।

জনসভার প্রস্তুতির বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্টেডিয়ামের মাঠ প্রশস্ত করার পাশাপাশি সমাবেশে আগত লোকজনের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বড় পর্দায় সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেখার ব্যবস্থা করা হবে। আশা করছি, পাঁচ লাখের বেশি মানুষের সমাগম হবে।

মঞ্চ সাজানোর দায়িত্বে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্থান যশোর স্টেডিয়ামে ৫০ বছর পর জননেত্রী শেখ হাসিনা আসছেন। সে কারণে তাকে বরণ করতে যশোরসহ গোটা দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ উদগ্রীব। তিনি আরও বলেন, নৌকার আদলে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নৌকার পরিমাপ ১২০ ফুট বাই ৪০ ফুট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ পাঁচ বছর পর যশোরে আসছেন। ভাষণ দেবেন এ অঞ্চলের মানুষের উদ্দেশ্যে। সে কারণে মঞ্চ সাজানো হয়েছে লাল গালিচা দিয়ে। তিনি যে পথ দিয়ে মঞ্চে প্রবেশ করবেন সেই পথ থেকে শুরু করে মঞ্চ পর্যন্ত ঝকঝকে চকচকে লাল গালিচায় মুড়ে দেওয়া হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি বলেন, খুলনা বিভাগের দশ জেলার ৮ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে এই জনসভায়। তিনি বলেন, গোটা শহরে সেদিন পা রাখার জায়গা পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, জননেত্রীর জনসভা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে ৪০০ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সমাবেশস্থল, সমাবেশস্থলের প্রবেশমুখ ও জনসভায় আগতদের সহযোগিতা করতে শহরের প্রবেশমুখে থাকবেন।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.